শ্বশুরবাড়ি পৌঁছতে ঝামেলা, ষষ্ঠীর দিন রাস্তা সারাইয়ে নামলেন গ্রামের জামাইরা

রাস্তা পঞ্চায়েতের নাকি জেলা পরিষদের, এই এক্তিয়ারের লড়াইয়ের মধ্যে গ্রামের জামাইরা রাস্তা সারিয়ে চলেছেন জামাইষষ্ঠীর দিন।

শ্বশুরবাড়ি পৌঁছতে ঝামেলা, ষষ্ঠীর দিন রাস্তা সারাইয়ে নামলেন গ্রামের জামাইরা
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Jun 16, 2021 | 11:00 PM

বীরভূম: বছরে একটা দিন শ্বশুরবাড়ি আসেন। কিন্তু প্রতিবার জলকাদা পেরিয়ে শ্বশুরবাড়ি পৌঁছতে গলদঘর্ম অবস্থা হয় জামাইদের। এবারও তাই হয়েছে। তাই শ্বশুরবাড়ি এলাকায় ঢোকার ভাঙাচোরা রাস্তা নেমে পড়লেন নিজেরাই। ঝুড়ি মাথায়, কোদাল হাতে নিয়ে জামাইষষ্ঠীর দিন জামাইদের কাজ করতে দেখা গেল বীরভূমের ময়ূরেশ্বর এক নম্বর ব্লকের মল্লারপুর ১ নম্বর পঞ্চায়েতের গোয়ালা গ্রামে।

গোয়ালা গ্রামের জামাইরা বলছেন, “বছরে একটা দিন শ্বশুরবাড়ি এসে রাস্তা ঠিক করায় যদি আমরা সহযোগিতা করতে পারি, আর তাতে যদি শ্বশুরবাড়ির লোকজনদের সমস্যার সুরাহা তাতে মন্দ কী? আমাদের দেখে আরও কয়েকজন এগিয়ে এলে খুব ভালো লাগবে।” এদিকে এখানকার বাসিন্দারে দাবি, “এই রাস্তাটা অত্যন্ত জরুরি। প্রশাসনকে অনেকবার জানিয়েও সারাই হয়নি।” জামাইরা বলছেন, গ্রামে ঢোকার এটাই ‘শর্টকাট’। নাহলে রেলগেট পেরনোর জন্য দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়। বছরের পর বছর এভাবে আসতে আসতে তাঁরা ক্লান্ত। তাই গ্রামের জামাই হিসাবে রাস্তাটা ভালো করা তাঁদের কর্তব্য বলে জানান।

ঝুড়ি মাথায় করে মাটি ফেলতে ফেলতে এলাকার এক জামাইবাবু জীতেন মুখার্জি বলেন, “দীর্ঘদিন ধরে দেখছি রাস্তাটা খারাপ। তাই জামাইরা মিলে হাত লাগালাম।” আর এক জামাইবাবু তোতন দাসের কথায়,”রেলগেট পড়ে থাকার জন্য শ্বশুরবাড়ি আসতে দেরি হয়। এই রাস্তাটা হলে খুব ভালো হয়। তাড়াতাড়ি সবাই যাতায়াত করতে পারবেন। তাই একটু হাত লাগালাম সবাই।” স্থানীয়দের দাবি, ভোট এসেছে, ভোট গিয়েছে, অনেক নেতা-মন্ত্রী এসে প্রতিশ্রুতির ফুলঝুরি ছুটিয়েছেন। কিন্তু এই রাস্তার সমস্যা আর মেটেনি।

আরও পড়ুন: ষষ্ঠীর দিন সংসার করতে চেয়ে ধরনা বিজেপি নেতার স্ত্রী’র, স্বামী বললেন, ‘ডিভোর্স চাই’ 

এ নিয়ে মল্লারপুর ১ নম্বর পঞ্চায়েতের বিজেপির উপপ্রধান সমীর লোহার বলেন, এই রাস্তা জেলা পরিষদের এক্তিয়ারের মধ্যে পড়ে। প্রায় দেড় কিলোমিটার মাটির রাস্তা সারানো পঞ্চায়েতের ক্ষমতার বাইরে। অন্যদিকে জেলা পরিষদের নেতা ধীরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায় জানান, এই পঞ্চায়েত দু’বছর আর্থিক বরাদ্দ খরচই করতে পারেনি। তাঁর কথায়, “এ রাস্তা জেলা পরিষদের দেখার কাজ নয়, এটা পঞ্চায়েতের রাস্তা।” রাস্তা পঞ্চায়েতের নাকি জেলা পরিষদের, এই এক্তিয়ারের লড়াইয়ের মধ্যে গ্রামের জামাইরা রাস্তা সারিয়ে চলেছেন।