মিলল অ্যান্টিবডি,করোনা আক্রান্ত দুই সদ্যোজাত! চিকিৎসকের দাবিতে ধোঁয়াশায় বিশেষজ্ঞরা

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ইমিউনোহেমাটোলজি অ্যান্ড ব্লাড ট্রানসফিউসন বিভাগের প্রধান প্রসূন ভট্টাচার্য বলেন, "সদ্যোজাতর দেহে অ্যান্টিবডি তৈরি হয় না কারণ ওদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাই গড়ে ওঠেনি।"

মিলল অ্যান্টিবডি,করোনা আক্রান্ত দুই সদ্যোজাত! চিকিৎসকের দাবিতে ধোঁয়াশায় বিশেষজ্ঞরা
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Dec 29, 2020 | 10:50 PM

কোলাঘাট: এক জনের বয়স ১০ দিন অন্য জনের বয়স ১৫ দিন। একই হাসপাতালে দুই সদ্যোজাতই করোনা (COVID) আক্রান্ত। রাজ্যে এমন ঘটনা প্রথম বলেই মনে করছেন চিকিৎসকরা। ফুসফুসে মারাত্মক সংক্রমণের পর করোনা পরীক্ষা করে চিকিৎসকরা জানতে পারেন দু’জনের শরীরেই রয়েছে করোনার অ্যান্টিবডি। তবে চিকিৎসকদের নজরদারির জেরে দুই শিশুর করোনা জয় করে সুস্থ।

কোলাঘাটের একটি বেসরকারি হাসপাতালে ডঃ প্রবীর ভৌমিকের তত্ত্বাবধানে চিকিৎসা হয়েছে দুই শিশুর। দুজনের কোভিড পজেটিভ। তবে সদ্যোজাতর মা করোনা আক্রান্ত কিনা তা জানা যায়নি। ইতিমধ্যেই মায়ের লালারস সংগ্রহ করে করোনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। সেই রিপোর্ট এলে মায়ের শরীর থেকে করোনা শিশুর শরীরে গিয়েছে কিনা এই বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া যাবে।

দুই সদ্যোজাতর একজন জন্মেছে ১৪ তারিখ অন্য জন ১৯ তারিখ। হলদিয়া ও ভগবানপুরে দুজনের বাড়ি। কিন্তু শারীরিক সমস্যা একই। চিকিৎসক প্রবীর ভৌমিক জানান, দুই শিশু অত্যন্ত খারাপ পরিস্থিতে হাসপাতালে এসেছিল। ২৫ ডিসেম্বর ওদের নমুনা পরীক্ষা হয়। এখন তারা সুস্থ। মঙ্গবারই তাদের ছুটি দেওয়া হয়েছে।

কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের ইমিউনোহেমাটোলজি অ্যান্ড ব্লাড ট্রানসফিউসন বিভাগের প্রধান প্রসূন ভট্টাচার্য বলেন, “সদ্যোজাতর দেহে অ্যান্টিবডি তৈরি হয় না কারণ ওদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাই গড়ে ওঠেনি। যদি অ্যান্টিবডি পাওয়া যায় তাহলে তা মায়ের কাছ থেকে পরোক্ষভাবে বলতে পারি। তবে মা করোনা আক্রান্ত কি না তা না জেনে এটা বলা যায় না। তবে সদ্যোজাতর দেহে যে অ্যান্টিবডি তৈরি হয় না তা দায়িত্ব নিয়ে বলতে পারি।”

আরও পড়ুন: ৩ মাসেও এনআরএসে মিলল না বেড! জটিল জন্মগত ত্রুটি নিয়ে লড়াই চালাচ্ছে সাড়ে ৩ মাসের শিশু

এই বিষয়ে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব কেমিক্যাল বায়োলজির ইমিউনোলজিস্ট দীপ্যমান গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, “গত একবছরে এরকম কিছু ঘটেছে বলে জানি না। এর জন্য তিনটি সম্ভাব্য কারণের কথা বলা যেতে পারে। মা করোনা সংক্রমণের শিকার হয়েছিলেন। তাঁর দেহে তৈরি অ্যান্টিবডি সদ্যোজাতের দেহে এসেছে, এটা হতে পারে। কারণ মায়ের দেহ থেকে সদ্যোজাতের শরীরে অ্যান্টিবডি যেতে পারে। কিন্তু তাহলে প্রশ্ন উঠছে সদ্যোজাতের দেহে যে উপসর্গের কথা বলা হচ্ছে তা কীভাবে হল। সেক্ষেত্রে বলতে হয় জন্মের পরে মায়ের থেকে সদ্যোজাত সংক্রমিত হয়েছেন। ফলে মায়ের অ্যান্টিবডি পরীক্ষা করে দেখতে হবে। দুই সদ্যোজাতের‌ও নমুনা সংগ্রহ করে আরটি-পিসিআর করা উচিত। সদ্যোজাতের নমুনা সংগ্রহ করে আমাদের এখানে পাঠালে সিকোয়েন্সিং করে দেখতে পারি।”