রামেও রাজি! শিবসেনার জন্য জোটের দরজা খুলে দিল বামেরা

মহারাষ্ট্রে কংগ্রেসের সঙ্গে জোটে রয়েছে সেনা। এখানে কংগ্রেস জোট করেছে বামেদের সঙ্গে। সুজনের এই আহ্বানের পিছনে কি তবে বৃহত্তর রাজনৈতিক স্বার্থ রয়েছে?

রামেও রাজি! শিবসেনার জন্য জোটের দরজা খুলে দিল বামেরা
ডানে-বাম মিশে যাবে একুশের মহাযুদ্ধে? নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Jan 19, 2021 | 9:55 PM

কোচবিহার: রামেও আর আপত্তি নেই বামেদের! শিবসেনার (Shiv Sena) মতো চরম দক্ষিণপন্থী দলের জন্য এদিন বাম-কংগ্রেস জোটে শামিল হওয়ার দরজা খুলে দিয়েছেন সুজন চক্রবর্তী।

পশ্চিমবঙ্গ বিধানসভা ভোটে (West Bengal Assembly Election 2021) লড়ার কথা ঘোষণা করে জাতীয় রাজনীতিতে বড় চমক দিয়েছে শিবসেনা। যদিও তারা একাই লড়বে নাকি কারোর সঙ্গে জোট করবে তা নিয়ে কিছুই নিশ্চিত হয়নি। তবে এক সময়ের উগ্র হিন্দুত্ববাদী থেকে এখন নরম হিন্দুত্বের পথে আসা শিবসেনাকে পাশে পাওয়ার চেষ্টা শুরু করে দিয়েছে বামপন্থীরা (CPIM)। এদিন খোদ বাম পরিষদীয় দলনেতা সুজন চক্রবর্তী (Sujan Chakraborty) শিবসেনাকে আহ্বান জানিয়েছেন তাঁদের জোটে শামিল হওয়ার জন্য।

এদিন কোচবিহারে বিজেপি (BJP) ও তৃণমূলকে (TMC) হারাতে শিবসেনাকে বাম-কংগ্রেস জোটে নাম লেখানোর আহ্বান জানান সুজন। মঙ্গলবার কোচবিহারে এসে সিপিআইএম জেলা কার্যালয়ে এক সাংবাদিক বৈঠকে একথা বলেন যাদবপুরের বিধায়ক।

বাম নেতা সুজন চক্রবর্তী বলেন, “বিজেপি ও তৃণমূলকে হারাতে গেলে বামেদের দরকার। এই দুই দলের বিরুদ্ধে সব মানুষকে একজোট হতে হবে। সাম্প্রদায়িকতা, স্বৈরাচারের বিরুদ্ধে মানুষ যদি একজোট হয়, তবে বামেরা তাতে সমর্থন জানাবে। যেহেতু শিবসেনা রাজ্যে অতটা পরিচিত নয়, তাই তারা যদি এই লড়াইয়ে সামিল হতে চায় তবে বামেরা তাদের আহবান জানাচ্ছে।”

মতাদর্শগত জায়গা থেকে দুই দলের অবস্থান সম্পূর্ণ বিপরীত হলেও সুজনের এদিনের ঘোষণা বছরখানেক আগে মহারাষ্ট্র নির্বাচনের কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। যেখানে ভোটের পর বিজেপির সঙ্গে জোট ভেঙে বিপরীত মেরুর দল কংগ্রেস ও এনসিপির সঙ্গে জোট বেঁধে সরকার গঠন করে শিবসেনা। বামেদের সঙ্গে জোট করে ইতিমধ্যেই একুশের নির্বাচন লড়বে বলে জানিয়েছে কংগ্রেস। ফলে সুজনের এদিনের ঘোষণার পিছনে কংগ্রেসের প্রচ্ছন্ন প্রভাব থাকতে পারে এমন সম্ভাবনা একেবারেই উড়িয়ে দিচ্ছেন না রাজনৈতিক বিশ্লেষকেরা।

মঙ্গলবার কোচবিহারের বাবুরহাটে একটি হোটেলে সাংবাদিক বৈঠক করে শিবসেনা। সেখানে শিবসেনার কোচবিহার জেলা কমিটি গঠন করা হয়। এই বিষয়ে শিবসেনার পশ্চিমবঙ্গ সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অশোক সরকার জানান, কোচবিহারে ৯টি বিধানসভা কেন্দ্রে তাঁরা প্রার্থী দেবেন। বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধেই শিবসেনা লড়াই করবে বলে জানান তিনি। ৯টি কেন্দ্রেই ভাল ফলের বিষয়ে তাঁরা আশাবাদী। এমনকি তিনটি কেন্দ্রে জয় হতে পারে এমন আশাও করছে শিবসেনা।

আরও পড়ুন: কত মানুষের দুয়ারে পৌঁছতে পারল সরকার? রিপোর্ট কার্ড রাজ্যের

যদিও শিবসেনা রাজ্যে ভোটে লড়বে এটা ঘোষণা করার পর থেকেই রাজনৈতিক মহলে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে, তবে কি বিজেপির হিন্দু ভোট কেটে তৃণমূলকে সুবিধা পাইয়ে দিতেই এই পদক্ষেপ করছে উদ্ধব ঠাকরের দল? এই প্রশ্নের উত্তরে অশোক সরকার বলেন, “ভোট জনগণের রায়ের উপর হয়। হিন্দু-মুসলিম হিসেবে নয়। আর বিজেপি একমাত্র হিন্দুত্বের রক্ষাকারী নয়। বরং বিজেপি হিন্দুত্ব থেকে সরে আসছে।”

তবে শিবসেনা ও বামেরা যাই বলুক না কেন, বিহার ভোটে মিমের ভূমিকা দেখে রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের ধারণা, এখানেও তৃণমূলের সংখ্যালঘু ভোট কাটতে ময়দানে নামছে আসাদউদ্দিন ওয়েইসির দল। একই ভাবে শিবসেনাও শুধুমাত্র বিজেপির হিন্দু ভোটব্যাঙ্কে আঘাত হানতেই নির্বাচনে নামছে কিনা, সেটা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে।

আরও পড়ুন: টিকা নিতে অনিচ্ছুক স্বাস্থ্যকর্মীদের একাংশ, ‘হতাশ’ কেন্দ্র