Fake TMC Worker: করছেন সভা, দিয়েছেন ভাষণও, কুড়িয়েছেন হাততালি, বালুরঘাটে হাতেনাতে পাকড়াও এবার ‘ভুয়ো’ তৃণমূল নেতা

South Dinajpur: বস্তুত, একুশে জুলাই শহিদ দিবসকে সামনে রেখে গত মঙ্গলবার দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের পক্ষ থেকে তপন রবীন্দ্র ভবনে প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল।

Fake TMC Worker: করছেন সভা, দিয়েছেন ভাষণও, কুড়িয়েছেন হাততালি, বালুরঘাটে হাতেনাতে পাকড়াও এবার 'ভুয়ো' তৃণমূল নেতা
গ্রেফতার ভুয়ো তৃণমূল নেতা (নিজস্ব ছবি)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 30, 2022 | 6:16 PM

বালুরঘাট: নাহ! এবার আর কোনও ভুয়ো চিকিৎসক, সাংবাদিক বা পুলিশ নয়। এবার ধরা পুলিশের হাতে ধরা পড়লেন ‘ভুয়ো’ তৃণমূল নেতা। ঠিকই পড়েছেন। ওই ব্যক্তি রাজ্য তৃণমূলের একাধিক পদে রয়েছেন বলে দাবি করেছেন। আর সেই মোতাবেক সভাও করেছেন। অথচ বালুরঘাটে তাঁকে কেউই চেনেনই না। গোটা ঘটনায় স্তম্ভিত জেলা নেতৃত্ব। তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের করা হল অভিযোগ। পরে কলকাতা থেকে গ্রেফতার করা হয় ওই ‘ভুয়ো’ তৃণমূল নেতাকে। তাঁকে তোলা হল বালুরঘাট জেলা আদালতে।

ওই ব্যক্তি নাম স্বপন কুমার মুখার্জী। বৃহস্পতিবার ধৃতকে তোলা হয় বালুরঘাট জেলা আদালতে।তপন থানার পুলিশের তরফে অভিযুক্তকে আদালতে তোলা হয়। ধৃতের বিরুদ্ধের একাধিক মামলা রুজু করেছে পুলিশ। আদালতে তোলা হলে বিচারক অভিযুক্তকে ৪ দিনের পুলিশি হেফাজতের জন্য নির্দেশ দিয়েছে। এই ভুয়ো তৃণমূল নেতার সঙ্গে আর কেউ জড়িত রয়েছে কিনা তাও খতিয়ে দেখছে তপন থানার পুলিশ।

বস্তুত, একুশে জুলাই শহিদ দিবসকে সামনে রেখে গত মঙ্গলবার দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা তৃণমূলের পক্ষ থেকে তপন রবীন্দ্র ভবনে প্রস্তুতি সভা অনুষ্ঠিত হয়েছিল। যেখানে হাজির ছিলেন তৃণমূলের একাধিক জেলা ও রাজ্য নেতৃত্বরা। এ দিকে, ওই দিনই একই সময়ে তপন রবীন্দ্র ভবন থেকে কিছুটা দূরে আরও একটা সভা হয়। যেখানে হাজির ছিলেন গঙ্গারামপুর পুরসভার চেয়ারম্যান প্রশান্ত মিত্র, তৃণমূল নেতা মফিজউদ্দিন মিঁয়া, আমজাদ মণ্ডল সহ একাধিক তৃণমূল নেতৃত্ব। সেখানেই উপস্থিত ছিলেন মূল বক্তা হিসেবে স্বপন কুমার মুখোপাধ্যায়। যিনি নিজেকে তৃণমূলের রাজ্য নেতা বলে পরিচয় দেন। আবার একেক বার, একেক পদে আছেন বলেও জানান। এমনকী ওই সভায় ভুয়ো তৃণমূল নেতা রাজ্যের কৃষি বিপণন মন্ত্রী বিপ্লব মিত্রের ভাই প্রশান্ত মিত্রকে আগামী দিনের তৃণমূলের জেলা সভাপতি হিসেবে উল্লেখ করেন।

এ দিকে, জেলা তৃণমূলের পাশে আরও একটি তৃণমূলের সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার বিষয়টি নজরে আসতেই বালুরঘাটে সাংবাদিক বৈঠক করেন জেলা তৃণমূল সভাপতি উজ্জ্বল বসাক। এছাড়াও সাংবাদিক সম্মেলনে ছিলেন জেলা তৃণমূলের চেয়ারম্যান নিখিল সিংহ রায়।

যেখানে উজ্জ্বল বসাক সাফ জানান, তপনে রবীন্দ্রভবন ছাড়াও যে সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে তা তৃণমূলের নয়। নিজেদের মধ্যে ও কর্মী সমর্থকদের মধ্যে বিভেদ তৈরি করতে এই সভা করা হয়েছে। তার উপর ওই সভায় যিনি প্রধান বক্তা হিসেবে উপস্থিত থাকা স্বপন কুমার মুখোপাধ্যায় কোনও তৃণমূল নেতাই নয়। রাজ্যের কাছ থেকে পুরো বিষয়টি জানার পর তপন থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।

এ দিকে, অভিযোগ পেতেই পুলিশ কলকাতার হেয়ার স্ট্রিট থানা এলাকা থেকে স্বপন কুমার মুখোপাধ্যায়কে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তাঁকে আজ বালুরঘাট জেলা আদালতে তোলা হয়েছে। এ দিকে, সেদিনের ওই সভায় যে সব তৃণমূল নেতারা উপস্থিত ছিলেন তাদেরকে জেলা তৃণমূলের তরফ থেকে শোকজ করা হতে পারে বলে সূত্রে খবর। শুধু তাই নয় ওই স্বঘোষিত নেতার সভাতে তৃণমূলের যারা যারা উপস্থিত ছিলেন, তাঁদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তার সিদ্ধান্ত নিতেই, গতকাল রাতে জরুরি ভিত্তিতে জেলা কোর কমিটির মিটিং হয়েছে। সেই মিটিং সিদ্ধান্ত হয়েছে যাঁরা-যাঁরা ওই সভাতে উপস্থিত ছিলেন তাদের নাম রাজ্য স্তরে পাঠানো হবে। রাজ্য নেতৃত্ব যা সিদ্ধান্ত নিবেন সেটা আমাদের সিদ্ধান্ত হবে। দলের ভাবমূর্তিতে কালিমালিপ্ত করতে আসা কাউকেই রেয়াত করা হবে না বলে তৃণমূল জেলা সভাপতি জানিয়েছেন।

এ বিষয়ে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার সরকারি আইনজীবী ঋতব্রত চক্রবর্তী বলেন, ‘গতকাল তপন থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে ধৃত ব্যক্তির বিরুদ্ধে।আজ তাঁকে বালুরঘাট জেলা আদালতের সিজিএম কোর্টে তোলা হলে বিচারক গৈরিক রায় ওই ব্যক্তিকে চারদিনের পুলিশ রিমান্ডের নির্দেশ দিয়েছে।’

এ দিকে, এই বিষয়ে ধৃত ভুয়ো তৃণমূল নেতা স্বপন কুমার মুখার্জী জানিয়েছেন, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ মিথ্যে ও ভিত্তিহীন। তিনি নির্দোষ। ঈশ্বর আছেন সঠিক বিচার হবে। তিনি তৃণমূলের একনিষ্ঠ কর্মী।

অন্যদিকে, এবিষয়ে গঙ্গারামপুর পুরসভার চেয়ারম্যান প্রশান্ত মিত্র কাছে বিষয়টি জানার জন্য একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।