Darjeeling: হরকা, বিনয়দের নিয়ে দার্জিলিং আসনে জয়ের আশায় অধীর? নতুন ‘পাকদণ্ডী’ সমীকরণে জল্পনা তুঙ্গে

Darjeeling: কংগ্রেসে যোগ দিয়ে বিনয় তামাং জানান, "বিজেপি কথা রাখেনি। তৃণমূল পাহাড় সমস্যা মেটাতেও পারবে না। অবিজেপি এবং তৃণমূল বিরোধী জাতীয় দল একমাত্র কংগ্রেসই পাহাড় সমস্যা মেটাতে পারবে। পাঁচ রাজ্যে কংগ্রেস ক্ষমতায় আসছে। তাই কংগ্রেসই এখন বিকল্প।"

Darjeeling: হরকা, বিনয়দের নিয়ে দার্জিলিং আসনে জয়ের আশায় অধীর? নতুন 'পাকদণ্ডী' সমীকরণে জল্পনা তুঙ্গে
অধীরের সঙ্গে এক মঞ্চে বিনয় তামাং। Image Credit source: Facebook
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 26, 2023 | 9:33 PM

দার্জিলিং: অনেকেই বলেন, রাজনীতি ‘সম্ভাবনার শিল্প’। লাভ-লোকসান সামনে রেখে নিত্য নতুন নানা সমীকরণ রাজনীতিতেই দেখা যায়। রবিবার সে কথাতেই আরও একবার সিলমোহর পড়ল। কংগ্রেসে যোগ দিলেন পাহাড়ি-রাজনীতির অন্যতম মুখ বিনয় তামাং। আর বিনয়কে দলে টেনেই এবার দার্জিলিং লোকসভা আসনে লড়াইয়ের প্রস্তুতি শুরু করে দিল কংগ্রেস।

পাহাড়ের লোকসভা আসন আগে কংগ্রেসের দখলেই ছিল। কিন্তু তা ছিনিয়ে নেয় বিজেপি। পাহাড়ের সমস্যার স্থায়ী সমাধানের কথা বলে গত কয়েক দফা নির্বাচনে বিপুল ভোটেই জিততে শুরু করে বিজেপি। কিন্তু আলাদা রাজ্য নিয়ে স্থায়ী সমাধান কোথায়? এই প্রশ্নে ক্ষোভও আছে বিজেপির বিরুদ্ধে। লোকসভা ভোটের আগে তা মাথাচাড়া দিচ্ছে।

অন্যদিকে পাহাড়ের রাজনীতিতে পা রাখতে বিভিন্ন বোর্ড গঠনের নামে বাস্তবে স্থানীয় রাজনৈতিক দলগুলির ভিত নড়াতে শুরু করেছে রাজ্যের শাসকদল। পাশাপাশি অনিত থাপাকে সামনে রেখে জিটিএর মসনদ ঘুরপথে নিয়ন্ত্রন করে রাজ্যই। কিন্তু বিভিন্ন বোর্ডের বিরুদ্ধে বিপুল অর্থ খরচ নিয়ে নানা অভিযোগ উঠতে শুরু করায় এবং বিমল গুরুংয়ের আন্দোলনে রাজ্যের ভূমিকা নিয়ে কিছুটা চাপা অসন্তোষ পাহাড়ে আছে বলেই অভিযোগ। ফলে তারা বিজেপির থেকে দার্জিলিং ছিনিয়ে নিতে সমর্থ হবে কি না তা নিয়ে প্রশ্নের অবকাশ আছে।

আর ঠিক এই পরিস্থিতিতেই ঘোলা জলে মাছ ধরতে নেমেছে কংগ্রেসও। বিজেপি সূত্রে খবর, সাংসদ রাজু বিস্তাকে এবার এই আসনে টিকিট নাও দিতে পারে বিজেপি। এখানে টিকিট পেতে পারেন প্রাক্তন বিদেশ সচিব হর্ষবর্ধন শ্রীংলা। কিন্তু বিজেপি ও তৃণমূলের বিরুদ্ধে মোর্চা, হামরো পার্টি ও জিএনএলএফের ক্ষোভকে কাজে লাগিয়ে আসনটি দখল করার রাস্তা খুঁজতে চাইছে কংগ্রেস। তাই বার্তা দিতে সব কাজ ছেড়েই হঠাৎ কালিম্পংয়ে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী।

প্রাক্তন কংগ্রেস সাংসদ দাওয়া নরবুলাকে সঙ্গে নিয়ে লোকসভা ভোটের আগে পাহাড়ে সভা করছেন তিনি। ইতিমধ্যেই প্রাক্তন মোর্চা নেতা বিনয় তামাং কালিম্পংয়ের হরকাবাহাদুর ছেত্রীর অনুগামীদের নিয়ে কংগ্রেসে যোগ দেওয়ায় শক্তিও বাড়ল কংগ্রেসের। কংগ্রেসের আশা, আগামী ৩ ডিসেম্বর পাঁচ রাজ্যে ভোটের ফলে দল ভাল ফল করলে ঘুরতে পারে পাশা। বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করতে এ রাজ্যেও নানা নতুন সমীকরণ সামনে আসতে পারে। সেক্ষেত্রে পাহাড়েও তৃণমূল-বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষুব্ধ স্থানীয় দলগুলিকে পাশে টানা যায় কি না তা এখন ভাবাচ্ছে কংগ্রেসকে।

যদিও প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলছেন, “গোর্খ্যাল্যান্ড দেব বলছি না। ভোট চাইতেও আসিনি। গোর্খ্যাল্যান্ড ছাড়াও নানা সমস্যা আছে পাহাড়ে। বিজেপি ওদের ব্যবহার করছে। আমরা বলছি রাজীব গান্ধীর জমানায় আমরা ওদের পাশেই ছিলাম। সুষ্ঠু সমাধান করেছি। আগামীতেও করব। ভরসা থাকুক কংগ্রেসে।”

তবে অধীর রাখঢাক করলেও দলের রাজ্য সম্পাদক অধীরের সফর সঙ্গী সুজয় ঘটক পরিষ্কারই জানিয়েছেন, দার্জিলিং আসন আগে কংগ্রেসের দখলে ছিল। আর রাজনীতি সম্ভাবনার শিল্প। তাই পাঁচ রাজ্যে ভোটের ফল সামনে রেখে নতুন নতুন সমীকরণ সামনে আসতেই পারে।

কংগ্রেসে যোগ দিয়ে বিনয় তামাং জানান, “বিজেপি কথা রাখেনি। তৃণমূল পাহাড় সমস্যা মেটাতেও পারবে না। অবিজেপি এবং তৃণমূল বিরোধী জাতীয় দল একমাত্র কংগ্রেসই পাহাড় সমস্যা মেটাতে পারবে। পাঁচ রাজ্যে কংগ্রেস ক্ষমতায় আসছে। তাই কংগ্রেসই এখন বিকল্প।”

যদিও সিপিএম নেতা অশোক ভট্টাচার্যের বক্তব্য, দার্জিলিং আসনে কংগ্রেস লড়বে কি না বা বামেদের সঙ্গে কত আসনে রফা হবে ইত্যাদি আলোচনা এখনও হয়নি। তবে তাঁর বক্তব্য, “পাহাড়ে আঞ্চলিক দলগুলির বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভ আছে। আমাদের কাজ বিজেপি-তৃণমূল বিরোধী শক্তিকে একত্রিত করা। আর পাহাড়ে আঞ্চলিক দলের যেদিকে পাল্লা ভারী, তারাই আসন জেতে। ফলে জিএনএলএফ, মোর্চা, হামরো পার্টির মত দলগুলি কী করবে তার উপর অনেক কিছুই নির্ভর করবে।”

তবে বিজেপির রাজ্য সম্পাদক শঙ্কর ঘোষের কথায়, “স্বপ্ন দেখছে কংগ্রেস। দেশে একমাত্র স্থায়ী সরকার দেবে বিজেপিই। আর কেন্দ্রের সরকার পাহাড়ের স্থায়ী সমাধান করতে পারবে। ফলে পাহাড়ের আঞ্চলিক দলগুলিও ভোটে কংগ্রেস নয়, বিজেপির পাশেই থাকবে।” শঙ্করের বক্তব্য, পাঁচ রাজ্যে বিধানসভায় কারও ভাল ফল হলেও লোকসভার সঙ্গে তার কী সম্পর্ক? প্রেক্ষিতটাই তো আলাদা। ফলে অধীর চৌধুরী যতই পাহাড়ে যান, শিঁকে ছিড়বে না।