Jagdeep Dhankhar: ‘যেন তারা বিচার ব্যবস্থার তোয়াক্কাই করে না’, ডায়মন্ড হারবারের সাংসদকে এক হাত নিলেন রাজ্যপাল
Abhishek-Dhankhar: রাজ্যপাল বলেন, "যদি কোনও বিচারপতিকে নিশানা করা হয়, তাহলে তা বিচার ব্যবস্থার উপর আক্রমণের সবথেকে নিকৃষ্ট উদাহরণ। বিচারপতিরা যে মামলাগুলি দেখছেন, তার জন্য যদি তাঁদের নিশানা করা হয়, তবে বিষয়টি অত্যন্ত দুশ্চিন্তার।"

শিলিগুড়ি : বিচার ব্যবস্থার ‘এক শতাংশ’ নিয়ে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্য়ায় যে মন্তব্য করেছিলেন, তা নিয়ে কার্যত তোলপাড় হচ্ছে রাজ্য রাজনীতি। রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড় এই নিয়ে আগেই উষ্মা প্রকাশ করেছিলেন। বলেছিলেন, মুখ্যসচিবকে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার। তবে তখন রাজ্যপাল অভিষেকের নাম না করে কেবল ‘সাংসদ’ বলেই আক্রমণ করেছিলেন। তবে এবার আরও একধাপ এগিয়ে এক হাত নিলেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদকে। শনিবার শিলিগুড়ি থেকে দিল্লির উদ্দেশে রওনা দেওযার সময় রাজ্যপাল বলেন, “সংবিধানের মৌলিক পরিকাঠামোর একটি অঙ্গ হল বিচার ব্যবস্থা। গণতন্ত্রের জন্য বিচারব্যবস্থার স্বাধীনতা থাকা ভীষণ দরকার। যেভাবে বিচারপতিদের নিশানা করা হচ্ছে, তাতে সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে আমি চিন্তিত। যদি কোনও বিচারপতিকে নিশানা করা হয়, তাহলে তা বিচার ব্যবস্থার উপর আক্রমণের সবথেকে নিকৃষ্ট উদাহরণ। বিচারপতিরা যে মামলাগুলি দেখছেন, তার জন্য যদি তাঁদের নিশানা করা হয়, তবে বিষয়টি অত্যন্ত দুশ্চিন্তার।”
অতীতে নন্দীগ্রামের ইলেকশন পিটিশন সংক্রান্ত মামলার সময়েও যেভাবে বিচার ব্যবস্থার উপর আক্রমণ করা হয়েছিল, সেই প্রসঙ্গও তুলে ধরেন রাজ্যপাল। বলেন, “গত বছর সেপ্টেম্বরে যে বিচারপতি নন্দীগ্রামের ইলেকশন পিটিশনের মামলাটি দেখছিলেন, তাঁকেও শাসক দলের লোকেরা সোশ্যাল মিডিয়ায় আক্রমণ করেছিল। সেই তালিকায় ছিলেন ডায়মন্ড হারবারের সাংসদ। সেই সময় সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি বিষয়টি উত্থাপন করেছিলেন। বিচারব্যবস্থার উপর এই ধরনের আক্রমণ যাতে (তদন্তকারী) সংস্থাগুলির নজর না এড়িয়ে যায়, সেই কথা বলেছিলেন তিনি। দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার কথা বলেছিলেন। তারপর হায়দরাবাদ থেকে বেশ কয়েকজনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল।” এরপর রাজ্যপালের আরও সংযোজন, “নন্দীগ্রাম ইলেকশন পিটিশন যে বিচারপতির এজলাসে চলছিল, তাঁর উপর আক্রমণ আরও বেশি ভয়ঙ্কর ছিল। আমি রাজ্যের মুখ্যসচিব ও কলকাতার পুলিশ কমিশনারকে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলাম। কিন্তু তাঁরা কোনও ব্যবস্থা নেননি। ফলে যে বিচারপতি নিয়োগ দুর্নীতির মামলা দেখছেন, তাঁকেও নিশানা করা হচ্ছে।”
রাজ্যপাল এই প্রসঙ্গে আরও বলেন, “রাজ্যের সাংবিধানিক প্রধান হিসেবে আমি রাজ্যের মুখ্যসচিবকে এই বিষয়ে কড়া পদক্ষেপ করার জন্য জানাচ্ছি। ভারতের দণ্ডবিধিতে উল্লেখ রয়েছে, এই ধরনের আচরণের বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য। যে বিষয়টি সবথেকে বেশি হৃদয় বিদারক, তা হল সাংসদ বলছেন, তিনি এটি হাজার বার করবেন। এটি অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। এটি বিচার ব্যবস্থার অপমান। মানুষের কাছে যেন বার্তা দেওয়া হচ্ছে, তারা বিচার ব্যবস্থার তোয়াক্কা করে না।”
উল্লেখ্য কিছুদিন আগেই হলদিয়ায় তৃণমূলের শ্রমিক সংগঠনের এক সভা থেকে ‘বিচার ব্যবস্থার ১ শতাংশকে’ নিশানা করেছিলেন তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। তৃণমূলের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড সেই সময় বলেছিলেন, “আমার বলতেও লজ্জা লাগে, বিচারব্যবস্থার একজন – দুইজন এমন আছেন, যাঁরা সম্পূর্ণ যোগসাজশ করে কাজ করছেন, তল্পিবাহক হিসেবে। এক শতাংশ এমন আছেন, কিছু হলেই যাঁরা সিবিআই দিয়ে দিচ্ছেন।” তিনি আরও বলেছিলেন, “আমি ক্যামেরার সামনে এমন কথা ২ হাজার বার বলব, ১০ হাজার বার বলব। সত্যি কথা বলতে আমার বিবেকে বাধে না।” এই নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে অভিষেকের বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করা হয়েছিল।





