‘জঙ্গলমহলে টার্গেট একমাত্র ছত্রধর, ওরা ভয় পেয়ে গিয়েছে’

এনআইএ (NIA)-এর হাতে গ্রেফতার ছত্রধর মাহাতো। এই গ্রেফতারে আগাম আঁচ করে ছত্রধর আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন টিভি নাইন বাংলাকে দেওয়া এক্সক্লুসিভ সাক্ষাৎকারে। গ্রেফতার হওয়ার আগে ছত্রধরের শেষ দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে কী বলেছিলেন তিনি...

'জঙ্গলমহলে টার্গেট একমাত্র ছত্রধর, ওরা ভয় পেয়ে গিয়েছে'
গ্রাফিক্স: অভিজিৎ বিশ্বাস
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Mar 29, 2021 | 7:52 PM

মধ্য রাতে হানা দিয়ে তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক ছত্রধর মাহাতোকে (Chhatradhar Mahato) রবিবার গ্রেফতার করে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা (NIA)। সবে মাত্র প্রথম দফার ভোট শেষ হয়েছে। দ্বিতীয় দফার ভোট হতে দু’দিন বাকি। তার মধ্যেই ছত্রধরের গ্রেফতারি ঘিরে স্বভাবতই শুরু হয়ে গিয়েছে রাজনৈতিক চাপান-উতর। তবে, এনআইএ যে তাঁকে যে কোনও মুহূর্তে গ্রেফতার করতে পারে, সে আশঙ্কা ছত্রধরের ছিলই। তাঁর এই আশঙ্কার কথা গ্রেফতারের আগে টিভি নাইন বাংলাকে একান্ত সাক্ষাৎকারে জানিয়েছিলেন তিনি। আর এই আশঙ্কার পিছনে বিজেপির পরিষ্কার হাত রয়েছে বলেও সে দিন অভিযোগ করেছিলেন ছত্রধর।

দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে টিভি নাইন বাংলাকে ছত্রধর জানিয়েছিলেন, ১০ বছরের আগে যে ধারায় তাঁকে গ্রেফতার করা হয়েছিল, তাতে আবার নতুন নতুন ধারা যোগ করে এখন তাঁর উপর চাপ সৃষ্টি করা হচ্ছে। এনআইএ-র যখন জন্ম হয়নি, সে সময়ের কেসের ভার নিয়েছে তারা। তাঁর আরও দাবি ছিল, রাজনৈতিক মোকাবিলা না করতে পারায়, এনআইএ দিয়ে চাপে রাখার চেষ্টা করছে বিজেপি। রবিবার আমলিয়া গ্রামে রাত সাড়ে ৩টে নাগাদ ছত্রধরের বাড়িতে ঢোকে কেন্দ্রীয় বাহিনী ও তদন্তকারীদের একটি দল। অভিযোগ, কার্যত জোর করে ছত্রধরকে গ্রেফতার করে তারা। কোনও কাগজ ছাড়াই ছত্রধরকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে তাঁর স্ত্রীর অভিযোগ। এই মুহূর্তে আদালতের নির্দেশে ২ দিনের জন্য এনআইএ হেফাজতে রয়েছেন ইউএপিএ মামলায় অভিযুক্ত ছত্রধর।

রাজধানী এক্সপ্রেসকে পনবন্দি করার ঘটনায় ছত্রধর মাহাতোর পরোক্ষ যোগ ছিল বলে তদন্তকারীদের দাবি। গোয়েন্দা সূত্রের খবর, পুলিশি সন্ত্রাসবিরোধী জনগণের কমিটির সদস্যরা জেলবন্দি ছত্রধরকে দেখতে এসেছিলেন। সেখানেই ঠিক হয়েছিল অপারেশনের পরিকল্পনা। যদিও সাক্ষাৎকারে ছত্রধরের দাবি ছিল, গ্রেফতার হওয়ার পর রাজধানী এক্সপ্রেসের ঘটনা। তখন তিনি জেলে রয়েছেন। তাঁর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ নিছকই ষড়যন্ত্র। তবে, ছত্রধর জানান, তাঁকে গ্রেফতার করতে পারবে না। আদলত ও আইনের উপর তাঁর বিশ্বাস রয়েছে। ২০০৯ সালে ২৭ অক্টোবর জনসাধারণের কমিটির সদস্যরা ঝাড়গ্রামের বাঁশতলায়  নয়াদিল্লিগামী রাজধানী এক্সপ্রেস আটক করে। এ ঘটনায় মাওবাদী যোগ ছিল বলে অভিযোগ ওঠে। উল্লেখ্য, ২০০৯ সালে সিপিএম নেতা প্রবীর মাহাতো খুনের মামলাও ঝুলছে ছত্রধরের ঘাড়ে।

সম্পূর্ণ সাক্ষাৎকার: কিষেণজী হত্যা তৃণমূল সরকারের ভুল ছিল: ছত্রধর

ছত্রধর টিভি নাইনকে বলেছিলেন, “যে সব ধারা দিয়ে আটকে রাখার চেষ্টা করছে, এর কি যুক্তি আছে? দশ বছর জেলে ছিলাম। তখন কি ওরা ঘুমাচ্ছিল?” ছত্রধরের গ্রেফতারি প্রসঙ্গে বিজেপির প্রাক্তন সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ বলেন, “ওঁর এলাকায় ভোট হয়ে গিয়েছে। গতকাল পর্যন্ত তো মুক্ত ছিল।” তৃণমূলের পাল্টা অভিযোগ, নন্দীগ্রামের ভোটের আগেই উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে ছত্রধরকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গ্রেফতার হওয়ার কারণ হিসাবে সে দিন ছত্রধরের দাবি ছিল, “জঙ্গলমহলে টার্গেট একমাত্র ছত্রধর। ওরা ভয় পেয়ে গিয়েছে।”