বালি ব্রিজে শুট, হোয়াটসঅ্যাপ স্টেটাস দিয়ে আত্মহত্যা ভিডিয়োগ্রাফারের!

গত ১৮ এপ্রিল থেকে নিখোঁজ ছিল অমিত। সেদিনই রাত দশটায় তার হোয়াটসঅ্যাপ স্টেটাস নজরে পড়ে মামা গোপাল পালের।

বালি ব্রিজে শুট, হোয়াটসঅ্যাপ স্টেটাস দিয়ে আত্মহত্যা ভিডিয়োগ্রাফারের!
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Apr 21, 2021 | 11:08 PM

হুগলি: গত ১৮ এপ্রিল বাড়ি থেকে বেরিয়ে আর ফেরেনি ছেলে। আত্মীয়-বন্ধুবান্ধব কারও কাছে তার খবর পাওয়া যায়নি। আচমকা রাত দশটায় ছেলের একটা হোয়াটসঅ্যাপ স্টেটাস। বালি ব্রিজে দাঁড়িয়ে ভিডিয়ো শুট করে সে জানাচ্ছে, আত্মহত্যা ছাড়া কোনও উপায় নেই! এই ভিডিয়ো নিয়ে একের পর এক থানায় যান বৈদ্যবাটী রামমোহন সরণির বাসিন্দা বাবা অমল দাস। অবশেষে তিনদিন পর বুধবার খড়দা থানা এলাকায় গঙ্গা থেকে উদ্ধার হল বছর চব্বিশের অমিতের মৃতদেহ।

জানা গিয়েছে, গত ১৮ এপ্রিল থেকে নিখোঁজ ছিল অমিত। সেদিনই রাত দশটায় তার হোয়াটসঅ্যাপ স্টেটাস নজরে পড়ে মামা গোপাল পালের। স্টেটাসে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেছিল অমিত। তাতে বালি ব্রীজে দাঁড়িয়ে তাকে বলতে শোনা যায়,’আমার এটা করা ছাড়া আর কোনও উপায় ছিল না। পারলে আমাকে ক্ষমা করো সবাই।’

কিন্তু কেন আত্মহত্যা? ভিডিয়োয় অমিতকে বলতে শোনা যায়, “আজকে আমার জীবনটা শেষ হচ্ছে শুধুমাত্র সঙ্গীতার জন্য। ও আমার জীবনটাকে শেষ করে দিতে চেয়েছিল। তার আগেই আমি নিজেকে শেষ করে দিচ্ছি।” আবার জনৈক সঙ্গীতার বিরুদ্ধে যাতে থানা-পুলিশ না হয়, পরিবারের কাছে সেই অনুরোধ করতে শোনা যায় যুবককে। অমল পালের উদ্দেশে ছেলের বার্তা, ‘বাবা তুমি আমাকে ক্ষমা করো। আমি তোমাকে একা রেখে যেতে চাইনি। কিন্তু আমার কিছু করার নেই। এরা আমাকে বাঁচতে দিল না বাবা। আর এই ভিডিয়োটা সায়ন্তনীর জন্য। যাতে ওকে কেউ কিছু না বলতে পারে।’

এই ভিডিও দেখার পর জোর খোঁজাখুঁজি শুরু হয় যুবকের। প্রথমে বালি থানায় যায় ছুটে যায় পরিবার। কিন্তু বালি ব্রীজ বা দক্ষিণেশ্বরে তাকে খুঁজে পাওয়া যায়নি। পরদিন শ্রীরামপুর থানায় নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। তাতেও খোঁজ মেলেনি। অবশেষে বুধবার খড়দা থানা এলাকায় গঙ্গা থেকে উদ্ধার হয় অমিতের মৃতদেহ।

আরও পড়ুন: হোটেলে যুবতীর রক্তাক্ত নগ্ন দেহ, চিরকূটে লেখা ‘তোকে আমি মারতে চাইনি, বাধ্য হলাম’ 

মৃতের মামা শিশির মিত্র জানান, “ভাগ্নে ভিডিওগ্রাফির কাজ করত। খুব কম বয়সে সঙ্গীতা নামে একটি মেয়ের সঙ্গে ওর সম্পর্ক ছিল। বছর ছয়েক আগে সেই মেয়েটির জন্য একবার বাড়ি থেকে চলে যায় অমিত। পরে তাদের ফিরিয়ে আনা হয়।” কিন্তু কিছুদিন ধরে অমিতের সঙ্গে সম্পর্কের অবনতি হয় এবং সায়ন্তনী নামে একটি মেয়ের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে যায় সে। তাঁর কথায়, ভিডিয়ো দেখে যেটা আন্দাজ করা যাচ্ছে, নিজেদের মধ্যে হয়ত কিছু অশান্তি হয়েছিল। কিন্তু তার জন্য এমন চরম কাজ করে ফেলবে অমিত, ভাবতেই পারছি না। তবে শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ওই যুবকের পরিবার কারও বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেনি।