অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া ৩৩ হাজার টাকা! গয়না বন্ধক রেখে বিল মেটালেন করোনা আক্রান্তের স্ত্রী

"আমাকে বললে হয়তো কিছুটা কমানো যেত। পরিস্থিতির কারণে অ্যাম্বুল্যান্সের ভাড়া বেশি হয়েছে।''

অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া ৩৩ হাজার টাকা! গয়না বন্ধক রেখে বিল মেটালেন করোনা আক্রান্তের স্ত্রী
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: May 14, 2021 | 9:10 PM

হুগলি: ৬ ঘণ্টার জন্য অ্যাম্বুল্যান্স (Ambulance) ভাড়া ৩৩ হাজার টাকা! করোনা (Corona) আক্রান্ত স্বামীকে হাসপাতালে ভর্তি করতে গিয়ে অ্যাম্বুল্যান্স চালকের জন্যই গায়ের গয়না বন্ধক রাখতে হল হুগলি (Hooghly)-র কোন্নগরের এক যুবতীকে।

একদিকে অতিমারির তাণ্ডব, অন্যদিকে কালোবাজারি আর পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে কিছু স্বার্থান্বেষী মানুষের অমানবিক ব্যবহারের খবর উঠে আসছে বারবার। এই পরিস্থিতিতেই এক অ্যাম্বুল্যান্স চালকের দাদাগিরির অভিযোগ উঠল কোন্নগরে। তীক্ত অভিজ্ঞতার সাক্ষী হলেন কোন্নগরের গৃহবধূ তনুশ্রী মজুমদার।

জানা গিয়েছে, হুগলি কোন্নগরের বাসিন্দা মেহতাব আলম অসুস্থ হয়ে ভর্তি হন হিন্দমোটরের একটি বেসরকারি হাসপাতালে। বৃহস্পতিবার তাঁর কোভিড টেস্টের রিপোর্ট পজিটিভ আসে। অক্সিজেন স্যাচুরেশন লেভেল কমতে থাকায় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয় রোগীকে অন্য হাসপাতালে স্থানান্তর করতে হবে। তনুশ্রী ঠিক করেন স্বামীকে কলকাতার কোনও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করবেন।

এদিকে হিন্দমোটর অঞ্চলে কোনও সিসিইউ অ্যাম্বুল্যান্স না পেয়ে দমদমের একটি বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি। ভাড়া ঠিক হয় ১২ হাজার টাকা। কিন্তু হিন্দমোটর থেকে কলকাতার কয়েকটি হাসপাতাল ঘুরে কোথাও ভর্তি হতে না পেরে প্রায় ছয় ঘণ্টা পর স্বমীকে নিয়ে আবার হিন্দমোটরে ফিরে আসতে হয় তনুশ্রী দেবীকে। আর এর জন্য অ্যাম্বুল্যান্স চালক দর হাঁকান ৩৩ হাজার টাকা! অভিযোগ, অনেক অনুনয়-বিনয় সত্ত্বেও কিছুতেই এই ভাড়ার এক পয়সা কম নিতে রাজি হননি ওই চালক। এদিকে নগদ অত টাকা না থাকায় নিজের গলার সোনার চেন বন্ধক রাখতে বাধ্য হন ওই যুবতী!

করোনা কালে মানুষের অসহায় পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে অ্যাম্বুলেন্স চালকদের এমন দাদাগিরির ঘটনা অবশ্য এই প্রথম নয়। কলকাতা থেকে জেলায় বারবার বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্সের এহেন ব্যবহারের অভিযোগ উঠেছে। আর রোগী বাঁচাতে গিয়ে বাধ্য হয়ে তাদের সেই অন্যায় দাবি মেটাতে হচ্ছে পরিবার বা আত্মীয়-বন্ধুদের।

আরও পড়ুন: ‘বাবাকে হয়তো বাঁচানো যেত’, কেন এ কথা বলছেন সদ্য পিতৃহারা সম্ভবনা?

এদিনের ঘটনার পর সংশ্লিষ্ট বেসরকারি অ্যাম্বুল্যান্স সংস্থার মালিক উত্তম ঘোষের যুক্তি, সিসিইউ অ্যাম্বুলেন্সের ভাড়া সাধারণ অ্যাম্বুল্যান্স তুলনায় বেশি। সেখানে ডাক্তার, টেকনিশিয়ান থাকেন। কলকাতার একাধিক হাসপাতালে ঘুরে আবার হিন্দমোটরে ফিরে আসেন রোগী। তার সিফটিংয়ের চার্জও নেওয়া হয়েছে। তবে তার মধ্যেও ভাড়া যে বেশি নেওয়া হয়েছে তা স্বীকার করেন তিনি। বলেন,”আমাকে বললে হয়তো কিছুটা কমানো যেত। পরিস্থিতির কারণে অ্যাম্বুল্যান্সের ভাড়া বেশি হয়েছে।”