School Education: শিকেয় পড়াশোনা! নেই শিক্ষক, নেই শিক্ষাকর্মী, পড়ুয়ারাই ঝাঁট দেয় আবার জলও তোলে

School Education: ২০১৫ সাল থেকে এক যুবক ওই স্কুলে পড়ান এলাকার মানুষের স্বার্থে পড়ান এক যুবক। ঘণ্টা দেওয়া থেকে ক্লাস নেওয়া, সবই করেন তিনি।

School Education: শিকেয় পড়াশোনা! নেই শিক্ষক, নেই শিক্ষাকর্মী, পড়ুয়ারাই ঝাঁট দেয় আবার জলও তোলে
এই সেই স্কুল (নিজস্ব চিত্র)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Feb 11, 2023 | 9:23 AM

আরামবাগ : রাজ্যে শিক্ষার পরিস্থিতি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে আগেই। কোথাও পড়ুয়া আছে, শিক্ষক নেই, কোথাও আবার উল্টো ছবি। হুগলিতে যে ছবি ধরা পড়ল, তা কার্যন নজিরবিহীন। ক্লাস তো পরের কথা! স্কুলে এসে ঝাঁট দেওয়া, জল তোলা, সবই করতে হয় পড়ুয়াদের। আর শিক্ষক? সেই সংখ্যা শূন্য। শিক্ষাকর্মীর সংখ্যাও শূন্য। তাহলে স্কুল চলে কী করে? অবসর প্রাপ্ত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের অতিথি হিসেবে নিযুক্ত করা হয়েছে ওই স্কুলে। তাঁরাই পড়ান। আর এলাকার এক যুবক পড়ুয়াদের স্বার্থে স্কুলে ক্লাস নেন, প্রয়োজনেও ঘণ্টাও দেন তিনি। হুগলির গোঘাটের পান্ডুগ্রাম বেনেপুকুর শিবতলা জুনিয়র হাইস্কুলে দেখা গেল এই ছবি। এলাকার বাসিন্দাদের দাবি, তাঁরা সব মহলেই জানিয়েছেন এই সমস্যার কথা, কিন্তু কোনও লাভ হয়নি। TV9 বাংলার ক্যামেরায় ধরা পড়ল সরকারি বিদ্যালয়ের এই ছবি।

প্রাথমিক স্কুলে অবসরপ্রাপ্ত ২ জন শিক্ষক ও শিক্ষিকা হাইস্কুলের ক্লাস নেন অতিথি শিক্ষক হিসেবে। পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা কমতে কমতে ২৩ জনে এসে ঠেকেছে। ৬০ বছর পর্যন্ত যিনি প্রাথমিক বিদ্যালয় শিক্ষকতা করেছেন, তিনিই অবসরের পর অতিথি শিক্ষক হিসেবে উচ্চ প্রাথমিকে ক্লাস নিচ্ছেন। এমন অতিথি শিক্ষিকা তো বলেই দিলেন, অঙ্ক আর ইংরেজিতে দুর্বল তিনি, তাই বাকি বিষয়গুলির ক্লাস নেন।

আর পড়ুয়াদের কথা ভেবে এক শিক্ষিত যুবক দুলাল আচার্য ২০১৫ সাল থেকে বিনা পারিশ্রমিকে পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত এই বিদ্যালয়ে ক্লাস নেন। প্রয়োজন স্কুল পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার কাজও করেন তিনি। ২০১২ সালে সরকারি অনুমোদন পেয়েছে ওই স্কুলটি। পরবর্তী ক্ষেত্রে আরামবাগের সাংসদ তহবিলের কোটায় একটি শ্রেণিকক্ষও মিলেছে। কিন্তু প্রত্যন্ত গ্রামের স্কুল হওয়ায় পরিকাঠামো গড়ে ওঠেনি বিদ্যালয়টির। সামনেই চড়ে বেড়াচ্ছে গরু ছাগল। ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ে আছে মদের বোতল, গুটকার কাগজ।

বিদ্যালয়ের এক ছাত্রী ক্যামেরার সামনেই জানাল, ঝাঁট দেওয়া থেকে জল তোলা সব কাজই করতে হয় তাদের। আর মিডে মিল? সে তো দূরের কথা। গোঘাট ২ নম্বর ব্লকের বদনগঞ্জ সার্কেল স্কুল ইন্সপেক্টরের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছিল Tv9 বাংলার তরফে। স্কুল ইন্সপেক্টর ঋতুপর্ণা দাস ক্যামেরার সামনে কোনও কথা বলতে চাননি। তিনি বলেন, ‘শিক্ষক নিয়োগ হলে তবেই স্কুলে দেওয়া যাবে। এটা সরকারি ব্যাপার। নিয়োগ না হলে শিক্ষক দেওয়া যাবে না।’ তবে তিনি বিদ্যালয়ের এই অবস্থার কথা মেনে নিয়েছেন।

শুক্রবার স্কুলে গিয়ে দেখা গিয়েছে, ছাত্র-ছাত্রীর উপস্থিতির সংখ্যা ৪ জন। পঞ্চম ও ষষ্ঠ শ্রেণির কোনও ছাত্রছাত্রীই স্কুলে আসেনি। সপ্তম শ্রেণিতে ২ জন ও অষ্টম শ্রেণিতে ২ জন।