rare disease: বিরল রোগে আক্রান্ত আড়াই বছরের মেয়ে, চিকিৎসার টাকা জোগাড় করতে সাহায্যের আবেদন কৃষক পরিবারের
মেয়ের অবস্থা নিয়ে রাইয়ের মা শ্যামশ্রী জানা বলেন, “মেয়ে এখন শক্ত খাবার খেতে পারে না। সব সময় কাঁদে। রাতে ঘুমোতেও পারে না। গত দুমাস ধরে বিভিন্ন হাসপাতাল দৌড়ে বেরিয়েছি। মেয়ের চিকিৎসার জন্য এত খরচ কোথা থেকে আসবে জানি না।”
জাঙ্গিপাড়া: একরত্তি মেয়েটা সবে হাঁটতে শিখছিল। অল্প অল্প কথাও বলতে শুরু করেছিল। কিন্তু হঠাৎ সব বদলে গেল। আচমকা তার হাঁটা চলা বন্ধ হয়ে যায়। বসেও থাকতে পারে না। সব সময় শুধু কাঁদে। কিছু খেতে পারেনা। এমনই অবস্থা হয়েছে হুগলির জাঙ্গিপাড়ার গোপালপুরের বাসিন্দা অভিজিৎ জানার মেয়ের। অভিজিতের মেয়ে রাইয়ের বয়স মাত্র ২ বছর ৩ মাস। মেয়ের হঠাৎ এ রকম হওয়ার পর থেকেই তাঁকে কলকাতার বিভিন্ন হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কিন্তু সেখানকার চিকিৎসকরা রোগ ধরতে পারেননি বলে অভিযোগ। এর পর বেঙ্গালুরুতে চিকিৎসার জন্য রাইকে নিয়ে যান তার পরিবারের লোকেরা। সেখানে চিকিৎসকরা জানিয়েছেন বিরল রোগে আক্রান্ত হয়েছে রাই। দ্রুত তার অস্ত্রোপচার প্রয়োজন। সেই অস্ত্রোপচারের খরচ প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা। সেই টাকা কী করে জোগাড় করবেন তা ভেবে পাচ্ছেন না পেশায় কৃষক অভিজিৎ। ঘুরে ঘুরে মেয়ের চিকিৎসার জন্য অর্থ সংগ্রহ করছেন তাঁরা। স্থানীয় বিধায়ক এবং সাংসদের কাছে মেয়ের চিকিৎসার জন্য সাহায্য চেয়েছেন বলে জানিয়েছেন তাঁরা।
মেয়ের শরীরে আচমকা পরিবর্তনের পর তাঁকে নিয়ে কলকাতায় গিয়েছিলেন অভিজিৎ জানা ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু সেখানে গিয়ে কোনও কাজ হয়নি। পরে তাঁকে নিয়ে বেঙ্গালুরু ছুটে যান তাঁরা। সেখানকার চিকিৎসকরা জানান জেনেটিক রোগে আক্রান্ত হয়েছে রাই। বছর আড়াইয়ের রাইয়ের শরীরে আচমকা পরিবর্তন হয়েছে লিউকোডিসট্রফি (Leukodystrophy) রোগের জন্য। এই রোগে শরীরে স্টেম সেল উৎপাদন বন্ধ হয়ে গিয়েছে। রাইয়ের পরিবারের লোকেদের চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, রাইয়ের সুস্থতার জন্য বোন ম্যারো ট্রান্সপ্ল্যান্ট করা জরুরি। যার খরচ প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা। এই চিকিৎসা না হলে ধীরে ধীরে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গ বিকল হতে শুরু করবে। এর জেরে মৃত্যুও হতে পারে ছোট্ট মেয়েটির।
কিন্তু চিকিৎসার জন্য এই বিপুল খরচ কোথা থেকে জোগাড় করবেন ওই কৃষক পরিবার। মেয়ের চিকিৎসার জন্য ইতিমধ্যেই তিন লক্ষ টাকা খরচ হয়েছে বলে জানিয়েছেন অভিজিৎ। বেঙ্গালুরুর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, আপাতত তিন লক্ষ টাকা দিয়ে চিকিৎসা শুরু করা যাবে। কিন্তু দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা না গেলে শারীরিক অবস্থার অবনতি হবে। তাই বন্ধুদের নিয়ে মেয়ের চিকিৎসার খরচ জোগাতে এখান ওখান ঘুরে বেড়াচ্ছেন অভিজিৎ। রবিবার ফুরফুরা শরিফে গিয়েছিলেন তাঁরা সাহায্যের জন্য। অভিজিতের বন্ধু দীপক দে বলেছেন, “মেয়ের চিকিৎসায় জমি বেচে দিয়েছে অভিজিৎ। ওর এখন আর কিছুই নেই। আমরা চেষ্টা করছি মেয়েটাকে বাঁচানোর। কিন্তু শুধু আমাদের চেষ্টায় সবটা হবে না আরও মানুষকে এগিয়ে আসতে হবে।”
মেয়ের অবস্থা নিয়ে রাইয়ের মা শ্যামশ্রী জানা বলেন, “মেয়ে এখন শক্ত খাবার খেতে পারে না। সব সময় কাঁদে। রাতে ঘুমোতেও পারে না। গত দুমাস ধরে বিভিন্ন হাসপাতাল দৌড়ে বেড়িয়েছি। মেয়ের চিকিৎসার জন্য এত খরচ কোথা থেকে আসবে জানি না।” রাই এর চিকিৎসায় সাহায্যের জন্য আবেদন করা হয়েছে স্থানীয় বিধায়ক, সাংসদ থেকে মুখ্যমন্ত্রীর কাছেও।