Missing Old Lady : দীর্ঘদিন নিখোঁজ নব্বই বছরের বৃদ্ধা, শেষে ফেসবুকই মিলিয়ে দিল মা-ছেলেকে
Missing Old Lady : ঠিকানা পেয়ে এক সহকর্মীকে দিয়ে তা যাচাই করেন সুকুমারবাবু। খবর দেওয়া হয় বৃদ্ধার ছেলে সুরেন ভূমিজকে। খবর যায় গুড়াপ থানায়।
হুগলি : গুড়াপ (Gurap) থানার খরুয়া গ্রামের বাসিন্দা খেদিবালা ভূমিজের বয়স প্রায় নব্বই। কিছুদিন আগে বাড়ি থেকে হঠাৎ বেরিয়ে নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন। তারপর থেকে হন্যে হয়ে মায়ের খোঁজে ঘুরেছিলেন ছেলে। কিন্তু, কয়েকদিন খোঁজাখুঁজি করেও মায়ের কোনও খোঁজ পাননি। তারপর কেটে গিয়েছে দীর্ঘদিন। এদিকে এরইমধ্যে হুগলির (Hooghly) সদর চুঁচুড়া শহরের ঘড়ির মোড়, কোর্টের ধারে মাঝেমধ্যেই ঘুরতে দেখা যেত এক ভবঘুরে মহিলাকে। পথচলতি মানুষের কাছ থেকে যা পেতেন তাই খেতেন। শুতেন গাছতলাতেই। সূত্রের খবর, দিন তিনেক আগে এক সন্ধ্যায় আমরাতলা আবাসনে ঢুকে গাছের পাতা কুড়িয়ে জড়ো করছিলেন ওই মহিলা। ওই আবাসনেই থাকতেন পুলিশ কর্মী সুকুমার উপাধ্যায়। তিনিই বৃদ্ধাকে ডেকে নাম-ঠিকানা জিজ্ঞাস করেন। কিন্তু, উত্তরে অসংলগ্নভাবে কথা বলতে থাকেন ওই বৃদ্ধা। তাঁর কথা শুনে শুরুতেই কিছু বোঝা যায়নি।
এদিকে ততক্ষণে আবাসনের অন্যান্য বাসিন্দারাও জড়ো হয়ে গিয়েছেন। তাঁরাই খেতে দেন ওই বৃদ্ধাকে। শীতের পোশাকও দেওয়া হয়। তাঁকে সেখানেই রেখে দেওয়া হয়। স্নানও করানো হয় ভাল করে। এদিকে এরইমধ্যে আরও বেশ কয়েকবার ওই বৃদ্ধার কাছ থেকে তাঁর বাড়ির ঠিকানা জানতে চান আবাসনের বাসিন্দারা। উত্তরে বৃদ্ধা কখনও বলেন বাঁকুড়া, কখনও আবার বলেন বৈঁচি। অসহায় বৃদ্ধাকে নিয়ে কী করা যায় তা ভাবতে থাকেন সকলে। এরপরই পুলিশ কর্মী সুকুমার উপাধ্যায় বৃদ্ধার ছবি তুলে ফেসবুকে দেন। কেউ তাঁর পরিচয় জানলে যোগাযোগ করতে বলেন। তাঁর পোস্টই নজরে আসে ধনিয়াখালির এক বাসিন্দার। তিনি আবার চুঁচুড়া আদলতে কাজ করেন। মহিলাকে দেখে চিনতেও পারেন। তিনিই সুকুমারবাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করে বৃদ্ধার বাড়ির ঠিকানা দেন। সেই ঠিকানা হুগলির গুরাপের।
ঠিকানা পেয়ে এক সহকর্মীকে দিয়ে তা যাচাই করেন সুকুমারবাবু। খবর দেওয়া হয় বৃদ্ধার ছেলে সুরেন ভূমিজকে। খবর যায় গুড়াপ থানায়। মাকে পাওয়া গিয়েছে, এ কথা প্রথমে শুনে যেন বিশ্বাই করতে পারছিলেন না সুরেনবাবু। ছুটে যান চুঁচুড়ার ওই আবাসনে। ছেলেকে দেখে চিনতেও পারেন ওই বৃদ্ধা। হাসিতে ঝলমল করে ওঠে মুখ। দীর্ঘদিন পর মাকে দেখতে পেয়ে ততক্ষণে সুরেনের চোখের কোণে টলটল করছে আনন্দাশ্রু। দেখা মাত্রই মাকে জড়িয়ে ধরেন তিনি। ধন্যবাদও জানান সুকুমারবাবুকে। সুরেনবাবু বলেন, “ আমি বাড়ির পাশেই চা খেতে বেরিয়ে ছিলাম। বাড়ি ফিরে আর মায়ের দেখা পাইনি। তারপর থেকেই নিখোঁজ ছিল। খোঁজাখুঁজিও করেছিলাম। দেখা পাইনি। কালই গুড়াপ থানা থেকে খবর পাই মাকে খুঁজে পাওয়া গিয়েছে। খুব ভাল লেগেছিল খবরটা শুনে। আজ দেখতে পেলাম। ওনারাই মাকে ফিরেয়ে দিলেন। আমি কৃতজ্ঞ।”