Hubba Shyamal: বাংলার ত্রাস হুব্বা শ্যামল কখনও ‘ভাল ছেলে’দের দলে ভেড়াত না

Hubba Shyamal: হুব্বা শ্যামলের পরিবার অবশ্য এসবে আর ঢুকতে চান না। কথাও বলতে আগ্রহী হন। তবে হুব্বা শ্যামলের ছেলেবেলার বন্ধু পলাশ মিত্র বলেন, "ছোটবেলা থেকেই দেখেছি। আমাদের বাড়িতেও আসত। আমার মা খুব ভালবাসত ওকে। আমার মাকে মা ডাকত ও। ত্রাস হতে পারে অনেকের। তবে অনেকের অনেক ভালও করেছেন। ওকে নিয়ে সিনেমা হচ্ছে। দেখার সুযোগ হলে নিশ্চয়ই দেখব।"

Hubba Shyamal: বাংলার ত্রাস হুব্বা শ্যামল কখনও 'ভাল ছেলে'দের দলে ভেড়াত না
হুব্বা শ্যামলকে নিয়ে সিনেমা। Image Credit source: TV9 Bangla
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 18, 2024 | 7:51 PM

হুগলি: এক সময় হুগলির ত্রাস ছিলেন শ্যামল দাস ওরফে হুব্বা শ্যামল। সেই হুব্বা শ্যামলকে নিয়ে সিনেমা বানিয়েছেন রাজ্যের মন্ত্রী ব্রাত্য বসু। ১৯ জানুয়ারি মুক্তি পাচ্ছে প্রেক্ষাগৃহে। হুব্বা শ্যামলকে নিয়ে সিনেমা, কী বলছে তাঁর ‘মুক্তাঞ্চল’ কোন্নগর ধর্মডাঙার বাসিন্দারা? ধর্মডাঙা প্রাথমিক স্কুলে সহপাঠী ছিলেন সীতারাম। মনে আছে তাঁর, পড়াশোনায় মোটে মন বসত না শ্যামলের। এমন অমনোযোগ দেখে দিদিমণি একবার বলেই দিয়েছিলেন, ‘পড়াশোনা করিস না যে, বড় হয়ে কি মস্তান হবি?’ সীতারাম বলেন, দিদিমণির প্রশ্ন শুনে শ্য়ামল বলেছিল ‘হ্যাঁ’।

সত্যি বড় হয়ে মস্তানই হয়েছিলেন ধর্মডাঙার শ্যামল। পাতি চমক ধমক নয়, পুরো ত্রাস! সেই হুব্বা শ্যামলের মৃত্যুর এক যুগ পর তাঁকে নিয়ে একটা গোটা সিনেমা তৈরি হয়েছে। হুব্বার পাড়ায় এ নিয়ে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কোন্নগর স্টেশন থেকে রেল লাইন বরাবর উত্তরে রিষড়ার দিকে যেতে কিছুটা এগোলেই ধর্মডাঙা। সেই ধর্মডাঙার মোড়েও হুব্বার পোস্টার। কোন্নগর স্টেশন রোড-সহ হুগলির বিভিন্ন জায়গায় এ ছবির পোস্টারে ছয়লাপ।

ধর্মডাঙার অনেকেই বলেছেন, সিনেমাটা দেখতে যাবেন। হুব্বা শ্যামল বর্ণময় চরিত্র এলাকার অনেকের কাছেই। ২০০৩ সালে পঞ্চায়েত ভোটের সময় কোন্নগরের কংগ্রেস নেতা মানস রায় চৌধুরীকে খুনের অভিযোগ ওঠে। নাম জড়ায় হুব্বার। এরপর একাধিক খুন, তোলাবাজি, অপহরণের অভিযোগ শ্যামলকে এলাকায় ‘গ্যাংস্টার’ করে তুলেছিল। শোনা যায় ৪০ টি মামলা ছিল হুব্বার বিরুদ্ধে।

২০০৫ সালে সল্টলেকের একটি মাল্টিপ্লেক্সে সিনেমা দেখতে গিয়ে সিআইডির হাতে গ্রেফতার হন হুব্বা। তাঁর একাধিক সঙ্গীকে ধরে কোন্নগর ক্রাইপার রোড বারুজীবি-সহ উত্তরাপাড়া, রিষড়া থানা এলাকায় কোমরে দড়ি বেঁধে ঘোরায় পুলিশ। তবে কিছুদিন পরই জামিন পেয়ে যান।

২০১০ সালে পুরভোটে কোন্নগর পুরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ড থেকে নির্দলে মনোনয়ন দাখিল করেন হুব্বা। যদিও পরে তা প্রত্যাহার করে নেন। শ্রীরামপুর মহকুমা শাসকের দফতরে মনোনয়নের দিন এমন র‍্যালি করেছিলেন, তা নাকি দক্ষিণ ভারতের কোনও সিনেমার দৃশ্যের মতো। ২০১১ সালে হুব্বার দেহ উদ্ধারের পর খুনের অভিযোগ ওঠে। নাম জড়ায় তাঁরই এক সাগরেদের। যে ‘পৈতে কাট’ মার্ডার ছিল হুব্বার ‘ট্রেডমার্ক’, সেই কায়দাতেই নাকি খুন হন হুব্বা শ্যামল। এমনও অভিযোগ ওঠে, ছুরি চালানোর এই বিশেষ কায়দা হুব্বা শিখিয়েছিলেন ওই সাগরেদকে।

হুব্বা শ্যামলের পরিবার অবশ্য এসবে আর ঢুকতে চান না। কথাও বলতে আগ্রহী হন। তবে হুব্বা শ্যামলের ছেলেবেলার বন্ধু পলাশ মিত্র বলেন, “ছোটবেলা থেকেই দেখেছি। আমাদের বাড়িতেও আসত। আমার মা খুব ভালবাসত ওকে। আমার মাকে মা ডাকত ও। ত্রাস হতে পারে অনেকের। তবে অনেকের অনেক ভালও করেছেন। ওকে নিয়ে সিনেমা হচ্ছে। দেখার সুযোগ হলে নিশ্চয়ই দেখব।”

হুব্বার প্রতিবেশী তারাপদ সামন্ত জানালেন, এলাকায় একবার এক মেয়ের বিয়ে আটকে গিয়েছিল। এক নাম করা মিষ্টির দোকান থেকে মিষ্টি কিনে নিয়ে গিয়ে ওই মেয়ের বিয়ে দিয়েছিলেন বরাহনগরে। স্থানীয় তৃণমূল নেতা তথা রিষড়া পঞ্চায়েতের সদস্য গৌতম চক্রবর্তী বলেন, “এ ছবি নিয়ে তো উৎসাহ অনেক। কারণ ওর রঙিন জীবন নিয়ে আগ্রহ সকলের। একটা জিনিস ছিল, কোনও ভদ্র ছেলে বা এলাকার ভাল ছেলেকে দেখিনি যে ক্রিমিনালের সংস্পর্শে আসতে দিয়েছেন তিনি। আর প্রচুর মানুষের উপকার করেছেন বলেও শুনেছি। আমরা সরাসরি যাইনি কোনওদিন ঠিকই। তবে বহু গরিব মানুষ উপকার পেয়েছেন বলেন। ভাল মন্দ মিশিয়ে একটা রঙিন চরিত্র ছিলেন। ফলে তাঁকে নিয়ে সিনেমা হচ্ছে, একটা আলাদা উন্মাদনা তো আছেই।”