‘মিষ্টির দোকান ছাড় পেলে আমরা বাদ কেন?’ মুখ্যমন্ত্রীর ‘দুয়ারে’ বিউটিশিয়নরা
অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করা হয়েছে বিউটি পার্লার, জিম, স্পা ইত্য়াদি। অথচ, এই বিউটি পার্লার গুলিতে কাজ করেন অধিকাংশই মহিলা কর্মীরা। ধীরে ধীরে তাঁরা স্বনির্ভর হচ্ছেন কাজের মাধ্যমে। আচমকা এইভাবে পার্লার বন্ধের জেরে কাজ খোয়াতে বসেছেন অনেকেই।
হাওড়া: বঙ্গে করোনা মোকাবিলায় জারি কার্যত লকডাউন। নিয়ম মেনে চলছে বাজার-দোকান। ১৫জুনের পর থেকে ধীরে ধীরে নিয়ম মেনেই চালু করা হবে রেস্তোঁরা, হোটেল ইত্যাদি। এই পরিস্থিতিতে চরম আতান্তরে পড়েছেন বিউটি পার্লারের (Beauty Parlor) কর্মীরা। কারণ, অনেক পরিষেবার ছাড়পত্র মিললেও জিম, স্পা বা বিউটি পার্লারগুলি এখনও চালু হওয়ার ছাড়পত্র পায়নি। ফলে, বন্ধ হয়েছে রোজগার। টান পড়েছে সঞ্চয়ে। পরিস্থিতির গভীরতা অনুধাবন সরাসরি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে বিউটি পার্লার চালু করার আবেদন জানিয়ে একটি দরখাস্ত দিলেন হাওড়া ও কলকাতার একাধিক বিউটি পার্লারের কর্ণধার ও কর্মীরা।
বিউটিশিয়নদের একাংশের দাবি, রাজ্যে করোনা মোকাবিলায় কার্যত লকডাউন ঘোষণা হলেও শর্তসাপেক্ষে খুলে যাচ্ছে হোটেল রেস্তোঁরা। মদ ও মিষ্টির দোকানও খুলে রাখা হচ্ছে নির্দিষ্ট সময়ে। খোলা থাকছে অত্যাবশ্যকীয় পণ্য়ের দোকান ও বাজার। কিন্তু অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ করা হয়েছে বিউটি পার্লার, জিম, স্পা ইত্য়াদি। অথচ, এই বিউটি পার্লার (Beauty Parlor) গুলিতে কাজ করেন অধিকাংশই মহিলা কর্মীরা। ধীরে ধীরে তাঁরা স্বনির্ভর হচ্ছেন কাজের মাধ্যমে। আচমকা এইভাবে পার্লার বন্ধের জেরে কাজ খোয়াতে বসেছেন অনেকেই। বন্ধ হয়ে যাচ্ছে রোজগার। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্য়ায় তৃতীয়বারের জন্য ক্ষমতায় এসে বলেছিলেন এই জয় নারী শক্তির জয়, মহিলাদের জয়। সেই কথা স্মরণ করেই মুখ্যমন্ত্রী যেন বিউটিশিয়নদের আয়ের পথটি সুগম করেন তারই আবেদন করে একটি দরখাস্ত জমা দেন তাঁরা।
কী লেখা হয়েছে সেই দরখাস্তে? বিউটিশিয়নরা লিখেছেন, “মাননীয়া, তৃতীয়বারের জন্য আপনাকে মুখ্য়মন্ত্রী হিসেবে দেখে আমরা যারপরনাই আপ্লুত। আমরা ছোট ব্যবসায়ী। ধীরে ধীরে স্বনির্ভর হয়ে উঠেছি। করোনা মোকাবিলায় আপনি যা পদক্ষেপ করেছেন তা সদর্থক। তবে দীর্ঘদিন আমাদের ব্যবসা বন্ধ থাকায় কাজ হারাতে বসেছেন অনেকে। যেভাবে শর্তসাপেক্ষে মিষ্টির দোকান, হোটেল, রেস্তোঁরা, খোলা থাকছে, সেইভাবে কোভিড বিধি মেনে পার্লার খোলারও অনুমতি দিলে আমরা বাধিত থাকব। এই দুঃসময়ে আমাদের মতো দিন আনা দিন খাওয়া মানুষদের জন্য যদি কোন পদক্ষেপ করেন তবে আমরা কৃতজ্ঞ থাকব।” ইতিমধ্যেই সেই দরখাস্ত মুখ্যমন্ত্রীর কাছে পাঠিয়েছেন রূপবিশারদরা। আগামীতে তাঁরা এই মর্মে নবান্নের কাছে জমায়েত করবেন বলে জানিয়েছেন। প্রয়োজনে কালীঘাটে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতেও নিজেদের আবেদন পৌঁছে দেবেন বিউটিশিয়নরা।
উল্লেখ্য, গত বছর করোনার প্রথম ঢেউয় দেশজুড়ে জারি হয়েছিল লকডাউন। সেপ্টেম্বর নাগাদ ধীরে ধীরে সব কিছু চালু হলেও ছন্দে ফিরতে সময় লেগেছিল পার্লার (Beauty Parlor) কর্মীদের। লকডাউনের জেরে হু হু করে কমেছিল খদ্দের। ধীরে ধীরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হতে শুরু করলেও কর্মীর আকালে প্রায় বন্ধ হয়ে যেতে বসে পার্লারের ব্যবসা। করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আসার আগে কোভিড বিধি মেনেই ব্য়বসা চালাচ্ছিলেন পার্লার কর্মীরা। তবে, করোনার দ্বিতীয় ঢেউ ফিরিয়ে আনে সেই পুরনো আতঙ্ক। পেশার টানেই মূলত এদিন পিটিশন জমা দেন পার্লার কর্মীরা।
আরও পড়ুন: এক রাতেই সিদ্ধান্ত মমতার! বজ্রাঘাতে মৃতদের পরিবারের পাশে সরকার, ক্ষতিপূরণ বাবদ প্রদত্ত ২ লক্ষ টাকা