Mysterious Death: সারারাত ‘নিখোঁজ’ ছেলেকে অবচেতন অবস্থায় পৌঁছে দিল ২ টোটোচালক, হাওড়ায় যুবকের মৃত্যুতে দানা বাঁধছে রহস্য
Howrah Death: ওই যুবকের মৃত্যু ঘিরে ইতিমধ্যেই রহস্য ঘনাতে শুরু করেছে। যুবকের এক বন্ধুকে আটক করে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে।
হাওড়া: হাওড়ার জগাছার (Howrah) বাসিন্দা শান্তনু দাস। ধাড়সা সমাজকল্যাণ গভর্নমেন্ট কলোনিতে বাড়ি। পেশা বাইক মেরামতি। একটি গ্যারেজও রয়েছে শান্তনুর। শনিবার বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন। তারপর আর বাড়ি ফেরেননি। পরের দিন সকালে গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে বাড়িতে পৌঁছে দিয়ে গিয়েছিলেন এলাকার কিছু মানুষ। তারপর থেকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সোমবার রাতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়। ওই যুবকের মৃত্যু ঘিরে ইতিমধ্যেই রহস্য (Mysterious Death) ঘনাতে শুরু করেছে। যুবকের এক বন্ধুকে আটক করে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করছে। কী কারণে ওই যুবকের মৃত্যু, তা তদন্ত করে দেখছেন পুলিশকর্মীরা।
শনিবার রাতে বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন শান্তনু। পরিবারের লোকদের বলেছিলেন, কাজ আছে। কিন্তু অনেক রাত হয়ে গেলেও যুবক আর বাড়ি ফেরেনি। যুবকের দিদি অর্পিতা দাস সেই সময় তাঁকে ফোনও করেছিলেন। শান্তনু ফোনে জানিয়েছিলেন, একটি ছোট কাজ আছে, সেটি সেরেই বাড়ি ফিরছেন। কিন্তু রাত পেরিয়ে ভোর হয়ে গেলেও শান্তনু আর ফেরে না। এরপর রবিবার সকাল সাড়ে ছ’টা নাগাদ শান্তনুকে বাড়িতে পৌঁছে দেন দুই টোটোচালক। শান্তনু অবস্থা দেখে চমকে উঠেছিলেন পরিবারের লোকেরা। গুরুতর আহত অবস্থায় বাড়িতে আসেন তিনি। কী হয়েছে শান্তনুর সঙ্গে? টোটোচালকদের কাছে জানতে চেয়েছিলেন উদ্বিগ্ন মা। উত্তরে টোটোচালকরা জানিয়েছিলেন, বাড়ির কাছেই গুরুতর আহত অবস্থায় শান্তনু পড়েছিল। কোনওভাবে পথ দুর্ঘটনা হয়েছিল বলে অনুমান টোটোচালকদের। এরপর পরিচিত দেখে তাঁরা শান্তনুকে বাড়ি পৌঁছে দেন।
এদিকে চোট এতটাই গুরুতর ছিল যে শান্তনু প্রায় অচেতন হয়ে পড়েছিলেন। ওইদিনই পরিবারের লোকেরা তাঁকে প্রথমে এসএসকেএম হাসপাতাল ও পরে নীলরতন সরকার হাসপাতালে নিয়ে যান। হাসপাতালের ট্রমা কেয়ার ইউনিটেই চিকিৎসাধীন ছিলেন শান্তনু। সোমবার রাত পৌনে ১০টা নাগাদ সেখানে মৃত্যু হয় তাঁর। এদিকে মৃত যুবকের মাথায়, নাকে ও পিঠে গভীর আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়। পরিবারের সদস্যদের দাবি দুর্ঘটনা নয়, শান্তনুকে খুন করা হয়েছে। শান্তনুর মৃত্যুর পর মঙ্গলবার সকালে জগাছা থানায় গিয়ে তাঁর পরিবারের লোকেরা ছেলেকে খুন করা হয়েছে বলে দাবি করেন। পুলিশ ইতিমধ্যেই ওই যুবকের দেহ ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে।
পুলিশ ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে, শনিবার রাতে শান্তনু তাঁর দুই বন্ধু সোমনাথ দাস ও সুবোধ কুমার সাউয়ের সঙ্গে হাওড়ার বাঁকড়া এলাকায় মদ্যপান করতে গিয়েছিল। মদ্যপানের পর তিন বন্ধু চা খাওয়ার জন্য বেলঘড়িয়া এক্সপ্রেসওয়ে ধরে বালির দিকে যাচ্ছিল। বাইকটি চালাচ্ছিলেন সুবোধ। বালিহল্টের কাছে একটি গাড়ি তাঁদের ধাক্কা মারে। দুর্ঘটনার অভিঘাতে ছিটকে পড়ে যান তিন জন। দুর্ঘটনায় শান্তনু ও সোমনাথ গুরুতর আঘাত পান। অল্প চোট পান সুবোধও। দুর্ঘটনার পর দু’টি টোটোয় করে শান্তনু ও সোমনাথকে বাড়ি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন সুবোধ। পরে নিজেও বাড়ি চলে যান। যদিও এই ঘটনা সত্যি কি না তা জানতে সুবোধকে আটক করেছে পুলিশ। এটি নিছক দুর্ঘটনা নাকি খুনের কোনও তত্ত্ব রয়েছে, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
এই ঘটনায় একটি খুনের চেষ্টার মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে জগাছা থানার পুলিশ। এদিকে আহত শান্তনু যখন বাড়ি ফিরেছিলেন, তখন তাঁর সঙ্গে দু’টি মোবাইল ফোন থাকলেও তাঁর মানিব্যগটি সেই সময় পাওয়া যায়নি। শনিবার রাতে বন্ধুদের সঙ্গে শান্তনু যে সব জায়গায় গিয়েছিলেন, সেই সব জায়গায় গিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ এই মৃত্যু রহস্য উদ্ঘাটনের চেষ্টা চালাচ্ছে।