Kidnapping: রাতে বন্দুক ঠেকিয়ে অপহরণ চিকিত্‍সককে, একটা ‘ক্লু’-তেই কয়েক ঘণ্টায় গ্রেফতার ২

Howrah: বুধবার রাত ১১ টা নাগাদ আন্দুল রোডের একটি নার্সিংহোম থেকে নিজের গাড়িতে বাড়ি ফিরছিলেন চিকিত্‍সক গৌতম দাস

Kidnapping: রাতে বন্দুক ঠেকিয়ে অপহরণ চিকিত্‍সককে, একটা 'ক্লু'-তেই কয়েক ঘণ্টায় গ্রেফতার ২
চিকিত্‍সক গৌতম দাস, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 29, 2021 | 8:51 PM

 হাওড়া: ঠিক যেন সিনেমা। টানটান কোনও রুদ্ধশ্বাস থ্রিলারকেও হার মানাতে পারে এই ঘটনা। রাতে বাড়ি ফেরার পথে এক চিকিত্‍সককে অপহরণ করেছিল দুষ্কৃতীরা। ফোন করে বিপুল অঙ্কের টাকা মুক্তিপণও দাবি করে তারা। কিন্তু, একটা ছোট্ট ক্লুতেই ফাঁস হয়ে গেল দুষ্কৃতীদের সব কীর্তি। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি হাওড়ার।

বুধবার রাত ১১ টা নাগাদ আন্দুল রোডের একটি নার্সিংহোম থেকে নিজের গাড়িতে বাড়ি ফিরছিলেন চিকিত্‍সক গৌতম দাস। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, সেইসময় সাঁকরাইল স্টেশনের লেভেল ক্রসিং পার হওয়ার পর মোটর বাইকে চড়ে কয়েক জন দুষ্কৃতী তাঁর গাড়ি আটকায়। চালকের মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে গাড়ির ভিতরে ঢুকে পড়ে তিন জন। এক জন দুষ্কৃতী গাড়ি চালিয়ে নিয়ে যায়।

গাড়ির মধ্যেই গৌতমবাবুর মাথায় বন্দুক ঠেকিয়ে ৩০ লক্ষ টাকা মুক্তিপণ চায় তারা। না দিলে প্রাণে মারার হুমকিও দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। এর পরে গৌতমবাবুর মোবাইল থেকে তাঁর বাড়িতে ফোন করে টাকা চায় দুষ্কৃতীরা। ইতিপূর্বেই চিকিৎসকের ছেলে বিষয়টি অন্য এক চিকিৎসককে জানান। গৌতমবাবুর  পরিবারের তরফে অপহরণের কথা জানানো হয় হাওড়ার পুলিশ কমিশনার সি সুধাকরকে। তিনি সাঁকরাইল থানা, ডোমজুড় থানা ও নাজিরগঞ্জ ফাঁড়িকে দুষ্কৃতীদের ধরতে নির্দেশ দেন। সেইমতোই দুষ্কৃতীদের কল লিস্ট দেখে মোবাইল ট্র্যাক করতে শুরু করে পুলিশ।

মোবাইল ট্র্যাক করতে গিয়ে পুলিশ দেখে চিকিৎসককে গাড়িতে নিয়ে ৬ নম্বর জাতীয় সড়কের বিভিন্ন এলাকায় ঘুরছে দুষ্কৃতীরা। সেইমতোই পুলিশ গাড়িটিকে ধাওয়া করতে শুরু করে। অবশেষে রাত আড়াইটে নাগাদ ধূলোগড় ফ্লাইওভারের কাছে মুক্তিপণের টাকা না পেয়ে দুষ্কৃতীরা ওই চিকিৎসককে গাড়ি থেকে নামিয়ে আগ্নেয়াস্ত্র উঁচিয়ে গুলি করে খুন করতে উদ্যত হয়।

মোক্ষম সময়ে, চিকিৎসকের গাড়ির পিছনে ধাওয়া করে সেখানে পৌঁছে যায় পুলিশ। হাওড়া সিটি পুলিশের গোয়েন্দা ও তিনটি থানার বিশাল পুলিশ বাহিনী ঘিরে ফেলে দুষ্কৃতীদের। পুলিশকে দেখেই চম্পট দেওয়ার চেষ্টা করে চার দুষ্কৃতী। ২ জন পালালেও বাকি ২ জনকে হাতেনাতে ধরে ফেলে তদন্তকারীরা।

গৌতম জানিয়েছেন, তাঁকে বিভিন্ন জায়গায় ঘোরানো হচ্ছিল যাতে পুলিশ কিছুতেই তাঁর অবস্থান বুঝতে না পারে। তাঁকে ছ’নম্বর জাতীয় সড়কের ধারে আলমপুর নামে একটি এলাকায় আটকে রাখা হয়। সেখান থেকেই পুলিশ তাঁকে উদ্ধার করে। গৌতমবাবুর কথায়, ‘‘পুলিশ আমাকে নবজন্ম দিল। না হলে আমি বেঁচে ফিরতে পারতাম না। টাকা না পাওয়ার জন্য ওরা আমাকে মেরে দিত।’’

এই প্রসঙ্গে হাওড়া সিটি পুলিশের এসিপি সাউথ কামরুজ্জমান মোল্লা জানান, অপহরণের ঘটনায় সুদীপ্ত সিংহ এবং মহম্মদ হোসেন নামে দু’জন দুষ্কৃতীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ধৃতদের কাছ থেকে একটি আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়েছে। প্রাথমিক তদন্তে জানা গিয়েছে, ধৃতরা সাঁকরাইল এলাকারই বাসিন্দা। দু’জনই গাড়ির চালক। কী কারণে তারা চিকিৎসককে অপহরণ করতে গিয়েছিল তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বাকি দু’জনের খোঁজে তল্লাশি চালানো হচ্ছে। চিকিৎসককে অক্ষত অবস্থায় তাঁর পরিবারের কাছে ফেরত পাঠানো হয়েছে। তাঁর কথায়, খবর পাওয়ার এক ঘন্টার মধ্যেই গাড়ি সমেত দুষ্কৃতীদের ধরা হয়। উদ্ধার করা হয় চিকিৎসককে।

আরও পড়ুন: Mamata Banerjee: সফর শেষের আগে ধসে কবলিত এলাকা পরিদর্শন, মর্নিং ওয়াক সেরে চায়ের দোকানে আড্ডা মুখ্যমন্ত্রীর