Purba Burdwan Murder: খুনে সুপারি কিলার নিয়োগের নেপথ্যে ঘনিষ্ঠ পরিজনই, ব্যবসায়ী-হত্যাকাণ্ডে গ্রেফতার ২
Murder: পুলিশ সূত্রে খবর, ওই দুই দুষ্কৃতীর একজন সুপারি কিলার ও অন্যজন গাড়ির মালিক। রবিবার সকালে ওই দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে, সব্যসাচী মণ্ডলের খুনে সুপারি কিলার নিয়োগ করেছিলেন যে আত্মীয় সেই পরিজন এখনও বেপাত্তা
হাওড়া: নিজের গ্রামের বাড়িতে গিয়ে খুন (Murder) হন হাওড়ার ব্যবসায়ী সব্যসাচী মণ্ডল। আগেই এই ঘটনায় দুই ব্যক্তিকে আটক করেছিল পুলিশ। এ বার সেই হত্যাকাণ্ডে নয়া মোড়। খুনের ঘটনায় দুই দুষ্কৃতীকে নারকেলডাঙা থেকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই দুই দুষ্কৃতীর একজন সুপারি কিলার ও অন্যজন গাড়ির মালিক। রবিবার সকালে ওই দুই ব্যক্তিকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। তবে, সব্যসাচী মণ্ডলের খুনে সুপারি কিলার নিয়োগ করেছিলেন যে আত্মীয় সেই পরিজন এখনও বেপাত্তা। তাঁর খোঁজ চলছে। জানা গিয়েছে, ওই সুপারি কিলার যে গাড়িতে গিয়ে খুন করেছিলেন সেই গাড়ির মালিককেই গ্রেফতার করা হয়েছে। তবে তদন্তের স্বার্থে ওই দুই ধৃতের নাম প্রকাশ্যে আনেননি তদন্তকারীরা।
তদন্তকারীরা আগেই অনুমান করেছিলেন, সুপারি কিলার দিয়ে ওই ব্যবসায়ীকে খুন করা হয়েছে। কলকাতা বা হাওড়ায় এই খুন হলে বেশি নজরে পড়ত, তাই বেছে নেওয়া হয়েছে ব্যবসায়ীর গ্রামের বাড়ি। শুধু তাই নয়, খুনের নেপথ্যে যিনি ‘কিংপিং’ তিনি এই ব্য়বসায়ীর সঙ্গে যথেষ্ট পরিচিত। এমনকী, নিহত সব্যসাচী কখন বাড়ি থাকবেন, কখনই বা গ্রামের বাড়িতে যাতায়াত করছেন তার সবই নজরে রেখেছিলেন খুনী। ব্যবসায়িক শত্রুতার কারণেই এই খুন বলে প্রাথমিক অনুমান পুলিশের।
হাওড়ার শিবপুরে থাকতেন সব্যসাচী। তাঁর পলিথিনের ব্যবসা রয়েছে। তবে তাঁর গ্রামের বাড়ি পূর্ব বর্ধমানের রায়নার দরিয়াপুরে। এই ঘটনায় দু’জনকে আটকও করা হয়েছে। একজন সব্যসাচী মণ্ডলের রাঁধুনি, অন্যজন গাড়ির চালক।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, শুক্রবারই সব্যসাচী মণ্ডল এক বন্ধুকে নিয়ে গ্রামের বাড়ি দরিয়াপুরে যান। রাতে বাড়ির ছাদে রান্না হচ্ছিল। অভিযোগ, সেই সময় সব্যসাচী মণ্ডলের গাড়ির চালক তাঁকে ছাদ থেকে নীচে নিয়ে যায় কেউ ডাকছে বলে। বেশ কিছুক্ষণ কেটে গেলেও সব্যসাচী না থাকায় নীচে যান তাঁর বন্ধু রাজবীর সিং ও রাঁধুনি পার্থ সান্যাল। তাঁরাই সব্যসাচীকে রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখেন।
এরপরই শুরু হয় হইচই। চিৎকার চেঁচামেচি শুনে ছুটে আসেন স্থানীয়রাও। ধরাধরি করে সকলে মিলে সব্যসাচীকে বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। তবে শেষ রক্ষা হয়নি। কর্তব্যরত চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এই ঘটনায় সব্যসাচী মণ্ডলের গাড়ির চালক ও রাঁধুনিকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ।
ঘটনার দিন সব্যসাচী মণ্ডলের সঙ্গে দরিয়াপুরে ছিলেন তাঁর বন্ধু রাজবীর সিং। রাজবীরের বক্তব্য, “আমার বন্ধু সব্যসাচী। শুক্রবার সন্ধ্যায় আমরা ছাদে রান্না করছিলাম। চিকেন রান্না হচ্ছিল। হঠাৎই ওর গাড়ির যিনি চালক, তিনি এসে বলেন একজন অফিসার আপনাকে ডাকছে। সব্যসাচী নীচে নামার কিছুক্ষণের মধ্যেই আওয়াজ শুনতে পাই, রাজবীর রাজবীর করে চিৎকার করছে। শুনেই আমি ছুটে যাই। গিয়ে দেখি গুলিও চালাচ্ছে, ছুরি দিয়েও কোপাচ্ছে। আমি ওদের ধাক্কা মেরে সরিয়ে দিই। আমি একজনের হাতে থাকা ছুরি চেপে ধরতেই ওরাও পাল্টা টান মারে। আমার হাতও সঙ্গে সঙ্গে রক্তাক্ত হয়ে যায়। কেটে যায়।” দরিয়াপুরেই থাকেন সব্যসাচীর এই বন্ধু। তাঁর কথায়, হাওড়ার ওই ব্যবসায়ী গ্রামের বাড়িতে বেড়াতে এসেছিলেন পুজোর পর।
অন্যদিকে সব্যসাচীর রাঁধুনি পার্থ সান্যালের কথায়, “দেশের বাড়ি থেকে এসেছিলেনে উনি। কথা ছিল একদিন থেকে পরদিন সকালেই চলে যাবেন। সেদিন ঠিক হয় ছাদে রান্না হবে। আমি রান্না করছিলাম ছাদে। আচমকা এরকম ঘটনা ঘটে যায়। আততায়ীদের দলে তিন চারজন ছিল। আমরা তো ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর চিৎকার শুনে নীচে নামি। এসে দেখি ওই অবস্থা!” এই ঘটনায় কাউকেই সন্দেহ তালিকা থেকে দূরে রাখছে না পুলিশ। সবদিক খোলা রেখেই তদন্ত চলছে।
আরও পড়ুন: TMC Leader Murder Case: চঞ্চল-খুনে গ্রেফতার তৃণমূল নিয়োজিত আরও ২ শার্প শ্যুটার!