Park Circus Firing: পাত্রপক্ষের আসার কথা ছিল বাড়িতে, একটা গুলিতে থেমে গেল রিমার স্বপ্ন
Howrah : রিমার বিয়ে ঠিক হয়ে গিয়েছিল কিছুদিন আগেই। পাত্র পক্ষের লোকেরা শুক্রবার তাঁদের বাড়িতেও আসার কথা ছিল। কিন্তু এরই মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এল দাসনগরের বাড়িতে।
হাওড়া : যে বাড়িতে কিছুদিন পর সানাইয়ের সুর শোনার কথা, সেই বাড়িতে আজ শুধু কান্না আর হাহাকার। স্বজন হারানোর আর্তনাদ। হাওড়ার দাসনগরে ফকির মিস্তিরি লেনের ওই বাড়িটিকে যেন গিলে খাচ্ছে অন্ধকার। বুক ফাটা কান্না। মা, বাবা, ভাইয়ের সঙ্গে এই বাড়িতেই থাকতেন রিমা সিং। পেশায় ফিজিওথেরাপিস্ট। রিমার বিয়ে ঠিক হয়ে গিয়েছিল কিছুদিন আগেই। পাত্র পক্ষের লোকেরা শুক্রবার তাঁদের বাড়িতেও আসার কথা ছিল। কিন্তু এরই মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এল দাসনগরের বাড়িতে।
রিমার বাবার একটি কারখানা ছিল। সেটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার পর সংসারের হাল ধরেছিল রিমা। ফিজিওথেরাপি করেই সংসারের অনেকটা হাল ধরেছিলেন তিনি। শুক্রবার সেই কাজেই বেরিয়েছিলেন বাড়ি থেকে। কাজ থেকে ফিরে, তারপর পাত্রপক্ষের বাড়ির লোকেদের সঙ্গে দেখা করার কথা ছিল। কিন্তু এক লহমায় সব শেষ হয়ে গেল। ঘটনার কথা প্রথম তাঁরা জানতে পারেন টিভি চ্যানেল থেকেই। এরপরই কানে আসে, পুলিশকর্মীর গুলিতে নিহতের নাম। রিমা সিং।
খবর শুনে মাথায় বাজ পড়ার মতো অবস্থা হয় রিমার হবু স্বামী প্রবীর রায়ের। সংবাদমাধ্যমে খবর শোনা মাত্র আর দেরি না করে ছুটে আসেন রিমার বাড়িতে। এমন ভয়ঙ্কর ঘটনা যে ঘটে গিয়েছে রিমার সঙ্গে, তা তখনও বিশ্বাস করতে পারছিলেন না তাঁরা। মনের মধ্যে ক্ষীণ আশা নিয়ে রিমার নম্বরে ফোন করেন তাঁর হবু স্বামী। ফোন ধরে বেনিয়াপুকুর থানার এক পুলিশকর্মী। ঘটনার কথা জানায়। ডেকে পাঠায়। নাহ, সত্যিই রিমা আর নেই। কথাটা ভেবেই বুকে পাথর ভেঙে পড়ে তাঁদের।
মেয়েকে হারিয়ে রিমার মা’র দুই চোখ এখন অন্ধকার। জানিয়েছেন, “ওর বাবা এখন টুকটাক কিছু কাজ করে। ও কিছু সাহায্য করত সংসার চালাতে।” মেয়ের বিষয়ে কথা বলতে গিয়ে নিমেষে চোখ ছলছল করে ওঠে রিমার মায়ের। বললেন, “আমি আর কী চাইব। চাইলেও তো আর মেয়েকে ফিরে পাব না।”