করোনা জয় করে অ্যাম্বুল্যান্স চালাচ্ছেন মহিলা, কুর্নিশ নেটিজেনদের

"একজন সেচ্ছাসেবী সংস্থার সাধারণ সম্পাদকের কাছে পরিষেবা সংক্রান্ত ক্রমাগত ফোন আসছে। কিন্তু তিনি পরিচালনার কাজ করবেন নাকি অ্যাম্বুল্যান্স চালাবেন! এতে দুটো পরিষেবাই তো বিঘ্নিত হবে। যেহেতু আমার ২০ বছরের বেশি সময় ধরে গাড়ি চালানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে তাই সিদ্ধান্ত নিলাম আমিই অ্যাম্বুল্যান্স চালাব।''

করোনা জয় করে অ্যাম্বুল্যান্স চালাচ্ছেন মহিলা, কুর্নিশ নেটিজেনদের
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: May 25, 2021 | 4:33 PM

জলপাইগুড়ি: ‘সাব্বাশ দেবশ্রী দেবী! আপনিই প্রকৃত কোভিড যোদ্ধা।’ ‘নারীশক্তির জ্বলন্ত উদাহরণ আপনি,’ সোশ্যাল মিডিয়া ছেয়ে যাচ্ছে এমনই সব পোস্টে। সৌজন্যে জলপাইগুড়ি শহরের বাসিন্দা দেবশ্রী ভট্টাচার্য। করোনা আক্রান্তদের হাসপাতালে পৌঁছে দিতে অ্যাম্বুল্যান্সের স্টিয়ারিং ধরলেন পেশায় বিউটিশিয়ান এই মহিলা। তাঁর এই সাহসী পদক্ষেপে কুর্নিশ জানাচ্ছেন জলপাইগুড়ির মানুষ।

জেলায় বাড়ছে করোনা সংক্রমণ। বাড়ছে অ্যাম্বুল্যান্সের চাহিদা। কিন্তু চালক পাওয়া যাচ্ছে না। অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা যাতে বন্ধ না হয় তাই তিনি নিজেই স্টিয়ারিং ধরবেব। এই মর্মে ফেসবুকে একটি পোস্ট করেছিলেন গ্রীন জলপাইগুড়ি সেচ্ছাসেবী সংস্থার সাধারণ সম্পাদক। তাঁর সেই পোস্ট দেখে কোভিড আক্রান্তদের পাশে দাঁড়াতে এগিয়ে এলেন এক করোনা-জয়ী মহিলা। নাম দেবশ্রী ভট্টাচার্য।

জলপাইগুড়ি শহরের গ্রীন জলপাইগুড়ি নামে একটি সেচ্ছাসেবী সংস্থা করোনা রোগীদের জন্য বিনামূল্যে টোটো অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবা চালু করে নজির সৃষ্টি করেছে। পাশাপাশি সম্প্রতি তারা একটি অ্যাম্বুল্যান্স পরিষেবাও শুরু করেছে। কিন্তু গত দু’দিন আগে তাঁদের অ্যাম্বুল্যান্স চালকের শরীরে করোনার উপসর্গ দেখা দেয়। এই অবস্থায় বন্ধ হয়ে যায় পরিষেবা। এদিকে পরিষেবা পেতে প্রচুর ফোন আসতে থাকে সংস্থার কাছে। এই অবস্থায় সংস্থার পক্ষ থেকে সাধারণ সম্পাদক অঙ্কুর দাস ফেসবুক পোস্ট করেন তিনি নিজেই অ্যাম্বুল্যান্স চালাবেন।

তাঁর এই পোস্ট দেখে এগিয়ে আসেন জলপাইগুড়ি শহরের দেবশ্রী ভট্টাচার্য নামে এক বিউটিশিয়ান। তিনি দায়িত্ব নেন এম্বুল্যান্সের স্টিয়ারিং ধরার। মঙ্গলবার সংস্থার পক্ষ থেকে দেবশ্রী দেবীর হাতে অ্যাম্বুল্যান্সের চাবি তুলে দেওয়া হয়।

সদ্য করোনা থেকে সেরে ওঠা দেবশ্রী জানান, এখন লকডাউন। তাই তাঁর বিউটি পার্লার বন্ধ। তাই এখন তিনি বাড়িতেই রয়েছেন। তিনি বলেন, “একজন সেচ্ছাসেবী সংস্থার সাধারণ সম্পাদকের কাছে পরিষেবা সংক্রান্ত ক্রমাগত ফোন আসছে। কিন্তু তিনি পরিচালনার কাজ করবেন নাকি অ্যাম্বুল্যান্স চালাবেন! এতে দুটো পরিষেবাই তো বিঘ্নিত হবে। যেহেতু আমার ২০ বছরের বেশি সময় ধরে গাড়ি চালানোর অভিজ্ঞতা রয়েছে তাই সিদ্ধান্ত নিলাম আমিই অ্যাম্বুল্যান্স চালাব।” তিনি এ নিয়ে স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগ করলে তারা সানন্দে রাজি হয়। তার পর মঙ্গলবার থেকেই করোনা রোগীদের জন্য অ্যাম্বুল্যান্স চালানো শুরু করলেন দেবশ্রী দেবী।

স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সম্পাদক অঙ্কুর দাস বলেন, “এভাবে একজন মহিলা এগিয়ে আসবেন তা স্বপ্নেও ভাবতে পারিনি।” সংস্থার সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা করে দেবশ্রী ভট্টাচার্যের হাতে এম্বুল্যান্সের চাবি তুলে দিয়েছেন তিনি।

আরও পড়ুন: ‘আমাদের তো শুধু চুড়া গুড় দিচ্ছে, দিদি অনেক ভাল ব্যবস্থা করেছেন’, মমতার প্রশংসায় ওড়িশার তালসারির মানুষ