চাকরির নামে ৮৩ লক্ষ টাকা প্রতারণায় অভিযুক্ত তৃণমূল বিধায়ক!

প্রাথমিক শিক্ষক এবং জলসম্পদ দফতরে চাকরি দেওয়ার নামে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগ ধুপগুড়ি বিধায়ক (MLA)-এর বিরুদ্ধে

চাকরির নামে ৮৩ লক্ষ টাকা প্রতারণায় অভিযুক্ত তৃণমূল বিধায়ক!
ফাইল ফটো
Follow Us:
| Updated on: Feb 21, 2021 | 10:31 PM

জলপাইগুড়ি: সামনে একুশের ভোট। নির্বাচনী প্রচারের আবহেই তৃণমূল বিধায়কের (TMC MLA) বিরুদ্ধে চাকরি দেওয়ার নামে আর্থিক প্রতারণার অভিযোগে উত্তাল ধূপগুড়ি। রবিবার সন্ধ্যায় ধূপগুড়ির বিধায়ক মিতালি রায়ের (Mitali Roy) কুশপুতুল দাহ করে বিক্ষোভ দেখাল এসএফআই (SFI) ও ডিওয়াইএফআই (DYFI)। অন্যদিকে বিজেপি (BJP)’র তরফে শুরু হয় শহরজুড়ে ধিক্কার মিছিল। ওঠে বিধায়ককে গ্রেফতারের দাবি। রবিবার সন্ধ্যায় দুই রাজনৈতিক দলের বিক্ষোভ কর্মসূচিতে কার্যত যানজটে আটকে যায় ধূপগুড়ি।

ঠিক কী অভিযোগ তৃণমূল বিধায়কের বিরুদ্ধে?

২০১৮ সালের অক্টোবরে প্রাথমিক শিক্ষক ও জলসম্পদ বিভাগে চাকরি দেওয়ার নামে মোট ১৩ জনের কাছ থেকে মোট ৮৩ লক্ষ টাকা ঘুষ নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে মিতালি রায়ের বিরুদ্ধে। এমনকী তার মধ্যে রয়েছেন তৃণমূলের প্রাক্তন পঞ্চায়েত প্রধানও। অভিযোগকারীদের দাবি, টাকা দেওয়ার পর তাঁদের নিয়ে যাওয়া হয় কলকাতায়। বিকাশ ভবন এবং জলসম্পদ ভবনে তাঁদের ইন্টারভিউও নেওয়া হয়। এরপর ২০১৯ সালের জুন মাসে কয়েকজনের হাতে তুলে দেওয়া হয় প্রাথমিক স্কুলে শিক্ষকতার নিয়োগপত্র। রাজ্য প্রাথমিক শিক্ষা পর্ষদের সহকারি অধিকর্তার স্বাক্ষর থাকা সেই নিয়োগপত্র ভুয়ো বলে ধরে ফেলেন চাকরিপ্রার্থীরা। তারপর থেকেই টাকা ফেরতের দাবিতে বিধায়কের বাড়িতে যাতায়াত শুরু করেন তাঁরা।

আরও পড়ুন: ৬৬ জন মহিলাকে কপালে বন্দুক ঠেকিয়ে ‘ধর্ষণ’, কাঠগড়ায় হুগলির ফ্লিপকার্ট ডেলিভারি বয়

অভিযোগ, টাকা ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও গত এক বছর ধরে তাঁদের বারবার ঘুরিয়েছেন মিতালি রায়। ২০২০ সালের এপ্রিল মাসে কয়েকজনকে চেকের মাধ্যমে টাকা ফেরত দিতে শুরু করেন বিধায়কের স্বামী। কিন্তু প্রতারিতদের দাবি, সেই চেক জমা দেওয়ার পরই বাউন্স করেছে। এরপর টাকা ফেরত চেয়ে তৃণমূল হাই কমান্ডকে প্রতারিতরা চিঠি দিয়েছেন বলে খবর। এই প্রেক্ষিতে বিধায়ককে গ্রেফতারির দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠল ধূপগুড়ি।

ডিওয়াইএফআই জলপাইগুড়ি জেলা সভাপতি নুর আলমের দাবি, অবিলম্বে বিধায়কের পদত্যাগ এবং গ্রেফতারির দাবি জানাচ্ছি আমরা। স্থানীয় বিজেপি নেতা চন্দন দত্ত বলেন, ‘তৃণমূলের সব নেতারাই দুর্নীতিগ্রস্ত। প্রাইমারি শিক্ষক থেকে বন সহায়ক পদ, সর্বত্রই ঘুষ নিয়ে চাকরি দিয়েছেন তাঁরা। এবার প্রকাশ্যে এল তৃণমূল বিধায়ক ঘুষ নিয়েও চাকরি দেননি। অবিলম্বে ওনাকে গ্রেফতার করা হোক।’

আরও পড়ুন: কবে ভোট, কে প্রার্থী কিচ্ছু জানা নেই, পুরুলিয়ায় বিজেপি প্রার্থীর ‘সমর্থনে’ ব্যানার

চাকরি প্রার্থীদের দাবি, ইতিমধ্যেই তাঁরা টাকা ফেরত চেয়ে চিঠি দিয়েছেন জেলা তৃণমূল সভাপতি কৃষ্ণকুমার কল্যাণী এবং জেলায় দলের সাংগঠনিক কাজকর্ম দেখভালের দ্বায়িত্বে থাকা নেতা ওমপ্রকাশ মিশ্রকে। এদিকে এই পুরো বিষয়টি হাস্যকর বলে উড়িয়ে দিয়েছেন অভিযুক্ত বিধায়ক। তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা এই গুরুতর অভিযোগ নিয়ে মিতালী রায় বলেন,’হাস্যকর এবং অযৌক্তিক অভিযোগ। যতদূর জানি, টেট, ইন্টারভিউ এবং কাউন্সেলিং এর মাধ্যমে প্রাথমিক শিক্ষক নিয়োগ হয়। পুরো প্রক্রিয়ায় কোন বিধায়কের হাত থাকে বলে আমার অন্তত জানা নেই।’ তাঁর কথায়, ‘আমি মানুষের মধ্যেই থাকি। এভাবে চক্রান্ত করে আমাকে বদনাম করা যাবে না।’