Durga Puja: অষ্টমীর রাতে এখনও ‘নরবলি’ হয় এই পুজোয়, আমিষ ভোগেই ‘তুষ্ট’ হন দেবী
Jalpaiguri: কথিত আছে, এককালে এই রাজবাড়ির পুজোয় অষ্টমীর রাতে নরবলি দেওয়া হত। পুরনো দিনের সেই রীতি-রেওয়াজ আজও অক্ষরে অক্ষরে পালন করা হয়। নরবলিও হয়। তবে রক্ত-মাংসের মানুষ নয়। চালের গুড়ো দিয়ে মানুষের মতো একটি অবয়ব বানানো হয়।
জলপাইগুড়ি: ৫০০ বছরের বেশি পুরনো এই পুজো। জলপাইগুড়ির বৈকন্ঠপুর রাজবাড়ির এই পুজো এবার ৫১৪ বছরে পা রাখল। কথিত আছে, এককালে এই রাজবাড়ির পুজোয় অষ্টমীর রাতে নরবলি দেওয়া হত। পুরনো দিনের সেই রীতি-রেওয়াজ আজও অক্ষরে অক্ষরে পালন করা হয়। নরবলিও হয়। তবে রক্ত-মাংসের মানুষ নয়। চালের গুড়ো দিয়ে মানুষের মতো একটি অবয়ব বানানো হয়। তারপর কুশ দিয়ে সেই প্রতীকী নরবলি হয় অষ্টমীর রাতে। এবার সপ্তমীর রাতেই অষ্টমী তিথি শুরু হয়ে যাচ্ছে। তাই আজ রাতেই হবে সেই নরবলির পুজোর আয়োজন।
সেই প্রাচীন কাল থেকে বৈকন্ঠপুর রাজবাড়ির দুর্গাপুজো হয়ে আসছে কালিকা পুরান মতে। এখানে দেবীকে নিবেদন করা হয় আমিষ ভোগ। প্রতিদিনই আমিষ ভোগ দেওয়া হয় দেবী দুর্গাকে। পাঁচরকমের মাছ, হাসের ডিম,পাঁঠার মাংস… সবই দেওয়া হয় দেবীর ভোগে। দীর্ঘদিন ধরে চলে আসা নিয়ম মেনে সপ্তমীর সকালে রাজবাড়ির বেলতলায় নবপত্রিকার স্নান করিয়ে শুরু হয় সপ্তমীর পুজো।
৫০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে চলে আসা রীতি মেনে আজ রাতেও বৈকন্ঠপুর রাজবাড়িতে হবে নরবলির পুজো। অর্ধরাত্রির পুজো বলা হয় এটিকে। এই অর্ধরাত্রির পুজো এই রাজবাড়ির দুর্গাপুজোর বিশেষ আকর্ষণ। প্রতি বছর আশপাশের এলাকার বহু দর্শনার্থী এখানে আসেন দেবীর অর্ধরাত্রির পুজো বা নরবলির পুজো দেখতে। আজও সকাল থেকে ভিড় জমিয়েছেন বহু মানুষ। সপ্তমীর সকাল থেকে নিষ্ঠাভরে চলছে দেবীর আরাধনা।
ছোটবেলা থেকে এই রাজবাড়ির পুজো দেখতে আসেন সমাপ্তি চক্রবর্তী। আজও এসেছেন। নবপত্রিকা স্নান দেখতে সকাল সকাল রাজবাড়িতে ছুটে এসেছেন তিনি।
অতীতের বহু ঘটনার, বহু ইতিহাসের সাক্ষ্য বহন করে চলছে এই রাজবাড়ি। রাজপাট চুকে গিয়েছে অনেকদিন, কিন্তু আশপাশের মানুষের কাছে এই রাজবাড়ির বেশ নামডাক আছে। সেই রাজ পরিবারের সদস্য লিন্ডা বসু জানাচ্ছেন, অতীতের সব রীতি-রেওয়াজ, নিয়ম-নিষ্ঠা এখনও অক্ষরে অক্ষরে মেনে চলা হয় দেবী দুর্গার পুজোয়। এবারও তার ব্যতিক্রম হয়নি।
এর রাজবাড়ির পুরোহিত শিবু ঘোষাল জানাচ্ছেন, এখন নরবলি সেই অর্থে না হলেও, নিয়ম মেনে চালের গুড়ো দিয়ে মানুষের মতো অবয়ব বানিয়ে সেটি বলি দেওয়া হয়। এছাড়া এই রাতে আটটি পায়রার বলিও দেওয়া হয়। এই অর্ধরাত্রির পুজোর সময় রাজপরিবারের সদস্যরা ছাড়া, বাইরের কাউকে থাকতে দেওয়া হয় না।