Blood Donor: রক্ত না দিলে হতে পারত প্রাণসংশয়, পুলিশের তৎপরতায় প্রাণে বাঁচলেন জামিলা বিবি
Blood Donor: চিকিৎসক জানিয়ে দেন মহিলা ক্রমেই রক্তশূন্য হয়ে পড়ছেন। অবিলম্বে তাঁকে রক্ত না দেওয়া হলে সমস্যা আরও জটিল হতে পারে বলে জানিয়ে দেন চিকিৎসক।
জলপাইগুড়ি: এক ইউনিট রক্তের জন্য কার্যত প্রাণ বাঁচানোই কঠিন হয়ে পড়েছিল। অবশেষে পুলিশ সুপারের তৎপরতায় প্রাণে বাঁচলেন জামিলা বিবি। জটিল রোগে আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসার জন্য এক ইউনিট A+ রক্তের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। বহু জায়গায় অনুরোধ করেও রক্ত পাচ্ছিলেন না এই দ্ররিদ্র পরিবারের রোগী। খবর যায়, জলপাইগুড়ি পুলিশ সুপার উমেশ খান্ডবহালের কাছে। সময় নষ্ট না করে সঙ্গে সঙ্গে ডোনার জোগাড় করার নির্দেশ দেন পুলিশকর্তা। নির্দেশ পেয়ে এক সিভিক ভলান্টিয়ার রক্ত দিতে রাজি হন। ডোনার নিয়ে ব্লাড ব্যাঙ্কে ছোটেন পুলিশ আধিকারিক। রক্তদান করেন। পুলিশ কর্তার তৎপরতায় প্রাণে বাঁচেন ওই মহিলা।
জানা গিয়েছে, জলপাইগুড়ি রাজগঞ্জ ব্লকের বাসিন্দা বছর ৫০-এর জামিলা খাতুন। দীর্ঘদিন ধরে কিডনির জটিল রোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন তিনি। বর্তমানে তিনি জলপাইগুড়ি মেডিক্যাল কলেজে চিকিৎসাধীন।
গত বৃহস্পতিবার বিভিন্ন পরীক্ষা নিরিক্ষার পর চিকিৎসক জানিয়ে দেন মহিলা ক্রমেই রক্তশূন্য হয়ে পড়ছেন। অবিলম্বে তাঁকে রক্ত না দেওয়া হলে সমস্যা আরও জটিল হতে পারে বলে জানিয়ে দেন চিকিৎসক। চিকিৎসকের কথা শুনে কার্যত কিংকর্তব্যবিমূঢ় হয়ে পড়েন ওই মহিলার পরিবারের সদস্যরা। এক বোতল A+ রক্তের জন্য বিভিন্ন জায়গায় আকুতি মিনতি করতে থাকেন তাঁর ছেলে নুরজামাল। কিন্তু কোথাও কোনও ব্যবস্থা হচ্ছিল না। অবশেষে তিনি যোগাযোগ করেন হুমাইপুর প্রকাশ ফাউন্ডেশন নামে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের জলপাইগুড়ি জেলা সম্পাদক নব্যেন্দু মৌলিকের সঙ্গে।
খবর পেয়ে, নব্যেন্দু বাবু সঙ্গে সঙ্গে এক ইউনিট A+ রক্ত চেয়ে হোয়াটসঅ্যাপে একটি ব্রডকাস্ট মেসেজ ছেড়ে দেন। সেই মেসেজ গিয়ে পৌঁছয় জলপাইগুড়ি জেলার পুলিশ সুপার উমেশ খান্ডবাহালের কাছে। তিনি মেসেজটি দেখা মাত্রই জেলা পুলিশের রিজার্ভ অফিসার অখিল চন্দ্র রায়কে নির্দেশ দেন দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে।
নির্দেশ পেয়ে কিছুক্ষণের মধ্যেই কোতোয়ালি থানার সিভিক ভলেন্টিয়ার সুনীল রায়কে নিয়ে ব্লাড ব্যাঙ্কে যান পুলিশ লাইনের রিজার্ভ অফিসার অখিলচন্দ্র রায়। এরপর সুনীল বাবু রক্তদান করেন। জামিলা বিবির প্রাণ বাঁচে সেই রক্তেই। তাঁর ছেলে নুরজামাল বলেন, আমি আমার পরিচিত অনেক জায়গায় যোগাযোগ করেছিলাম। কিন্তু কোনও জায়গা থেকে রক্ত পাচ্ছিলাম না। এরপর আমি নব্যেন্দু বাবুর সঙ্গে যোগাযোগ করি। উনি বিভিন্ন একজন সিভিক পুলিশ এসে আমার মাকে রক্ত দেওয়ার ব্যবস্থা করেন।
নব্যেন্দু মৌলিক বলেন, একজন পুলিশ কর্তার অনেক কাজ থাকে। কিন্তু সব কাজ বাদ দিয়ে উনি যেভাবে এই মুমূর্ষু রোগীর পাশে দাঁড়ালেন, তা দেখে সত্যিই আমরা অভিভূত। ওঁকে আমাদের সংগঠনের পক্ষ থেকে ধন্যবাদ জানাই।
পুলিশ সুপার উমেশ খান্ডবাহালে বলেন, ‘অসহায় মানুষের পাশে দাঁড়ানো পুলিশের অন্যতম কাজ। মেসেজ পাওয়া মাত্র আমি সেটাই করার চেষ্টা করেছি। যে কোনও অসহায় মানুষ যদি আমার কাছে সাহায্য চায়। তবে আমি আমার সাধ্যমতো নিশ্চয় চেষ্টা করব।’