Snake Bite: ছুটতে ছুটতে হাসপাতালে পৌঁছন যুবক, হাতে ধরা বস্তা… বস্তা খুলতেই চোখ কপালে উঠল ডাক্তারের
Moynaguri: সাপটির প্রাথমিক চিকিৎসার পর বনদফতরের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
জলপাইগুড়ি: ভরা বর্ষা। খালবিল, নদীনালা সবই টইটম্বুর। গত কয়েকদিন ধরে মাছ ধরার হিড়িক পড়েছে জলপাইগুড়ির বিভিন্ন জায়গায়। পিলপিল করে জমা জলে ঘুরে বেড়াচ্ছে নানা প্রজাতির মাছ। একইসঙ্গে সেই জলেই যে ওৎ পেতে রয়েছে বিপদও তা বুঝতে পারেননি ময়নাগুড়ির পানবাড়ি এলাকার এক যুবক। বৃহস্পতিবার রাতে মাছ ধরতে গিয়েছিলেন স্থানীয় পুকুরে। সে সময় তুমুল বৃষ্টি। ছাতা মাথায় দিয়ে মাছ ধরছিলেন তিনি। হঠাৎই কী যেন পায়ে কামড় মেরে ধরে। সারা শরীর থরথরিয়ে ওঠে তাঁর। তাকিয়ে দেখেন জলের মধ্যেই কিলবিল করছে একটা সাপ। গ্রামগঞ্জের ছেলে, তার উপর আবার মাছ ধরাই পেশা, সাহস একটু বেশিই। তাই খপাৎ করে ধরে ফেলেন সাপটিকে। পাশে রাখা বস্তায় ভরে ফেলেন সেটি। এরপর কয়েকজনকে হাঁক পেড়ে সোজা হাজির হন জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে। বস্তা খুলতেই চোখ ছানাবড়া ডাক্তারদের।
সাধারণত সাপে কাটা রোগীকে চিকিৎসা করতে অনেকটাই সময় নষ্ট হয়। তার অন্যতম কারণ, কী সাপ, কোন প্রজাতি তা বলে উঠতে পারেন না দংশিতরা। আর ডাক্তারবাবুরাও বুঝতে পারেন না ঠিক কোন চিকিৎসা প্রয়োজন। মৎস্যজীবী যুবকের সে অভিজ্ঞতা রয়েছে। তাই তিনি বুদ্ধি করে সাপটিকে সঙ্গে নিয়েই হাসপাতালে যান। কিন্তু তাতেও সমস্যা মেটেনি। কারণ, যে সাপটি তাঁকে দংশন করে, সেটি খুব একটা পরিচিত নয়। এদিকে ততক্ষণে হইচই শুরু হয়ে গিয়েছে হাসপাতালের ভিতর।
এরপর খবর যায় এক স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের কাছে। তাদের হস্তক্ষেপেই আশার আলো দেখা যায়। জানা যায়, সাপটি অতি বিরল প্রজাতির ইন্দোনেশিয়ান পিট ভাইপার। সাপ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য পেয়ে এরপরই চিকিৎসা শুরু করেন ডাক্তাররা। প্রাণে বাঁচেন ওই যুবকও। ওই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের তরফে পরিবেশ কর্মী অঙ্কুর দাস বলেন, “রাত সওয়া ১১টা নাগাদ জলপাইগুড়ি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল থেকে একটা ফোন আসে। বলা হয় এক যুবককে সাপ কামড়েছে। ওই যুবক সাপটিকে নিয়েও এসেছে। কিন্তু কী সাপ সেটি না জানার কারণে যথাযথ চিকিৎসা করা যাচ্ছে না। সেই সময় মুষলধারে বৃষ্টি পড়ছিল। সেই বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে আমরা হাসপাতালে যাই। বস্তাবন্দি সাপটিকে দেখতে পাই। সেটিকে আমরা বাইরে নিয়ে এসে পরীক্ষানিরীক্ষা করি। জানতে পারি এর নাম ইন্দোনেশিয়ান পিট ভাইপার।” অঙ্কুরবাবুই জানান, ভারতবর্ষে এই সাপ বিরল। একইসঙ্গে জানান, এই মুহূর্তে রোগী বিপন্মুক্ত আছেন। সাপটির সামান্য আঘাত লেগেছিল। বনদফতরের আধিকারিকদের হস্তক্ষেপে সে সমস্যাও মিটেছে। সাপটির প্রাথমিক চিকিৎসার পর বনদফতরের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।