অক্সিজেনের কালোবাজারি রুখতে তৎপর প্রশাসন, শহর জুড়ে জেলা পুলিশ ও ড্রাগ কন্ট্রোল ব্যুরোর যৌথ অভিযান

পুলিশের গোপন সূত্রে খবর, এই এলাকায় অক্সিজেনের কালোবাজারি চলছে। এ দিন, বারাসাত জেলা পুলিশের ডিএসপি জেলা ইনফসমেন্ট ব্রাঞ্চের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা রোহেদ শেইখ ও জেলা ড্রাগ কন্ট্রোলের আধিকারিক অনুমেষ সরকারের নেতৃত্বে এই অভিযান চলে।

অক্সিজেনের কালোবাজারি রুখতে তৎপর প্রশাসন, শহর জুড়ে জেলা পুলিশ ও ড্রাগ কন্ট্রোল ব্যুরোর যৌথ অভিযান
ফাইল চিত্র।
Follow Us:
| Updated on: May 10, 2021 | 6:34 PM

উত্তর ২৪ পরগনা: করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ে আকাল দেখা দিয়েছে টিকার। নেই প্রাণদায়ী অক্সিজেনও। এরমধ্যেই অবাধে চলছে মুনাফালোভী অসাধু ব্যবসায়ীদের কালোবাজারি। চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে এক একটি অক্সিজেন সিলিন্ডার (Oxygen Cylinder)। পরিস্থিতি বুঝে অক্সিজেন ডিলারদের উপর বাড়তি নজরদারির সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রশাসন। এ বার সেই নজরদারি দেখা গেল গোটা বারাসাত জুড়ে। সপ্তাহের শুরুতেই বারাসাতের সমস্ত ওষুুধে দোকানগুলিতে তল্লাশি চালিয়ে অক্সিজেন সিলিন্ডারের সমস্ত হিসেব নিকেশ খতিয়ে দেখল জেলা পুলিশ ও ড্রাগ কন্ট্রোল ব্যুরো (West Bengal Drug Control Bureau)।

বারাসাত পুলিশ সূত্রে খবর, সোমবার বারাসাত বার্মাকলোনী এলাকায় সমস্ত ওষুধের দোকানে অভিযান চালানো হয়। পুলিশের গোপন সূত্রে খবর, এই এলাকায় অক্সিজেনের কালোবাজারি চলছে। এ দিন, বারাসাত জেলা পুলিশের ডিএসপি জেলা ইনফসমেন্ট ব্রাঞ্চের অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা রোহেদ শেইখ ও জেলা ড্রাগ কন্ট্রোলের আধিকারিক অনুমেষ সরকারের নেতৃত্বে এই অভিযান চলে। বার্মা কলোনীতে,  মা মেডিকেল সেন্টার ও অক্সিজেন সাপ্লাইয়ার (oxygen Cylinder Supplier) নামের একটি ওষুধের দোকানে প্রয়োজনের অতিরিক্ত অক্সিজেন মজুত হওয়ার খবর পেয়ে সেখানে তল্লাশি চালায় পুলিশ। তদন্তকারীদের দাবি, দোকানের মালিকের বক্তব্য়ে বেশ কিছু অসঙ্গতি ধরা পড়েছে। ওই বিক্রেতা আগামিকাল মঙ্গলবার, সমস্ত প্রয়োজনীয় নথি নিয়ে নির্দিষ্ট দফতরে দেখা করতে হবে। যদিও ওই বিক্রেতার পাল্টা দাবি, তিনি যথাযথ লাইসেন্স নিয়েই অক্সিজেন সিলিন্ডার সরবরাহ করছেন। মূলত, হাবড়া হাসপাতালের মতো বড় বড় কিছু কোভিড সেন্টারে (COVID center) তাঁকে অক্সিজেন সাপ্লাই করতে হয় বলেই কিছু অতিরিক্ত সিলিন্ডার তাঁর কাছে রয়ে গিয়েছে। তবে সেইসমস্ত নথিই তাঁর কাছে আছে। প্রাপ্ত নির্দেশমতো তিনি তা জমাও দেবেন বলে জানিয়েছেন।

প্রসঙ্গত, রাজ্যে অক্সিজেনের চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে। সিলিন্ডারের সংখ্যা প্রয়োজনের তুলনায় কম। রাজ্য সরকার আগেই জানিয়েছিল, অক্সিজেনের কালোবাজারি রুখতে অডিটে জোর দেওয়া হচ্ছে। ওষুধ, অক্সিজেনের কালোবাজারি রুখতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে পুলিশ ও এনফোর্সমেন্ট বিভাগকে। তৈরি করা হয়েছে নবান্ন টাস্ক ফোর্স। আচমকা অভিযান শুরু হলে কালোবাজারি (Black Market) অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে বলে আশা করছে প্রশাসনিক মহল। স্বাস্থ্য দফতর সূত্রের খবর, রাজ্যে এখন রোজ প্রায় ৫৬০ মেট্রিক টন তরল অক্সিজেন উৎপাদিত হচ্ছে। দৈনিক চাহিদা রয়েছে ৪৭০ মেট্রিক টনের আশেপাশে। তাই কেন্দ্র যত অক্সিজেন আমদানি করবে, তার ১০% দিতে রাজ্যকে দিতে অনুরোধ করা হয়েছে। সম্প্রতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়েছেন, রাজ্যের জেলা ও মহকুমা স্তরে ১০৫টি সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে অক্সিজেন প্লান্ট বসানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এরমধ্যে দক্ষিণ দিনাজপুরের বালুরঘাট হাসপাতাল ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলার বারুইপুরে ইতিমধ্য়েই যথাক্রমে একটি ও দুটি করে মোট তিনটি প্লান্ট বসানোর প্রস্তুতি শুরু হয়ে গিয়েছে।

আরও পড়ুন: খাস নিউটাউনে বেআইনিভাবে মজুত করা হচ্ছে অক্সিজেন সিলিন্ডার! কলকাতা পুলিশের জালে গ্রেফতার ১