প্রধান নির্বাচনে বিজেপিকে সমর্থন, দল থেকে বহিষ্কৃত ৫ তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্য
TMC: সম্প্রতি চৌকি মিরদাদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের দলীয় প্রধান মাম্পি রজকের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন বিজেপির অন্য সদস্যরা। দলীয় সদস্যদের অনাস্থা প্রস্তাবে অপসারিত হন পঞ্চায়েত প্রধান।
মালদা: পঞ্চায়েত প্রধান নির্বাচনে বিজেপিকে (BJP) সমর্থন করা ও দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে তৃণমূলের (TMC) ৫ পঞ্চায়েত সদস্যকে একত্রে বহিষ্কার করল শাসক শিবির। মালদার মানিকচকের চৌকি মিরদাদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ঘটনা। যদিও অঞ্চল নেতৃত্বকে জানিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল বলে পাল্টা দাবি অপসারিত সদস্যদের।
সম্প্রতি চৌকি মিরদাদপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের দলীয় প্রধান মাম্পি রজকের বিরুদ্ধে অনাস্থা আনেন বিজেপির অন্য সদস্যরা। দলীয় সদস্যদের অনাস্থা প্রস্তাবে অপসারিত হন পঞ্চায়েত প্রধান। নতুন নির্বাচিক প্রধান হন বিজেপির সুকনি সাহা। প্রধান নির্বাচনে বিজেপির পক্ষে ভোট দেন তৃণমূলের সাজিদ শেখ, সাবিনা খাতুন, সাদেলজা খাতুন ও মহম্মদ হাসানুজ্জামান। এতেই ক্ষিপ্ত হন মানিকচকের বিধায়ক তথা ব্লক তৃণমূল কংগ্রেস সভাপতি সাবিত্রী মিত্র। ওই পাঁচ সদস্যকে সরাসরি বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত নেন তিনি। তৃণমূল বিধায়ক বলেন, “দলের নিয়ম না মেনে যাঁরা সাম্প্রদায়িক বিজেপির সঙ্গে হাত মিলিয়েছেন তাঁদের দলে রাখা যাবে না। তাই বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে। জেলা ও রাজ্য় নেতৃত্বকে এই মর্মে চিঠিও দেওয়া হয়েছে।”
বহিষ্কৃত তৃণমূল (TMC) সদস্য তথা পঞ্চায়েত উপপ্রধান সাজিদ শেখ যদিও বলেন, “অঞ্চল কমিটির সঙ্গে আলোচনা করেই এই পদক্ষেপ করা হয়েছিল। অঞ্চল সভাপতির সঙ্গে কী কথা হয়েছিল তার ভিডিয়ো রেকর্ডিংও রয়েছে।” তবে, বহিষ্কারের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “সাবিত্রী মিত্র আমাদের দলনেত্রী। আমরা যদি অন্যায় করে থাকি তাহলে বহিষ্কার করতেই পারেন। তিনি যা সিদ্ধান্ত নেবেন তা আমাদের মেনে নিতে হবে।” উল্লেখ্য, কয়েকদিন আগেই এই গ্রাম পঞ্চায়েতে প্রধান হন বিজেপির সুখানি সাহা চৌধুরী ও উপপ্রধান হন তৃণমূলের সাজিদ শেখ।
এদিকে বিষয়টিকে গুরুত্ব দিতে নারাজ বিজেপি। বিজেপির জেলা সভাপতি গোবিন্দ চন্দ্র মন্ডল বলেন, “আগের প্রধান মাম্পি রজককে পরিবর্তন করার জন্য আমাদের সংগঠনিক ভাবে সিদ্ধান্ত হয়েছিল । পঞ্চায়েতের সমস্ত সদস্যদেরও একই ইচ্ছা ছিল । শেষ পর্যন্ত আমাদের দলীয় সুপারিশে প্রধান পরিবর্তিত হয়েছেন এটা ভালো কথা।” পাশাপাশি তিনি বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেসের পঞ্চায়েত সদস্যরা কাকে ভোট দেবেন না দেবেন বা দলগতভাবে ওদের কী সিদ্ধান্ত ছিল ওই বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাই না। এটা সম্পূর্ণ দলের আভ্যন্তরীণ বিষয়।”
শুধু মানিকচকেই নয়, কালিয়াচকেও প্রকাশ্যে তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল। দলীয় সদস্যদের ডাকা অনাস্থায় সম্প্রতি অপসারিত হয়েছিলেন কালিয়াচক ২ নম্বর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি টিঙ্কুর রহমান। পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতির পদ থেকে দলীয় নেতাকে সরাতে বিজেপি ও কংগ্রেস সদস্যদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছিল তৃণমূল সদস্যদের একাংশ বলে অভিযোগ ওঠে। অপসারণ নিয়ে সরাসরি মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনের দিকে অভিযোগের আঙুল তোলেন টিঙ্কুর রহমান। অপসারিত সভাপতি বলেন, “আমি ১৫ বছর ধরে ক্ষমতায় রয়েছি। সেখানে আরেকজন উড়ে এসে জুড়ে বসেছেন। তিনি আসার পর সর্বত্র কেবল অনাস্থা দেখা দিয়েছে। প্রতিহিংসার রাজনীতি করা হচ্ছে।” এ বিষয়ে যদিও কিছুই বলতে চাননি মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন। আরও পড়ুন: ‘আমায় প্রাণে মেরে দেবে বলেছে ওরা’, দালালদের দাপাদাপি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে, সরব চিকিত্সক!