টেনে হিঁচড়ে চুলের মুঠি ধরে ঘর থেকে টেনে বার করে আনা হল বৌদিকে…তৃণমূল কর্মীর পরের কীর্তি আরও নৃশংস

Maldah: বছর উনত্রিশের ওই গৃহবধূ সোনালি রায়ে অভিযোগ, তাঁর দেওর বাপি রায় প্রায় প্রতিদিনই মত্ত অবস্থায় এসে তাঁকে মারধোর করেন।

টেনে হিঁচড়ে চুলের মুঠি ধরে ঘর থেকে টেনে বার করে আনা হল বৌদিকে...তৃণমূল কর্মীর পরের কীর্তি আরও নৃশংস
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 30, 2021 | 12:57 PM

মালদহ: চুলের মুঠি ধরে মাঝ বয়সী মহিলাকে ঘর থেকে টেনে হিঁচড়ে বার করে আনছেন এক ব্যক্তি। সম্পর্কে ওই মহিলা তাঁরই বৌদি। মেয়েকে বাঁচাতে গিয়ে আক্রান্ত হয়েছেন তাঁর মাও। রাস্তায় ফেলে তাঁকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। বর্বরতার নয়া নিদর্শন মালদা (Maldah) শহরের বুকেই। আক্রান্ত মহিলা হাসপাতালে চিকিত্সাধীন। অভিযুক্ত আবার তৃণমূল কর্মী।

রবিবার রাতে ইংরেজবাজার শহরের কৃষ্ণপল্লি বাপুজি কলোনিতে এই গৃহবধূকে মারধর করার অভিযোগ ওঠে তাঁর দেওরের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, ওই গৃহবধূকে বাঁচাতে গেলে তাঁর মাকেও মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।

বছর উনত্রিশের ওই গৃহবধূর অভিযোগ, তাঁর দেওর বাপি রায় প্রায় প্রতিদিনই মত্ত অবস্থায় এসে তাঁকে মারধোর করেন। পাশের বাড়িতেই থাকেন তাঁর বাবা-মা। তাঁদেরকেও অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন।

রবিবার রাতেও মত্ত অবস্থায় বাপি তাঁর বাড়িতে যান। তাঁকে প্রথমে গালি দেন। কথা কাটাকাটি, বচসার ফাঁকেই তাঁর চুলের মুঠি ধরে এনে হিঁচড়িয়ে রাস্তায় নিয়ে আসেন। রাস্তায় ফেলে তাঁকে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। তাঁর মা বাঁচাতে আসেন। তাঁকেও চুলের মুঠি ধরে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ।

ঘটনার সময় ওই বধূর স্বামী বাড়িতে ছিলেন না বলে দাবি। গৃহবধূর দাবি, তাঁদেরকে বাড়িতে থাকতে দিতে চান না দেওর। আর নিয়েই ঝামেলা। সেই কারণেই এই অত্যাচার বলে অভিযোগ গৃহবধূর। এই উদ্দেশ্যেই তাঁকে মারধর করে তাড়ানোর চেষ্টা করা হচ্ছে, অভিযোগ নিগৃহীতার।

স্থানীয় বাসিন্দারাও জানাচ্ছেন, পারিবারিক বিবাদ ওঁদের দীর্ঘদিনের। জমি জায়গা নিয়ে বিবাদ চলে। ঝামেলা-অশান্তি হয়। কিন্তু তা যে এই আকার নেবে, তা বুঝতে পারেননি কেউই। এক প্রতিবেশীর কথায়, “আমরা চিত্কার চেঁচামেচি শুনতে পেয়েছিলাম। রোজই প্রায় এ ধরনের ঘটনা ঘটে। তাই প্রথমটায় বিশেষ আমল দিইনি। পরে চিত্কারের মাত্রা বাড়ায় ছুটে এসে দেখি এই ঘটনা।”

আরেক স্থানীয় বাসিন্দার কথায়, “জোর জার মুলুক তাঁর! এখানেও তাই হয়েছে।” তবে প্রকাশ্যে এইভাবে কীকরে এক মহিলা এইভাবে নিগ্রহের শিকার হলেন, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তবে এই ঘটনায় স্থানীয় নেতার নাম জড়ানোয় অস্বস্তিতে পড়েছে তৃণমূল। থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। তবে এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার করা হয়নি অভিযুক্ত বাপিকে। এই প্রসঙ্গে স্থানীয় তৃণমূল নেতা বলছেন, “আপনাদের মুখে শুনলাম। কোনও মহিলা আক্রান্ত হলে দলমত নির্বিশেষে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আমাদের দলের কেউ যুক্ত থাকলে, দল তাঁকে বহিষ্কার করে দেবে। ”

এপ্রসঙ্গে স্থানীয় বিজেপি নেতা বলেন, “তৃণমূলের নেতারা কি দেখতে পাচ্ছেন না? এই ধরনের বেয়াদপদের দল থেকে বার করে দিক। দল থেকে বহিষ্কার করে দেওয়া উচিত। ওরা সমাজবিরোধী। তৃণমূলে যাঁরা সচেতন রয়েছেন, তাঁদের কাছে অনুরোধ করব এই ধরনের সমাজবিরোধীদের বার করে দেওয়া হোক। ” তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কৃষ্ণেন্দু নারায়ণ চৌধুরী অবশ্য স্পষ্ট বলে দিয়েছে, “এই ধরনের তালিবানি কাজ এখানে চলবে না। আমি ভিডিয়ো দেখে চিহ্নিত করে প্রশাসনকে বলব যথাযথ ব্যবস্থা নিতে।” আরও পড়ুন: ভর্তি লোকের মাঝেই ব্রাঞ্চে গ্রাহকের ঘৃণ্য আচরণের শিকার ব্যাঙ্ক কর্মী! অনান্য মহিলারাও স্তম্ভিত