Malda: দুর্নীতি চরম পর্যায়ে! স্বর্গ থেকে এসে ১০০ দিনের টাকা তুলছেন রমেশ-দিগেনরা

Malda: অভিযোগ, মৃত ব্যক্তির নাম ব্যবহার করা হচ্ছে একশো দিনের কাজ, উদ্যান পালন-সহ বিভিন্ন প্রকল্পে। ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খুলে এইভাবে বিভিন্ন প্রকল্প থেকে ৫০ কোটিরও বেশি টাকা লোপাট করা হয়েছে বলে অভিযোগ।

Malda: দুর্নীতি চরম পর্যায়ে! স্বর্গ থেকে এসে ১০০ দিনের টাকা তুলছেন রমেশ-দিগেনরা
কী অভিযোগ করছেন পঞ্চায়েতের বিরোধী নেতা?
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jun 01, 2023 | 7:28 PM

ইংরেজবাজার: একশো দিনের কাজের টাকা নিয়ে বিস্তর অভিযোগ আগেও উঠেছে। রাজ্য বিধানসভার বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী বার বার সরব হয়েছেন একশো দিনের কাজের টাকায় গরমিলের অভিযোগে। আর এরই মধ্যে একশো দিনের কাজ নিয়ে বেনিয়ম ও দুর্নীতির বিস্তর অভিযোগ ধরা পড়ল টিভি নাইন বাংলার ক্যামেরায়। মৃত ব্যক্তি নাকি করছেন একশো দিনের কাজ। এমনই অভিযোগ উঠে এল মালদার ইংরেজবাজারের বিনোদপুর এলাকায়। অভিযোগ, মৃত ব্যক্তির নাম ব্যবহার করা হচ্ছে একশো দিনের কাজ, উদ্যান পালন-সহ বিভিন্ন প্রকল্পে। ভুয়ো অ্যাকাউন্ট খুলে এইভাবে বিভিন্ন প্রকল্প থেকে ৫০ কোটিরও বেশি টাকা লোপাট করা হয়েছে বলে অভিযোগ।

শুধু তাই নয়, মৃত ব্যক্তির নামে কখনও কলা বাগান, কখনও লিচু বাগান করার নামেও টাকা আত্মসাৎ করার অভিযোগ উঠেছে। আরও অভিযোগ, খাতায় কলমে ১৭৭টি লিচু বাগান ও ৩৫০টি কলাবাগান দেখানো হয়েছে, যেগুলির বাস্তবে কোনও অস্তিত্ব নেই। আর এই গোটা অভিযোগ উঠেছে, সেখানকার তৃণমূল কংগ্রেস পরিচালিত পঞ্চায়েতের বিরুদ্ধে।

১০০ দিনের কাজে দেখা গিয়েছে সামিনা বিবির নাম। তাঁর মৃত্যু হয়েছে অনেকদিন আগেই,  অথচ তিনি নিয়মিত সই করেছেন। এছাড়াও রমেশ মণ্ডল নামে এক ব্যক্তি, যাঁর মৃত্যু হয়েছে ২২ বছর আগে, তিনিও পেয়েছেন কলাবাগান তৈরির বরাত। সেরকমই দিগেন মণ্ডল নামে এক ব্যক্তি ২০ বছর আগে মারা গিয়েও পেয়েছেন কলাবাগান তৈরির বরাত।

বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই সরব হয়েছেন ওই পঞ্চায়েতের বিরোধী দলনেতা শচীনচন্দ্র মণ্ডল। তাঁর বক্তব্য, এই গরমিলের বিষয়টি প্রশাসনকে জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি। তাই এখন তিনি হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছেন বিষয়টি নিয়ে। টিভি নাইন বাংলার প্রতিনিধিকে শচীনবাবু বললেন, ‘২০-২২ বছর আগে যে মানুষ মারা গিয়েছেন, তাঁর নাম ব্যবহার করা হয়েছে প্রকল্পে। তারপর সেই টাকার তছরুপ করা হয়েছে। একাধিক ক্ষেত্রে এমন হয়েছে। মরা মানুষ তো আর এমন করতে পারে না।’ আদালতে মামলা করার কারণে তাঁকে হুমকির মুখেও পড়তে হচ্ছে বলে অভিযোগ। এত হুমকির মধ্যেও অবশ্য হাল ছাড়ছেন না শচীন মণ্ডল। তিনি বলছেন, ‘যতক্ষণ নিশ্বাস আছে, ততক্ষণ আমি ছাড়ছি না। এর শেষ আমি দেখে ছাড়ব। আমি প্রধানমন্ত্রীর কাছেও অভিযোগ জানাতে চাই।’

তাঁর এই অভিযোগের বিষয়টি নিয়ে যোগাযোগ করা হয়েছিল ইংরেজবাজারের বিডিও সৌগত চৌধুরীর সঙ্গেও। তিনি অবশ্য আশ্বস্ত করে জানিয়েছেন, প্রত্যেক উপভোক্তার বাড়ি বাড়ি যাওয়া হয়েছে এবং গোটা বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। বিডিও আরও জানান, শচীনবাবুকেও ডেকে পাঠানো হয়েছিল। শচীন মণ্ডলের বেশ কিছু ক্ষেত্রে ধারণা স্পষ্ট নয়, সেই বিষয়টি তাঁকে স্পষ্ট করে বোঝানো হয়েছে।

তবে বিষয়টি নিয়ে রাজ্য সরকারকে বিঁধতে ছাড়ছে না বিজেপি। বিজেপির রাজ্য সহসভাপতি তথা সাংসদ খগেন মুর্মু হুঁশিয়ারির সুরে জানিয়েছেন, তিনি এই বিষয়টি নিয়ে সংসদে সরব হবেন। বললেন, ‘মানুষের টাকা চুরি করার অধিকার তৃণমূল কংগ্রেসের নেই।’

যদিও দলের মধ্যে কোথাও যে খামতি রয়েছে এবং দল যে শুদ্ধিকরণের পথে হাঁটছে, সেকথাও অকপটে স্বীকার করে নিচ্ছেন শাসক দলের নেতা তথা রাজ্যের মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন। তিনি বলছেন, ‘কিছু তো একটা হচ্ছে বলেই অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় গত একমাস ধরে তৃণমূলে নবজোয়ার কর্মসূচি করছেন। আমাদের মতো কিছু নেতাই দলকে ভাঙিয়ে খাচ্ছেন। সেটাকে শুদ্ধিকরণের পথেই তো আমরা হাঁটার চেষ্টা করছি।’