‘মা আমাকে আর এক বছরের বাচ্চাটাকেও ছাড়ল না ওরা, জ্বলে গেলাম’, দোলের সকালে মাকে বলা মেয়ের শেষ কথা!
মর্মান্তিক, শিউরে ওঠার মতো ঘটনা মালদার (Maldah) কালিয়াচকের (Kaliachak) মধুঘাট এলাকার।
মালদা: দোলের দিন বাবার বাড়িতে আসার কথা ছিল। কিন্তু সকালে একটা ফোন আসে। ফিসফিস করে মেয়ে বলেছিল, ‘আমাকে আর বাচ্চাকে ওরা ঘরে আটকে রেখেছে। কেরোসিন ঢেলে জ্বালিয়ে দেওয়া হচ্ছে…’ মেয়ের ফোন পেয়েই পায়ের তলার মাটি সরে গিয়েছিল বাবা-মায়ের। সময় নষ্ট না করেই রওনা দেন মেয়ের শ্বশুরবাড়ির উদ্দেশে। কিন্তু মেয়ের শ্বশুরবাড়িতে গিয়ে বাবা-মা দেখছেন, ততক্ষণে গোটা বাড়ি দাউ দাউ করে জ্বলছে। এক বছরের শিশুটিকে বার করে আনতে সক্ষম হয়েছেন প্রতিবেশীরা। কিন্তু জ্বলে গিয়েছে মেয়ের শরীর! মর্মান্তিক, শিউরে ওঠার মতো ঘটনা মালদার (Maldah) কালিয়াচকের (Kaliachak) মধুঘাট এলাকার।
২১ বছরের সঙ্গীতা চৌধুরীর সঙ্গে বিয়ে হয় মধুঘাটের বাসিন্দা সমীর মন্ডলের। সঙ্গীতার বাড়ি ইংরেজবাজারের বিয়াসপুরে। । প্রেম করে বিয়ে হলেও অশান্তি প্রথম থেকেই ছিল সংসারে। স্থানীয় একটি দোকানে কাজ করতেন সমীর। সঙ্গীতার পরিবারের অভিযোগ, নতুন করে বাড়ি তৈরি করতে চেয়েছিলেন সমীর। আর সেই টাকা সঙ্গীতাকে বাপেরবাড়ি থেকে নিয়ে আসার জন্য চাপ দিতেন তিনি। শাশুড়িও অত্যাচার করতেন বলে অভিযোগ।
বছর খানেক আগে সন্তানের জন্ম দেন সঙ্গীতা। তারপর থেকে অশান্তি আরও বেড়েছিল সংসারে। দোল উপলক্ষ্যে বাপেরবাড়ি আসার কথা ছিল সঙ্গীতার। সকালে মায়ের কাছে মোবাইলে ফোন করেন সঙ্গীতা। পরিবারের দাবি, সঙ্গীতা ফোনে জানিয়েছিলেন, “ঘরে বন্ধ করে কেরোসিন তেল ঢেলে দেওয়া হচ্ছে। আগুন লাগিয়ে দিল… মা বাঁচাও…”
কথাগুলি বলতে বলতে কান্নায় ভেঙে পড়েন সঙ্গীতার মা। তিনি বললেন, “মেয়ে শেষ মুহূর্ত পর্যন্ত আমার সঙ্গে কথা বলছিল, তবুও মেয়েকে বাঁচাতে পারেন নি।” স্থানীয়রা ছুটে গিয়ে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। শিশুটিকে উদ্ধার করা হলেও বাঁচানো যায়নি সঙ্গীতাকে।
আরও পড়ুন: রঙ খেলার পর বাড়ির সামনেই খেলছিল, মেঠো রাস্তার একটা দাগই বলে দিল তাদের ওপর হওয়া অত্যাচারের কথা!
ঘটনার তদন্ত শুরু করেছা কালিয়াচক থানার পুলিশ। গ্রেফতার করা হয়ে শাশুড়ি পুষ্প মন্ডলকে। জিজ্ঞাসাবাদ চলছে শ্বশুর কমল মন্ডলকেও। ঘটনার পর থেকে পলাতক স্বামী।