ভিডিয়ো: হাত-পা বাঁধা, অর্ধনগ্ন শরীর, ঘর ভর্তি লোকের মাঝে অন্তর্বাসে ঢুকিয়ে দেওয়া হল সেই জিনিস!

Maldah: এই ঘটনার পিছনের কথা বলতে গেলে সপ্তাহ খানেক পিছোতে হবে। গত শুক্রবার মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরে গণপিটুনিতে নিহত প্রতাপ মণ্ডল নামে এক যুূবক।

ভিডিয়ো: হাত-পা বাঁধা, অর্ধনগ্ন শরীর, ঘর ভর্তি লোকের মাঝে অন্তর্বাসে ঢুকিয়ে দেওয়া হল সেই জিনিস!
মোবাইল চোর সন্দেহে যুবককে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ (ফাইল ছবি)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Sep 15, 2021 | 3:57 PM

মালদা: কার্যত ধুঁকছে। শরীরে কোনও বস্ত্র নেই। হাত-পা শেঁকল দিয়ে বাঁধা। হাত দুটো জড়ো করে পিছনে বাঁধা। মাটিতে শুয়ে কাতরাচ্ছেন যুবক। পরনে রয়েছে কেবল একটি অন্তর্বাস। আর সেখান থেকেই এক ব্যক্তি একটি মোবাইল টেনে বার করছেন! ভিডিয়ো ভাইরাল। আপাতত দৃষ্টিতে দেখে মনে হতেই পারে, মোবাইল চোর আক্রান্ত যুবক। আর সেই কারণেই গণপ্রহারের শিকার হয়েছেন তিনি। গণপ্রহৃত হয়েছেন বটে! তবে তা স্রেফ সন্দেহের বশেই। নিজের দোষ চাপতে যাঁরা এই ভিডিয়ো বানিয়ে ভাইরাল করেছিলেন, তাঁরাই ফাঁসলেন উল্টে! ভিডিয়ো ভাইরাল হতেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করল, যে ব্যক্তিকে শিকল দিয়ে হাত পা বেঁধে আপাদমস্তক পেটানো হল, যাঁর পরনের জামাকাপড় খুলে নেওয়া হল, প্রায় অর্ধনগ্ন অবস্থা, এতকিছুর পরও কীভাবে অন্তবার্সের ভিতর অটুট থাকল মোবাইল? কেন অন্তবার্সের ফাঁক থেকে পড়ে গেল না সেটি? মালদার (Maldah) হরিশ্চন্দ্রপুরের পরিযায়ী শ্রমিক খুনের (Crime News) ঘটনার চাঞ্চল্যকর ভিডিয়ো প্রকাশ্যে আসতেই ঘটনার মোড় ঘুরল অন্য দিকে।

হাত-পা শিকল দিয়ে বেঁধে প্রায় নগ্ন করে অন্তর্বাস পরিয়ে মেঝেতে ফেলে রাখা হয়েছে পরিযায়ী শ্রমিককে। গণপ্রহারের পরেই সেই ভিডিয়ো তোলা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। মেঝেতে পড়ে বাঁচার জন্য আকুতি করছেন বছর চব্বিশের প্রতাপ মন্ডল। চাইছেন জল। কিন্তু জলের পরিবর্তে হাত-পা কেটে নেওয়ার, চোখ উপড়ে নেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন আশেপাশের লোক। ভিডিয়ো গোটা বিষয়টি দেখা গিয়েছে।

এই ঘটনার পিছনের কথা বলতে গেলে সপ্তাহ খানেক পিছোতে হবে। গত শুক্রবার মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরে গণপিটুনিতে নিহত প্রতাপ মণ্ডল নামে এক যুূবক। ছেলে যে চোর নন, তা প্রথম থেকেই দাবি করে আসছিলেন প্রতাপের পরিবারের সদস্যরা। এরই মাঝে একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়। তাতে প্রতাপকে ঠিক ওই ভাবে দেখা যাচ্ছিল। ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়ার পরই প্রতাপের বাড়ির লোক দাবি করতে থাকেন, প্রতাপকে পরিকল্পিতভাবে খুন করা হয়েছে। ১৯ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করে পরিবার। তাঁদের বক্তব্য, প্রহারকারীরা তখনও জানতেন না যে প্রতাপের মৃত্যু হবে। ফলে তাঁকে মোবাইল চোর প্রমাণ করতে পরিকল্পনা করেই এমনটা করা হয়েছিল।

পরিবারের দাবি যে অমূলক নয়, তা তদন্তে নেমে জানতে পারে পুলিশও। এত মারধর, শিকল দিয়ে হাত-পা বেঁধে রাখার পরেও তাঁর অন্তর্বাস থেকে মোবাইল কেন পড়ে গেল না, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করে। ঘটনার পরেই পুলিশ এক মহিলাকে গ্রেফতার করে হেফাজতে নেয়। জেরায় ওই মহিলা জানান, প্রতাপ ঘরে ঢুকেছিল। তবে সে মোবাইল হাতে নেওয়ার আগেই ধরে ফেলা হয়। মোবাইল চুরির উদ্দেশেই সে এসেছিল বলে দাবি করেন ওই মহিলা। আর স্রেফ সন্দেহে বশেই শুরু হয় মারধর।

তবে পুলিশের ধারণা, স্রেফ চোর সন্দেহে নয়, প্রতাপ খুনে অন্য কারণ লুকিয়ে থাকতে পারে। তবে কী সেই কারণ, তা এখনও স্পষ্ট নয় বলে পুলিশ জানিয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, এর পিছনে অন্য কারণ থাকতেও পারে। কারণ জানা গিয়েছে, প্রতাপ নিজেই ক’দিন আগে নতুন একটি মোবাইল কিনেছিলেন। বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চলছে।

দেখুন ভিডিয়ো

আরও পড়ুন: সাংসদের বাড়িতে বোমাবাজির রাতেই ফের উত্তপ্ত ভাটপাড়া! পিস্তলে বাঁটের মার, বোমায় জখম ২