Bomb Blast: সপ্তমীর পরে দশমী, পরপর ২দিন তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে বোমাবাজি, নালিশ বিজেপির

Raninagar: শনিবার, বহরমপুরে সাংবাদিক বৈঠক করে বিজেপি বিধায়ক জানান, নির্বাচনে জয়লাভের পর থেকেই এলাকায় সন্ত্রাস চালাচ্ছে তৃণমূল। শাসক শিবিরের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে বিপদের মুখে পড়ছেন এলাকাবাসী।

Bomb Blast: সপ্তমীর পরে দশমী, পরপর ২দিন তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে বোমাবাজি, নালিশ বিজেপির
বোমাবাজির পর, নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Oct 16, 2021 | 6:21 PM

মুর্শিদাবাদ: পুজোর মধ্যেই বোমার শব্দে কেঁপে উঠল ডাঙাপাড়া। সপ্তমীর সকালে বোমাবাজির পর সপ্তাহ না ঘুরতেই ফের বোমাবাজি এলাকারই তৃণমূল (TMC) কর্মীর বাড়িতে। দশমীর রাতে বোমাবাজির জেরে কার্যত উত্তপ্ত এলাকা। ঘটনায়, বিশৃঙ্খলার অভিযোগ বিজেপির। খোদ দক্ষিণ মুর্শিদাবাদ বিজেপির (BJP) সাংগঠনিক নেতা তথা বিধায়ক গৌরী শঙ্কর ঘোষ এই অভিযোগ করেন।

শনিবার, বহরমপুরে সাংবাদিক বৈঠক করে বিজেপি বিধায়ক জানান, নির্বাচনে জয়লাভের পর থেকেই এলাকায় সন্ত্রাস চালাচ্ছে তৃণমূল। শাসক শিবিরের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে বিপদের মুখে পড়ছেন এলাকাবাসী। তাঁদের প্রাণ হাতে নিয়ে চলতে হচ্ছে। একমাস আগেই রানীনগরে তৃণমূলের পঞ্চায়েত সভাপতির বাড়িতে বোমাবাজি হয়। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে প্রকাশ্যে এসেছিল তৃণমূলের গোষ্ঠীকোন্দল। ফের বোমাবাজির জেরে কার্যত আতঙ্কিত এলাকাবাসী।

বিজেপি বিধায়ক গৌরী শঙ্কর ঘোষের কথায়, “পরপর এলাকায় বোমাবাজি হয়েই চলেছে। সপ্তমীর দিন বোমাবাজির পর ফের দশমীর রাতে বোমাবাজি হয়। এমন নয় যে শাসক–বিরোধী তরজা, বরং এইসব অসামাজিক ক্রিয়াকলাপ তৃণমূল নিজেদের মধ্যেই করছে। নিজেদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের জেরে নিজেরাই বোমাবাজি করছে। বারবার এ ধরনের হামলার ঘটনায় আতঙ্কিত এলাকাবাসী। কী করে সাধারণ মানুষ নিশ্চিন্তে থাকবেন! পুলিশ ও প্রশাসন যদি প্রথম থেকে পদক্ষেপ করত, তবে আজ এই বিশৃঙ্খলা হত না।” যদিও, যে তৃণমূল কর্মীর বাড়িতে দশমীর রাতে বোমাবাজি করা হয়েছে তিনি  এ বিষয়ে কোনও মন্তব্য করতে চাননি।

স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের যদিও দাবি, এলাকায় কোনও গোষ্ঠীকোন্দল নেই। বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই এই বোমাবাজি করেছে। এরসঙ্গে দলের কোনও সম্পর্ক নেই। পুলিশ গোটা ঘটনা তদন্ত করে দেখছে।

উল্লেখ্য, মাসখানেক আগে রানীনগরে কংগ্রেস কর্মী ঝড়ু মণ্ডল সহ বেশ কয়েকজনের বাড়ি ভাঙচুর, লুটপাট, পুকুরের মাছ ধরে নেওয়ার অভিযোগ ওঠে তৃণমূলের বিরুদ্ধে । আক্রান্তদের অভিযোগ, তৃণমূলের ব্লক সভাপতির মদতেই এই অত্যাচার হয়েছে এবং লুঠপাটের ঘটনা ঘটেছে। যদিও তৃণমূল ব্লক সভাপতি অভিযোগ অস্বীকার করেন। আক্রান্তদের সঙ্গে দেখা করতে যান প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর রঞ্জন চৌধুরী। শুনতে হয় গো-ব্যাক স্লোগানও।

অন্যদিকে, তৃণমূল (TMC) পরিচালিত মুর্শিদাবাদ-জিয়াগঞ্জ পঞ্চায়েত সমিতির কর্মাধ্যক্ষ বিজলা বিবি ও ডাঙ্গাপাড়া পঞ্চায়েত সদস্য উমর শেখের বাড়িতে ভাঙচুর চালানোর অভিযোগ ওঠে জেলা তৃণমূল সভাপতি ও অঞ্চল সভাপতি আশ্রিত দুষ্কৃতীদের বিরুদ্ধে। যদিও সেই  অভিযোগ অস্বীকার  করেন জেলা তৃণমূল সভাপতি শাওনী সিংহ রায়। ঞ্চায়েত কর্মাধক্ষ্য়া বিজলা বিবি অভিযোগ করেন, তাঁর বাড়িতে দুষ্কৃতীরা চড়াও হয়ে আচমকা বোমাবাজি করে। তাঁদের দোকানঘর ভাঙচুর করে বলে অভিযোগ। এমনকী, ইট ছুড়ে বাড়ির জানলার কাচ ভেঙে দেয় দুষ্কৃতীরা। ইটের আঘাতে বিজলা বিবির ভাসুরের মাথা ফেটে যায় বলে অভিযোগ।

তৃণমূল পঞ্চায়েত কর্মাধ্যক্ষা আরও বলেন, “আমরা ২০০৮ সাল থেকে কট্টরভাবে তৃণমূল। জেলা সভাপতি ২০১৬-তে কংগ্রেস ছেড়ে তৃণমূলে আসেন। তিনি আসার পর তাঁকে সহজে কেউ মেনে নেয়নি। বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিরুদ্ধ অবস্থার মধ্যে দিয়ে তাঁকে যেতে হয়েছে। ফলে জেলা সভাপতি হওয়ার পরেও তৃণমূল নেত্রীর আক্রোশ যায়নি। সেই ব্যক্তিগত আক্রোশ থেকেই এই হামলা।”

পাল্টা, জেলা সভাপতি শাওনী সিংহ রায় সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করে জানিয়েছেন তিনি বা তাঁর কোনও অনুগামী এই হামলার সঙ্গে যুক্ত নন। ফোনে তিনি TV9 বাংলার প্রতিনিধিকে বলেন, “আমি বিধায়ক হিসেবে দশ বছর কাটিয়েছি। আগে এখানে কীভাবে অরাজকতা হয়েছে, পূ্র্বতন নেতৃত্বরা কে কী করেছেন তা এলাকার মানুষ সবাই জানেন। আমি একটা ঘটনার কথা শুনেছি, তবে কোনও বাড়ি ভেঙেছে বলে শুনিনি। বিজলাবিবির এলাকার মহিলারা বেশি আতঙ্কগ্রস্ত, কারণ তাঁরা জানেন ওই এলাকায় কী হয়ে চলেছে। তবে আমি পুলিশকে সবটাই বলেছি। পুলিশ পদক্ষেপ করবে। এক্ষেত্রে কোনও দোষীকেই রেয়াদ করা হবে না।”

শাসক শিবিরের আদি-নব্য দ্বন্দ্বে আগও কটাক্ষ হেনেছে গেরুয়া শিবির। স্থানীয় বিজেপি নেতৃত্বের তরফে বলা হয়েছে, তৃণমূল কংগ্রেস দলের কোনও আদর্শ নেই। একটাই লক্ষ্য বোম পিস্তল লাঠি নিয়ে ক্ষমতায় আসতে হবে। এই ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে নতুন সভানেত্রী এলাকায় আসার পর। তার পরেই, তৃণমূলের গোষ্ঠীতে গোষ্ঠীতে বিরোধ হচ্ছে। সরকারি সম্পত্তি আত্মসাত্‍ করার পর তা বিজেপির ঘাড়ে চাপিয়ে দিচ্ছে তৃণমূল এমনই অভিযোগ পদ্ম শিবিরের। কিন্তু, এই ধরনের কোনও ‘অগণতান্ত্রিক’ কাজে যুক্ত নয় বলেই জানিয়েছে বিজেপি।  এ বার সেই একই অনুযোগ শোনা গেল খোদ বিজেপি বিধায়কের কথায়।

আরও পড়ুন: রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কে লক্ষ টাকার গয়না! সবটাই ‘কত্তাবাবুর’, জেরায় স্বীকার শ্যামাপ্রসাদ ঘনিষ্ঠের