Municipal Elections 2022: জোটে ‘না’, তবুও হাত শিবিরের জন্য আসন ছাড়ল বামেরা
CPIM & Congress: প্রকারান্তরে সিপিএম নেতা জানিয়ে দেন, বামেদের তরফে প্রার্থী না পেলে 'ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক দলের প্রার্থীদের সমর্থন দেওয়া' হবে
মুর্শিদাবাদ: কলকাতা পুরভোটে পৃথকভাবে লড়েছিল বাম-কংগ্রেস। তাতে ফলও পেয়েছিল বামেরা। ভোট শতাংশ বেড়েছিল বাম শিবিরের। একইসঙ্গে শূন্য থেকে দ্বিতীয় স্থানে উঠে আসে তারা। রাজ্যের বাকি পুরভোটেও কোথাও বামেদের সঙ্গে কংগ্রেসের জোট হচ্ছে না। এককভাবেই লড়াই করবে বামফ্রন্ট। রবিবার দুপুরে বহরমপুরে প্রথম দফায় প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করে এ কথা জানান সিপিএমের জেলা সম্পাদক জামির মোল্লা। দলের দুই বরিষ্ঠ নেতা নৃপেন চৌধুরী ও সচ্চিদানন্দ কাণ্ডারী এবং ফরওয়ার্ড ব্লক নেতা ভবেশ চন্দ্র মণ্ডলকে পাশে বসিয়ে জামির বলেন, ‘‘আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি পুরভোটে কংগ্রেসের সঙ্গে জোট করে লড়াই করব না। আমরা জেলার সব পুরসভায় বামফ্রন্ট গতভাবে লড়াই করব।’’ তবে, তার পরেও প্রকারান্তরে সিপিএম নেতা জানিয়ে দেন, বামেদের তরফে প্রার্থী না পেলে ‘ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক দলের প্রার্থীদের সমর্থন দেওয়া’ হবে। তাহলে যে আসনগুলিতে প্রার্থী দিতে পারেনি বাম শিবির, সেগুলি কি কংগ্রেসের প্রাপ্য? সমীকরণ বলছে তাই। ত়ৃণমূল বিজেপি বাদ দিলে কেবল কংগ্রেসের জন্যই স্থান ফাঁকা থাকে।
জেলা সম্পাদক জামির মোল্লার দাবি, ‘‘যদি কোথাও আমাদের প্রার্থী না থাকে, তবে সেখানে বিজেপি এবং তৃণমূলকে হারাতে ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক দলের প্রার্থীদের সমর্থন দেওয়া হবে।’’ সেক্ষেত্রে কংগ্রেস প্রার্থীকেও সমর্থন দেওয়া হতে পারে। সিপিএম নেতৃত্ব জানিয়েছেন, তেমন হলেও কংগ্রেস প্রার্থীকেও সমর্থন দেওয়া হতে পারে। তবে ঠিক কয়টি ওয়ার্ডে তাঁরা প্রার্থী না দিয়ে ধর্মনিরপেক্ষ ও গণতান্ত্রিক দলের প্রার্থীদের সমর্থন দেবেন তা এখনও পরিষ্কার নয়। সিপিএম নেতৃত্বের দাবি, সোমবার দ্বিতীয় প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হবে। তার পরেই সব কিছু পরিষ্কার হয়ে যাবে।
কংগ্রেসের সঙ্গে এক সময় জোট করে বিধানসভা নির্বাচন লড়াই করলেও পুরভোটে সেই জোটে ‘না’ কেন? সিপিএমের জেলা সম্পাদকের মন্তব্য, ‘‘বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্য বামফ্রন্ট জোট করে লড়াই করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু স্থানীয় স্তরের নির্বাচনে জেলা বামফ্রন্ট কংগ্রেসের সঙ্গে জোট ছাড়াই লড়াই করবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’’ অন্যদিকে, জেলা কংগ্রেসের মুখপাত্র জয়ন্ত দাস বলেন, ‘‘বিধানসভা নির্বাচনে জোট হলেও পুরভোটে যে সার্বিক জোট হচ্ছে না সে কথা আমাদের শীর্ষ নেতৃত্ব আগেই বলেছেন। কারণ পুরসভার মতো স্থানীয় স্তরের নির্বাচনে অনেক প্রার্থী থাকে, স্থানীয় নেতৃত্বের মতামতকেও গুরুত্ব দিতে হয়।’’
বিশ্লেষকরা যদিও বলছেন, বাম শিবির তাদের শূন্যাবস্থা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে তৎপর। তাই কোনওভাবেই নিজেদের জায়গা ছাড়তে রাজি নয় তারা। ইতিমধ্যেই দলের পরিকল্পনা, কর্মসূচিতেও একাধিক বদল এনেছে তারা। সম্প্রতি, বারুইপুরে ভোম্বল মিস্ত্রির মতো শ্রমজীবী মানুষকে প্রার্থী করেছে বাম শিবির। সিপিএমের তরফে জানা গিয়েছে, বাম শিবির সর্বদাই সর্বহারাদের কথা বলে। শ্রমিকের কথা বলে। তাহলে কোনও মেহনতী শ্রমিক প্রার্থী হবে না? বস্তুত, ছক ভাঙতে তৎপর সিপিএম। কলকাতা পুরভোটে এককভাবে লড়াই করার পর ভাল অংশের ভোট শতাংশ জুটেছে বামেদের কপালে। সেই ভোট শতাংশ আরও বাড়াতেই তৎপর তারা।
শুধু ভোম্বলের মতো প্রার্থী নন, অনেক ওয়ার্ডেই বামেদের তরফে প্রার্থী হয়েছেন তরুণেরা। নতুন প্রজন্মকে সামনে এনেছে বাম শিবির। এতদিন, বামেদের প্রার্থী বলতে সমাজের তথাকথিত, ‘মার্জিত শিক্ষিত’ প্রার্থী বা কর্মীর ছবি ভেসে উঠত, সেই চেনা ছকই ভাঙতে চাইছে তারা। তাই, ভোম্বলের মতো ‘স্বল্পশিক্ষিত’ মানুষই এ বার সিপিএমের মুখ।
পূর্বে কোনও প্রতিবাদ, দাবি জানাতে বাম শিবির ধর্মঘট বা হরতালকেই পন্থা হিসেবে বেছে নিয়েছে। ২০১১ সালে পরিবর্তনের হাওয়া আসার পরে বাম শিবিরের ধর্মঘট করা জারি ছিল। কেবল মিছিল পিকেটিং নয়, বিভিন্ন সময়ে ধর্মঘটকে কেন্দ্র করে বিক্ষিপ্ত অশান্তির খবরও শোনা যেত। কিন্তু, সেই সময় থেকেই এ বার সরে আসতে চাইছে বাম শিবির। অন্তত এমনটাই মনে করছেন সংশ্লিষ্ট মহলের একাংশ।
বাংলা টেলিভিশনে প্রথমবার, দেখুন TV9 বাঙালিয়ানা
বাংলা টেলিভিশনে প্রথমবার, দেখুন TV9 বাঙালিয়ানা