Nadia News: তখনও পড়ছে নিঃশ্বাস, জলজ্যান্ত সদ্যোজাতকে প্যাকেটে মুড়িয়ে মৃত ঘোষণা হাসপাতালের

Nadia News: বাড়ি নিয়ে গিয়ে পরিবারের লোকজন দেখেন বাচ্চাটি বেঁচে রয়েছে। তড়িঘড়ি শিশুটিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি করা হয় জেলার সদর হাসপাতালে।

Nadia News: তখনও পড়ছে নিঃশ্বাস, জলজ্যান্ত সদ্যোজাতকে প্যাকেটে মুড়িয়ে মৃত ঘোষণা হাসপাতালের
জীবীত শিশুকে মৃত ঘোষণা হাসপাতালের
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Apr 11, 2023 | 5:01 PM

নদিয়া: রবিবার। পশ্চিম মেদিনীপুরে জলজ্যান্ত শিশুকে মৃত ঘোষণা করে পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছিল হাসপাতাল। কবর দিতে গিয়ে দেখা যায় শিশুটি বেঁচে রয়েছে। পরে যদিও তাকে বাঁচানো যায়নি। সেই ঘটনার দু’দিন যেতে না যেতেই ফের শিউরে ওঠার মতো ঘটনা। প্রকাশ্যে এল আরও এক হাসপাতালের চূড়ান্ত ‘অপদার্থতার’ কীর্তি। জীবিত সদ্যোজাতকে মৃত ঘোষণা করে প্ল্যাস্টিকে মুড়ে বেসরকারি হাসপাতাল তুলে দিল পরিবারের হাতে। বাড়ি নিয়ে গিয়ে পরিবারের লোকজন দেখেন বাচ্চাটি বেঁচে রয়েছে। তড়িঘড়ি শিশুটিকে আশঙ্কাজনক অবস্থায় ভর্তি করা হয় জেলার সদর হাসপাতালে। এখনও (বিকেল ৪টে) হাসপাতালেই চিকিৎসা চলছে ওই একরত্তির।

নদিয়ার কৃষ্ণনগরের বেসরকারি হাসপাতালের ঘটনা। নদিয়ার নাকাশীপাড়া থানার দোগাছি গ্রামের কালাবাগান এলাকার বাসিন্দা শঙ্কর দাস। তাঁর স্ত্রী সুনীতা দাস সোমবার দুপুরে প্রসব যন্ত্রণা নিয়ে কৃষ্ণনগর শহরের বেসরকারি একটি হাসপাতালে ভর্তি হন। প্রসূতির পরিবার সূত্রে খবর, ওই মহিলার শরীর জল শূন্য হয়ে পড়ায় স্থানীয় চিকিৎসক প্রসব করাতে অস্বীকার করেন। এরপরই তাঁরা বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যায় প্রসূতিকে।

প্রসূতির পরিবারের দাবি, সংশ্লিষ্ট বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক আশিস আহমেদ তাঁদের জানায় যে সিজার করলে ঝুঁকি হতে পারে। সদ্যোজাত শিশু নাও বাঁচতে পারে। পরে যদিও পরিবার সিদ্ধান্ত নেয় যে সিজার করা হবে। এরপর সুনীতা দেবী শিশুপুত্রের জন্ম দেন। তবে পুত্র সন্তান জন্ম দেওয়ার পর তাঁর শারীরিক অবস্থা দ্রুত খারাপ হতে শুরু করে।

অভিযোগ, হাসপাতালের নার্স এবং আয়ারা জীবিত বাচ্চাটিকে একটি গামলার মধ্যে করে এনে সুনীতাদেবীর বেডের নিচে রেখে চলে যান। কিছুক্ষণ পর মহিলার পরিবারের এক সদস্য (রাখি দাস) সন্তান ও তাঁর মা-কে দেখতে এসে দেখেন গামলার মধ্যে মেঝেতে শোয়ানো রয়েছে তাঁদের শিশু। কর্তব্যরত নার্স এবং আয়ারা জানান, বাচ্চাটি বাঁচবে না বলে তাঁকে এই অবস্থায় রেখে দেওয়া হয়েছে। এরপর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জ্যান্ত শিশুকে প্যাকেটে মুড়িয়ে রাখি দেবীর হাতে তুলে দেন বাড়ি নিয়ে চলে যাওয়ার জন্য।

রাখি দেবী বলেন, “নার্সরা বলল বাচ্চা বাঁচবে না। ওরা গামলায় রেখে দিল। পরে বলল যেখানেই নিয়ে যাও এই বাচ্চা বাঁচানো যাবে না। এরপর আমি বললাম শিশুটিকে বাড়ি নিয়ে যাব। তখন ওরা আমায় তিন জায়গায় সই করিয়ে প্যাকেটে করে বাচ্চাটিকে দিয়ে দিল।”

তবে বাড়ি যাওয়ার পর দেখেন শিশুটি নড়াচড়া করছে। তার দেহে প্রাণ রয়েছে। এরপর গ্রামবাসীরা ওই শিশুকে নিয়ে কৃষ্ণনগর সদর হাসপাতালের আইসিইউতে ভর্তি করে। সেখানেই বর্তমানে চিকিৎসা চলছে তার। কিন্তু বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সুনীতা দেবীর শিশুকে রেফারের কাগজও দেয়নি বলে অভিযোগ। যার কারণে সরকারি হাসপাতালে ভর্তির জন্য প্রথমে বিপাকে পড়তে হয় পরিবারকে।

এই ঘটনায় প্রসূতি ওই মহিলার পরিবার ওই হাসপাতালের বিরুদ্ধে চিকিৎসা পরিষেবার চরম গাফিলতির অভিযোগে ক্ষোভে ফেটে পড়েন। সুনীতা দেবীর স্বামী শঙ্কর দাস তদন্তের জন্য নদিয়া জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক এবং প্রশাসনের দ্ধারস্ত হবেন বলে জানিয়েছেন। অপরদিকে বেসরাকারি হাসপাতালের কর্তৃপক্ষর সাফাই, “আমরা মৃত শিশুকে পরিবারের হাতে তুলে দিয়েছিলাম। কিন্তু সে যে জীবিত এটা বুঝতে পারিনি।” অপরদিকে, ঘটনার খবর পেয়েই ক্ষুব্ধ হয়েছেন সিএমওএইচ। তিনি বলেন যে, এর আগেও ওই হাসপাতালের বিরুদ্ধে এ হেন অভিযোগ পেয়েছি। তখন জরিমানাও হয়। এবার তদন্ত চলছে। অভিযোগ প্রমাণিত হলে কড়া পদক্ষেপ করব।”