BJP MP Jagannath Sarkar: ‘ভবিষ্যতে আরও দেব’, AIIMS-এ চাকরি দেওয়ার অভিযোগের ভিত্তিতে অকপট জগন্নাথ
BJP MP Jagannath Sarkar: সম্প্রতি এইমসে এসেছিলেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার। সেদিন তাঁর সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন বেশ কয়েকজন চাকরিপ্রার্থী। তাঁদের মধ্যে ছিলেন গয়েশপুর পৌরসভার ভোটে ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী তনিমা ভট্টাচার্যও।
নদিয়া: “চাকরি দিয়েছি, এক জনকে চাকরি দিতে পারলে আমি গর্ব অনুভব করি। এবং ভবিষ্যতে আরও দেব, যদি আমার প্রভাব বাড়ে।” নিজের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের স্বপক্ষে যুক্তি খাঁড়া করে সাংবাদিক সম্মেলনে এমনটাই বললেন বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার। তিনি বলেন, “আমরা যদি বাংলায় ক্ষমতায় আসতে পারি, তাহলে দলমত নির্বিশেষে সকলের চাকরির ব্যবস্থা করব। কারণ তৃণমূল তোলাবাজি করে সব শেষ করে দিচ্ছে। আসলে এসএসসি দুর্নীতিকে ঢাকার জন্যই এই অভিযোগ প্রশাসনিক ষড়যন্ত্র করে করা হচ্ছে।” এইমসে টাকা নিয়ে চাকরি দেওয়ার ক্ষেত্রে, তাঁর বিরুদ্ধে যে বিস্ফোরক অভিযোগ ওঠে, তার ভিত্তিতেই এমনটাই দাবি করলেন বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার।
সম্প্রতি এইমসে এসেছিলেন কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার। সেদিন তাঁর সামনে বিক্ষোভ দেখিয়েছিলেন বেশ কয়েকজন চাকরিপ্রার্থী। ওখানে উপস্থিত ছিলেন গয়েশপুর পৌরসভার ভোটে ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বিজেপি প্রার্থী তনিমা ভট্টাচার্যও। তিনি ক্যামেরার সামনে বিস্ফোরক অভিযোগ করেন। অভিযোগ, জগন্নাথ সরকার চাকরি দেওয়ার নাম করে তাঁর কাছ থেকে টাকা নিয়েছিলেন। যদিও সেদিন সুভাষ সরকার গাড়ির কাচ তুলে কোনও প্রতিক্রিয়া না দিয়েই চলে গিয়েছিলেন।
সম্প্রতি কল্যাণীর এক বিজেপি কর্মী কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহর কাছে চিঠি করেছিলেন। তাতে এইমসে চাকরি দেওয়ার নাম করে টাকা তোলার অভিযোগ করেছিলেন। অভিযোগ, বিধায়ক বঙ্গিম ঘোষ তাঁর পুত্রবধূকে চাকরি দিয়েছেন। এসবের মধ্যেই মুর্শিদাবাদের এক চাকরিপ্রার্থী কল্যাণী থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। তিনি একটি ৮ জনের নামের তালিকা তৈরি করে থানায় জমা করেছিলেন। সেই তালিকায় নাম ছিল বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার, কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুভাষ সরকার, এইমসের ডিরেক্টর-সহ ৮ জনের। এই মামলায় তদন্ত শুরু করেছে সিআইডি।
সেই ঘটনার প্রেক্ষিতেই বিজেপি সাংসদ জগন্নাথ সরকার সাংবাদিক সম্মেলন করে বলেন, “চাকরি দিয়েছি। প্রভাব থাকলে ভবিষ্যতেও চাকরি দেব।”এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “তৃণমূলের লোকজন দলে রয়েছে, যারা চর হিসাবে কাজ করছে। বিজেপি দলে এখন অনুশাসন নেই। তাদের চিহ্নিতকরণ করে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা রয়েছে।”
সাংসদ প্রশ্ন তুলছেন দলের একাংশের বিরুদ্ধে। এ প্রসঙ্গে প্রাক্তন জেলা পরিষদের সভাধিপতি তথা তৃণমূল নেতা বাণী রায় বলেন, “জগন্নাথবাবু একজন সাংসদ। কখনও তিনি বলছেন টাকা নিয়েছেন, কখনও বলছেন টাকা নেননি। অভিযোগ তো তৃণমূল কিংবা সাধারণ মানুষ করেনি। অভিযোগ করেছেন বিজেপিরই এক নেত্রী, যিনি কিনা ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন। ফলে অভিযোগের সারবত্তা কী আছে, তা খতিয়ে দেখবে পুলিশ।” তাঁর আরও বক্তব্য, “ওই নেত্রীর বিরুদ্ধে থানায় এফআইআর করে দল থেকে সাসপেন্ড করে দেওয়া হল। তিনি ক্ষমতাবলে এমন করলেন। মুর্শিদাবাদেরও তো একজন অভিযোগ করেছেন। দলের যে খোচরের কথা বলছেন, তার মানে বিরোধিতা করলে কি খোচর হয়ে যায়? আর প্রভাব খাটিয়ে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা করবেন তিনি?”
অন্যদিকে বিজেপির জেলা সভাপতি ও বিধায়ক পার্থসারথি চট্টোপাধ্যায় বলেন, “দলে সত্যি কিছু চর রয়েছেন, তাঁদেরকেই মানে করছেন সাংসদ। দলে তো তৃণমূল থেকেও লোক এসেছেন, সিপিএম থেকেও লোক এসেছেন। তাঁদের সবার কথা বলছেন না সাংসদ। কেউ কেউ স্বার্থের জন্য কাজ করছেন, তাঁদের উদ্দেশ্যেই হয়তো এ কথা বলছেন।”