‘আমি তো বেঁচে আছি!,’ করোনায় ‘মৃত’ যুবক উঠে বসলেন বেডে

সকাল থেকে লাইন দিয়ে ছেলের ডেথ সার্টিফিকেট সংগ্রহ করছেন বাবা। সেই সার্টিফিকেটে তাঁকেও মৃত বলে দেখানো হল!

'আমি তো বেঁচে আছি!,' করোনায় 'মৃত' যুবক উঠে বসলেন বেডে
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: May 15, 2021 | 7:19 PM

নদিয়া: ‘আমি বেঁচে আছি, বলল আমি নাকি মরে গেছি!’ অ্যাম্বুল্যান্স শোওয়া অবস্থায় যুবকের ঘোর কাটছে না। জীবিত মানুষকে ডেথ সার্টিফিকেট দিয়ে তোলপাড় ফেলে দিল নদিয়ার কল্যাণী কোভিড হাসপাতাল।

নদিয়ার ধানতলা থানার হিজলির বাসিন্দা সুব্রত কর্মকার। বছর ছাব্বিশের যুবক জ্বর আর বুকে ব্যথা নিয়ে রানাঘাট মহাকুমা হাসপাতালে ভর্তি হন বেশ কিছুদিন আগে। সেখানেই চিকিৎসা চলছিল। কিন্তু করোনা ধরা পড়ায় এবং তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তাঁকে স্থানান্তর করা হয় কল্যাণী এনএসএস কোভিড হাসপাতালে। গত বুধবার তাঁকে সেখানে ভর্তি করে পরিবার। শুক্রবার হঠাৎ হাসপাতাল থেকে সুব্রতর বাড়িতে গেল ফোন। জানানো হল মৃত্যু হয়েছে তাঁর।

চোখে জল নিয়ে বাবা-দাদা ছুটলেন হাসপাতালে। ছেলের শেষকৃত্যের জন্য সরকারি কাগজপত্র তৈরির প্রক্রিয়ায় ব্যস্ত বাবা। পরিবারের হাতে হাসপাতালের তরফে তুলে দেওয়া হয় ডেথ সার্টিফিকেট। এদিকে মৃতদেহ সৎকারের জন্য পৌঁছে গিয়েছেন ডোমেরা। কোভিড স্বাস্থ্যবিধি মেনে দেহ আনতে গিয়ে সবার চক্ষু চড়কগাছ। দিব্যি বেডে বসে রয়েছেন ‘মৃত’ যুবক। সুব্রত শুনলেন, তাঁর নাকি মৃত্যু হয়েছে!

এই ঘটনা ঘিরে তীব্র চাঞ্চল্য শুরু হয় হাসপাতালে। কর্তৃপক্ষের এমন কাজে কার্যত হতবাক ও ক্ষুব্ধ পরিবার। হয়রানি আর বিস্ময়ের এখানেই শেষ না। হাসপাতালের বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ তুলেছেন রোগীর পরিজনরা। একে সকাল থেকে লাইন দিয়ে ছেলের ডেথ সার্টিফিকেট সংগ্রহ করছেন বাবা। সেই সার্টিফিকেটে তাঁকেও মৃত বলে দেখানো হল! হাসপাতালের এমন অপেশাদার কাজে কার্যত ক্ষুব্ধ ও বিস্মিত পরিবার। আশঙ্কা ও আতঙ্কে একরকম বাধ্য হয়ে চিকিৎসাধীন ছেলেকে হাসপাতাল থেকে ছাড়িয়ে বাড়ি নিয়ে চলে যান তাঁরা। বাড়িতেই ছেলেকে একান্তবাসে রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাবা। শুক্রবার থেকে তাঁদের সঙ্গে যা ঘটল তার রেশ এখনও সবার চোখেমুখে। কার্যত আতঙ্কের ছাপ পরিবারের সবার শরীরে।

আরও পড়ুন: করোনায় মৃত্যু কল্যাণী-রানাঘাটের তথ্য সংস্কৃতি আধিকারিকের 

এদিকে এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত সংশ্লিষ্ট হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের কোনও জবাব মেলেনি।