Barrackpore Crime: পড়াশোনায় মন দিতে বান্ধবীর সঙ্গে কথা বন্ধ করেছিল, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর বাড়িতে উদ্ধার তারই বান্ধবীর ঝলসানো শরীর

Barrackpore Crime: নবনীতার পরিবারের দাবি, শনিবার সন্ধ্যাতে তাঁরা বাড়ি ছিলেন না। ফিরে এসে দেখেন, বাড়ির দরজার সামনে বসে ছিলেন চর্চিতা। তারপর তাঁকে ঘরে ডাকা হয়।

Barrackpore Crime: পড়াশোনায় মন দিতে বান্ধবীর সঙ্গে কথা বন্ধ করেছিল, উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থীর বাড়িতে উদ্ধার তারই বান্ধবীর ঝলসানো শরীর
বারাকপুরে আত্মঘাতী যুবতী (নিজস্ব চিত্র)
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 08, 2022 | 1:09 PM

উত্তর ২৪ পরগনা: আগে একে অপরকে চিনতেনই না তাঁরা। ফেসবুকে হঠাৎ করেই একদিন রিক্যুয়েস্টটা এসেছিল। প্রোফাইল দেখে পছন্দ হওয়ায় বন্ধুত্বের সেই আবেদন গ্রহণও করেছিলেন উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। তারপর থেকেই ফেসবুকে কথা হত দুই যুবতীর। বন্ধুত্ব গাঢ় হতে থাকে। পরিবারও সে কথা জানত। দুজন দু’জনের বাড়িতেও যেতেন। কিন্তু তারপরই একদিন মনোমালিন্য আর বন্ধুত্বের বিচ্ছেদ। কথা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল দু’জনের। বান্ধবীকে বোঝাতে আপ্রাণ চেষ্টা করেছিলেন বছর তেইশের মেয়েটা। কিন্তু বান্ধবী কথা বলেননি। বান্ধবীর বাড়িতে গায়ে আগুন দিয়ে আত্মঘাতী হলেন যুবতী। চাঞ্চল্যকর ঘটনাটি ঘটেছে ব্যারাকপুরের পঞ্চাননতলায়। মৃত যুবতীর নাম চর্চিতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

ফেসবুকের মাধ্যমে ইছাপুরের আনন্দমঠের নবনীতা দাসের সঙ্গে ব্যারাকপুর পঞ্চাননতলার বাসিন্দা চর্চিতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। হঠাৎই তাঁদের বন্ধুত্বে ছেদ পড়ে। কথা বন্ধ হয়ে যায় দুই বান্ধবীর। উচ্চ মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী নবনীতার বয়ান অনুযায়ী, পড়াশোনায় মন দেওয়ার জন্য চর্চিতার সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু চর্চিতা বন্ধুত্ব রাখতে নাছোড়বান্দা ছিলেন। বাড়িতে এসেও নবনীতাকে বারবার কথা বলার জন্য চাপ দিতেন।

নবনীতার পরিবারের দাবি, শনিবার সন্ধ্যাতে তাঁরা বাড়ি ছিলেন না। ফিরে এসে দেখেন, বাড়ির দরজার সামনে বসে রয়েছেন চর্চিতা। তারপর তাঁকে ঘরে ডাকা হয়। নবনীতাকে তখন বন্ধুত্ব রাখার জন্য আবারও বোঝাতে থাকেন চর্চিতা। নবনীতার বক্তব্য, “এখন পড়াশোনাতেই মন দিতে চেয়েছিলাম। বারবার ঘুরতে যাওয়া, খেতে যাওয়ায় সময় নষ্ট হত। তাই কথা বলা বন্ধ করেছিলাম। চর্চিতা আমাকে শুধু বলত কথা বল, কথা বল। আমি না করে দিই তারপর তো ও ঘর থেকে বেরিয়ে যায়।”

সন্ধ্যার পর আচমকাই নবনীতার প্রতিবেশীরা ‘আগুন আগুন’ বলে চেঁচাতে থাকেন। তখন নীচের ঘরেই ছিলেন নবনীতা ও তাঁর মা।  নবনীতার বক্তব্য, তাঁদেরই দোতলার ঘরে যে আগুন লেগেছে, তা কোনওভাবেই আঁচও করতে পারেননি তাঁরা। ততক্ষণে নবনীতার দোতলার ঘরে আগুনে ঝলসে গিয়েছে চর্চিতার শরীর।

নবনীতার চিৎকারে স্থানীয় বাসিন্দারা ছুটে এসে আগুন নেভান। ততক্ষণে চর্চিতার শরীরের অনেকটাই ঝলসে  গিয়েছে। কোনওক্রমে কম্বলে পেঁচিয়ে তাঁকে বিএন বসু হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। এই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে নোয়াপাড়া থানার পুলিশ।

কী কারণে আত্মহত্যা, আদৌ তাঁদের মধ্যে কী ধরনের সম্পর্ক ছিল, কেবল কথা না বলার কারণেই কি আত্মহত্যা, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। নবনীতা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের জিজ্ঞাসাবাদ করছে পুলিশ। আতহত্যা নাকি অন্য কোনও বিষয় রয়েছে, সেটাও বিচার্য। দেহটি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।

নবনীতার মায়ের বক্তব্য, “ও তো আমাদের বাড়িতে প্রচুরবার এসেছে। আমিই ওকে বোঝাতাম, এখন কথা বলছে না, পরে ঠিকই বলবে। বুঝতই না। ওদের মধ্যে ঠিক কী হয়েছে, কীভাবে বুঝব! আমি তো বিশ্বাসই করতে পারছি না।” চর্চিতার পরিবারের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া এখনও পাওয়া যায়নি। তাঁদের পরিবারের তরফে এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযোগও দায়ের হয়নি।