ভ্যাকসিন নিয়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি, ফের দলীয় কর্মসূচিতে গরহাজির বনগাঁর তিন বিজেপি বিধায়ক
BJP: গত রবিবার বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার 'কার্যকারিণী বৈঠক' ছিল। জেলার সাংগঠনির বিষয় নিয়ে আলোচনাই ছিল এর মূল লক্ষ্য। অথচ সেখানে তিন তিনজন বিধায়ক গরহাজির।
উত্তর ২৪ পরগনা: এর আগে বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন বিজেপির তিন বিধায়ক। এবার দলীয় প্রতিবাদ কর্মসূচিতেও পিঠ দেখালেন তাঁরা। ভ্যাকসিন নিয়ে স্বজনপোষণ ও দুর্নীতির অভিযোগে বৃহস্পতিবার পথে নামে বিজেপি। বনগাঁ মহকুমা শাসকের দফতরে স্মারকলিপি জমা দিতে যায় তারা। কিন্তু সেই কর্মসূচিতে দেখা গেল না বাগদার বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস, বনগাঁ উত্তরের বিধায়ক অশোক কীর্তনিয়া ও গাইঘাটার বিজেপি বিধায়ক সুব্রত ঠাকুরকে।
বৃহস্পতিবার বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার পক্ষ থেকে শতাধিক কর্মী সমর্থক পোস্টার ব্যানার নিয়ে মহকুমা শাসকের অফিসের সামনে বসে বিক্ষোভ দেখান। পাঁচজনের এক প্রতিনিধি দল ভিতরে গিয়ে স্মারকলিপিও জমা দেন। কিন্তু এদিন দলীয় কর্মী-সমর্থকদের পাশে দেখা যায়নি তিন বিধায়ককে। যা ঘিরে ইতিমধ্যেই নানা জল্পনা ভেসে আসছে। কাকতালীয় ভাবে তিনজনই এই অনুপস্থিতির কারণ দেখিয়েছেন, ‘শারীরিক অসুস্থতা’।
গত রবিবার বিজেপির বনগাঁ সাংগঠনিক জেলার ‘কার্যকারিণী বৈঠক’ ছিল। জেলার সাংগঠনিক বিষয় নিয়ে আলোচনাই ছিল এর মূল লক্ষ্য। অথচ সেখানে তিনজন বিধায়কই গরহাজির ছিলেন। যা নিয়ে নানা প্রশ্ন উঠেছিল সেদিন। দলের তরফে অবশ্য সেদিনও বলা হয়েছিল, বিধায়করা অসুস্থ। স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচিতে বিধায়কদের অনুপস্থিতি প্রশ্নে বিজেপি নেতা প্রসেনজিৎ ভৌমিক বলেন, “দু’জন অসুস্থ। ওনাদের বিধায়ক হিসাবেও নিজস্ব অনেক কাজকর্ম থাকে। বিধানসভায় নানা রকম কর্মসূচি নিয়ে বিরোধী দলনেতা প্রায়ই ডেকে নেন, সেখানেও তাঁদের যেতে হয়। আলাদা ব্যস্ততা থাকে। সকলে তাই হয়ত একসঙ্গে থাকতে পারেন না।”
এ বিষয়ে বিশ্বজিৎ দাসের দাবি, “আমাকে ফোন করা হয়েছিল, কিন্তু আমার শরীরটা খারাপ বলে বেরোচ্ছি না। বাড়িতেই রয়েছি। এর মধ্যে অন্য কোনও গল্প খোঁজা ঠিক হবে না।” অন্যদিকে সুব্রত ঠাকুরের বক্তব্য, “তিন থেকে চারটে বৈঠক, আর দু’ একটা ডেপুটেশন হয়েছে। আমি থাকতে পারিনি আমার অসুস্থতার কারণে। তা ছাড়া আমি এখানে ছিলামও না। মতুয়া মহাসংঘের বৈঠকও ছিল। সেখানেও থাকতে হয়েছে।”
যদিও দলীয় কর্মসূচিতে বিধায়কের অনুপস্থিতি ঘিরে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল। উত্তর ২৪ পরগনা তৃণমূল কংগ্রেসের কো-অর্ডিনেটর গোপাল শেঠ বলেন, “বিজেপি দলটাই আসলে বনগাঁ থেকে উঠে যাচ্ছে। সবাই উঁকি মেরে দাঁড়িয়ে রয়েছে কখন দিদি ডাকবে। ওখানে শুধু বিধায়ক কেন, সাংসদকেও দেখা যাচ্ছে না। ও উদ্বাস্তু নিয়ে লড়াই করছিল। ওকে জলে ফেলে দিয়েছে। এখন তো আর লড়াইও করছে না।”
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি নরেন্দ্র মোদীর মন্ত্রিসভায় স্থান পেয়েছেন বনগাঁর সাংসদ শান্তনু ঠাকুর। তাঁকে কেন্দ্রীয় বন্দর, জাহাজ এবং জলপথ দফতরের প্রতিমন্ত্রী করা হয়েছে। এই মন্ত্রিত্ব নিয়েও ইতিমধ্যেই নানা কটাক্ষের বাণ চালিয়েছে শাসকদল। কারও কারও দাবি, মতুয়াদের নাগরিকত্ব নিয়ে শান্তনুর ‘বিদ্রোহ’ ঠেকাতেই কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় প্রতিমন্ত্রী করে দেওয়া হয়েছে তাঁকে। এদিন গোপাল শেঠের কথাতেও ঘুরে ফিরে এসেছে সাংসদকে ‘জলে ফেলে’ দেওয়ার তত্ত্ব। আরও পড়ুন: ‘কিছু সময় রাজনীতিতে নীরব থাকতে হয়’, মুকুল রায়ের বাড়িতে দাঁড়িয়ে নয়া জল্পনা উস্কে দিলেন রাজীব