Mass Marriage : চার হাত এক হল গণবিবাহে, জীবনসাথী পেলেন মূক, বধিররা
Specially Abled Person : দিশা ও সক্ষম দুই সংগঠনের তরফে গণ বিবাহের আয়োজন করা হয়েছিল। সেখানে বিশেষভাবে সক্ষমদের বিবাহের আয়োজ করেছে এই দুই সংগঠন।
বিরাটি : তাঁরা মূক, বধির। কেউ হয়তো চোখে দেখতে পান না। বিশেষভাবে সক্ষম তাঁরা। তাঁদের দিকে সমাজ তাচ্ছিল্য় সহকারে দেখে। কেউ আবার ঠাট্টা, তামাশা করে। কিন্তু তাঁরাও যে মানুষ। তাঁদেরও যে স্বাভাবিকভাবে জীবনযাপনের অধিকার রয়েছে, আমরা তা ভুলে যাই। আমাদের প্রতিদিনের চলার পথে এরকম অভিজ্ঞতা হয়েছে যে বিশেষভাবে সক্ষম কোনও ব্যক্তিকে দেখলে নাক নিরাপদ দূরত্বে গিয়ে দাঁড়ায়। কোনও অন্ধ ব্যক্তির ভুলবশত গায়ে ধাক্কা লেগে গেলে তাঁকে প্রচুর ভর্ৎসনাও কুড়োতে হয়। এই বিভিন্ন ঘটনা আমরা রোজ প্রত্যক্ষ করি। কিন্তু আমরা একটু মুহূর্ত বের করে ভাবি না তাঁদের আমরা এই ধরনের আচরণের মাধ্যমে সমাজ থেকে অনেকটা দূরে ঠেলে দিই।
স্বাভাবিক ছন্দে নিজেদের ডানা মেলে দিতে তাঁদেরও ইচ্ছে হয়। তাঁদেরও সাধ জাগে কাঁধে মাথা রাখার একজন সঙ্গী থাকবে। সুখ-দুঃখ এবং প্রতিদিনের এই ভর্ৎসনা, আঘাত, বেদনা একে অপরের কাছে উজাড় করে দিতে পারবে। তাঁদের এইসব প্রয়োজনের কথা ভেবে এগিয়ে এসেছে দুই সংস্থা- দিশা ও সক্ষম। এই দুই সংগঠনের তরফে বিরাটির শরৎ কলোনিতে একটি গণ বিবাহের আয়োজন করা হয়। ‘দিব্যাঙ্গ সামুহিক বিবাহ’। সেখানে হিন্দু মতে সবরকম আচার অনুষ্ঠান মেনে ৯ জোড়া বর-বউয়ের চার হাত এক করা হয়। এলাকার মানুষ আনন্দ নিয়ে এই বিয়ের কাজে অংশগ্রহণ করেছেন।
এইরকম পদক্ষেপ করতে পেরে খুশি এই দুই সংগঠন। গণ বিবহের আয়োজন তো আমরা মাঝে মাঝেই দেখি। কিন্তু বিশেষভাবে সক্ষম ব্যক্তি ও মহিলাদের গণ বিবাহের আয়োজন সচরাচর দেখা যায় না। এই অভিনব উদ্যোগে মানুষের প্রশংসাও কুড়িয়েছে এই দুই সংগঠন। জীবনসঙ্গীকে পাশে পেয়ে মুখে হাসি ফুটেছে এই দম্পতিদেরও। বিয়ের অনুষ্ঠানে কোনও কিছুর ত্রুটি রাখা হয়নি। সকালে গায়ে হলুদ, জল সইতে যাওয়া থেকে শুরু করে, মন্ত্রোচ্চারণ সবকিছুই নিয়ম মেনে অক্ষরে অক্ষরে পালন করা হয়েছে। ৯ জোড়া পুরুষ ও মহিলার বিবাহের জন্য করা হয়েছে বিশাল হোমের ব্যবস্থাও।
এই উদ্যোগে মানুষের অনেক প্রশংসা কুড়োলেও সক্ষম ও দিশার সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি হল ওই হাসি মুখগুলো। উদ্যোক্তারা জানিয়েছেন, এইরকম একটি কাজের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে ভালো লাগছে তাঁদের। তাঁরা সমাজে অবহেলিত। প্রতিদিনের সুখ-দুঃখ ভাগ করে নেওয়ার মতো ভরসার কাঁধগুলো তাঁরা পেতেন না। এইবার থেকে সেই অভাবটা ঘুচবে। জানা গিয়েছে, এই দম্পতিরা প্রত্যেকেই নিজেদের যোগ্যতা মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে কর্মরত। বাকি যেটুকু অভাব তাঁদের জীবনে ছিল তা এই দুই সংগঠনের হাত ধরে আজ শুভক্ষণে পূরণ হয়ে গেল।
আরও পড়ুন : Bidhannagar Police: বিধাননগরে বাড়ছে চোরের উপদ্রব! আবাসিকদের নিরাপত্তায় বাড়তি নজর