Asansol Night Shelter: রাস্তাতেই ভবঘুরেরা, তাঁদের জন্য পেল্লাই নীল-সাদা ভবনেও ‘টাকার খেলা’

Raniganj: ভবন এখনও রয়েছে। কিন্তু পাঁচ বছর কেটে গেলেও নীল-সাদা বিশাল সেই ভবন এখনও চালু করা যায়নি। অতঃপর এই হাড় কাঁপানো শীতের রাতেও গৃহহীন, ভবঘুরে মানুষগুলোকে কম্বল মুড়ি দিয়ে রাস্তার ধারেই শুতে হচ্ছে। অভিযোগ তেমনই।

Asansol Night Shelter: রাস্তাতেই ভবঘুরেরা, তাঁদের জন্য পেল্লাই নীল-সাদা ভবনেও 'টাকার খেলা'
পাঁচ বছর পরেও চালু হল না, কেন? প্রশ্ন উঠছে এলাকায়Image Credit source: TV9 Bangla
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jan 24, 2024 | 5:29 PM

আসানসোল: ওঁরা ভবঘুরে। রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়ান। মাথার উপর ছাদ নেই। ওঁদের থাকার জন্য সরকারি বন্দোবস্ত রয়েছে বটে। বিশাল বড় বহুতল। চারতলা পেল্লায় নীল-সাদা ভবন। অস্থায়ী ঠিকানা যদি, তবুও তো আছে। কিন্তু যা অবস্থা, তাতে এই বিশাল ভবন শুধু নামেই রয়েছে। থাকতে পারেন না কেউ ওঁরা। শীতের এই হাড় কাঁপানো রাতেও গৃহহীন ভবঘুরেদের থাকতে হয় রাস্তার ধারে। ফুটপাথে। কেউ বা রাত কাটান বাসস্ট্যান্ডে। যাত্রী ছাউনির তলায়। এটাই বাস্তব চিত্র রানিগঞ্জে।

শিল্পাঞ্চলে রাতের তাপমাত্রা এখন ১০-১২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে ঘোরাফেরা করছে। আর এই ঠান্ডার মধ্যেও ওই ভবঘুরেদের রাত কাটাতে হচ্ছে খোলা আকাশের নীচে। কেউ রাস্তার ধারে কোনও দোকানের পাশে। কেউ ফুটপাথে। কেউ বাসস্ট্যান্ডে। গুটিসুটি মেরে শুয়ে থাকেন। সম্বল বলতে একটা কম্বল। কারও ভাগ্যে সেটাও জোটে না। চাদর মুড়ি দিয়ে কোনওরকমে রাত কাটান। ঘুম কি আসে আদৌ? জানা নেই।

তবে এদের থাকার জন্য সরকারি টাকা খরচ করে বিশাল ব্যবস্থা করা হয়েছিল। বছর পাঁচেক আগে। প্রায় কোটি টাকারও বেশি খরচ করা হয়েছিল। ৮৮ নম্বর ওয়ার্ডে আসানসোল পুরনিগমের তরফে তৈরি করা হয়েছিল একটি বহুতল। উদ্দেশ্য ছিল, যাদের ঘর-বাড়ি নেই, সেই গৃহহীন-ভবঘুরেদের একটু থাকার জায়গা করে দেওয়া। যাতে ফুটপাথে কিংবা রাস্তার ধারে রাত কাটানো মানুষগুলো অন্তত রাতটুকু কাটানো পারেন পাকা ছাদের তলায়।

ভবন এখনও রয়েছে। কিন্তু পাঁচ বছর কেটে গেলেও নীল-সাদা বিশাল সেই ভবন এখনও চালু করা যায়নি। অতঃপর এই হাড় কাঁপানো শীতের রাতেও গৃহহীন, ভবঘুরে মানুষগুলোকে কম্বল মুড়ি দিয়ে রাস্তার ধারেই শুতে হচ্ছে।

এলাকার প্রাক্তন সিপিএম কাউন্সিলর আরিশ জালিশও প্রশ্ন তুলেছেন, কেন এটি এখনও চালু হচ্ছে না? এই শীতের মধ্যেও ভবঘুরেদের খোলা আকাশের নীচে, ফুটপাথে রাত কাটাতে হচ্ছে, সে কথাও তুলে ধরেন তিনি। ইতিমধ্যেই বিভিন্ন প্রশাসনিক জায়গায় চিঠি পাঠিয়েছেন ওই প্রাক্তন সিপিএম কাউন্সিলর।

রানিগঞ্জের বোরো চেয়ারম্যান মোজাম্মেল শাহজাদা অবশ্য আরও বিস্ফোরক দাবি করছেন। তাঁর দাবি, এটি পরিচালনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল কলকাতার এক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাকে। এরপর সেই স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার তরফে স্থানীয় একজন ব্যক্তিকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। আর সেই স্থানীয় ব্যক্তিই নাকি একটি করে ঘর পাইয়ে দেওয়ার নাম করে লোকজনের থেকে টাকা তুলেছে। কারও থেকে পাঁচ হাজার টাকা। কারও থেকে দশ হাজার টাকা। যার থেকে যেমন পেরেছে টাকা নিয়েছে বলে অভিযোগ।

বোরো চেয়ারম্যান বললেন, “ওই লোকাল ছেলেটা একটা করে রুম দেওয়ার নামে লোকের থেকে পয়সা নিল। ধাপ্পাবাজি করে পয়সা নিয়ে নিয়েছিল। তারপর সেটা নিয়ে ঝামেলা হয়েছিল। বিষয়টি পুরনিগমকে ও বিধায়ককে জানানোও হয়েছিল। তখন পুরনিগমের চেয়ারম্যান ছিলেন অমরনাথ চট্টোপাধ্যায়। তখন চাবিটা জমা পড়ে যায় পুরনিগমের কাছে।” যদিও বোরো চেয়ারম্যান জানাচ্ছেন, সম্প্রতি সেখানে সংস্কারের কাজও হয়েছে। বললেন, ‘আমরা চাই দ্রুত পুরনিগম ব্যবস্থা নিক বা এই ভবনটি চালু করুক।’