চিত্তরঞ্জনের ভুয়ো সিবিআই ঝাড়খণ্ডে সাজলেন ম্যাজিস্ট্রেট, কাল হল রাস্তায় দাঁড়িয়ে ‘টাকা তোলা’! নাটকীয় ভাবে পর্দা ফাঁস…

Chittaranjan: মিহিজাম, মুঙ্গের, ধানবাদের একাধিক লোকজন প্রতারিত হয়েছেন বলেও ইতিমধ্যেই পুলিশের কাছে অভিযোগ এসেছে।

চিত্তরঞ্জনের ভুয়ো সিবিআই ঝাড়খণ্ডে সাজলেন ম্যাজিস্ট্রেট, কাল হল রাস্তায় দাঁড়িয়ে 'টাকা তোলা'! নাটকীয় ভাবে পর্দা ফাঁস...
নিজস্ব চিত্র।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Jul 16, 2021 | 9:39 PM

পশ্চিম বর্ধমান: এবার ভুয়ো সিবিআই কর্তার জাল চিত্তরঞ্জনে। অভিযোগ, সিবিআই আধিকারিক পরিচয় দিয়ে কোটি কোটি টাকার প্রতারণা করেছেন স্থানীয় মুন্না ডোম নামে এক যুবক। অভিযোগ, শুধু সিবিআই আধিকারিকই নন, কখনও তিনি সেজেছেন মানবাধিকার কর্মী, আবার কখনও সেজেছেন সংবাদকর্মী। বেশ বদলের সঙ্গে সঙ্গে বদলেছেন নামও। কখনও তিনি নিজেকে এমকে সিং বলে পরিচয় দিয়েছেন, কখনও আবার সেজেছেন রোহিত মল্লিক। ঝাড়খণ্ডের দুমকা থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে তাঁকে। শুক্রবার চিত্তরঞ্জন থানার পুলিশ ছ’দিনের ‘প্রোডাকশন ওয়ারেন্ট’-এ মুন্নাকে নিয়ে আসে।

অভিযোগ, প্রতারণার আন্তঃরাজ্য জাল বিছিয়েছিলেন মুন্না। কখনও তিনি সিবিআই অফিসার সেজেছেন, কখনও পুলিশ অফিসার, কখনও মানবাধিকার সংস্থার আধিকারিক, কখনও আবার নকল প্রেসকার্ড তৈরি করে হয়েছেন সাংবাদিক। বিভিন্ন পরিচয়পত্রে সরকারি লোগো ব্যবহার করে জালিয়াতি করে গিয়েছেন চিত্তরঞ্জনের মুন্না ডোম।

অভিযোগ কাউকে চাকরি দেওয়ার নামে, কাউকে আবার সিবিআই অফিসার সেজে ভয় দেখিয়ে টাকা নিয়েছেন। তাঁর পর্দা ফাঁস হতেই চিত্তরঞ্জন ছেড়ে পালান। পুলিশ বহুদিন ধরেই তাঁকে খুঁজছিল। অবশেষে ধরা পড়লেন ঝাড়খণ্ডের দুমকায়। লকডাউনে ম্যাজিস্ট্রেট সেজে তিনি রাস্তায় তোলাবাজি করছিলেন বলে অভিযোগ। ভুয়ো অফিসার সেজে বাইক আরোহী, গাড়ি চালক ও দোকানদারদের কাছ থেকে টাকা আদায় করার সময় ধরা পড়েন তিনি। স্থানীয়রাই পুলিশের হাতে তুলে দেয়।

মুন্নার বিরুদ্ধে অভিযোগের তালিকা লম্বা

অভিযোগ ১

চিত্তরঞ্জনের সিমজুড়ির বাসিন্দা প্রিয়া কুমারী আসানসোল সিজিএম আদালতে মুন্না ডোমের বিরুদ্ধে ১৫ লক্ষ টাকা জালিয়াতির অভিযোগে মামলা করেছেন ইতিমধ্যে। রেলে চাকরি দেওয়ার নামে ওই টাকা নিয়েছিলেন। পরে প্রিয়ার পরিবারের সঙ্গে সুসম্পর্ক তৈরি করে আরও ৫ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন।

অভিযোগ ২

চিত্তরঞ্জন আরসাইডের বাসিন্দা শালিনী শর্মাকে রেলে চাকরি দেওয়ার নামে ১০ লক্ষ টাকার প্রতারণা করার অভিযোগও রয়েছে মুন্নার বিরুদ্ধে। ওই পরিবারের সঙ্গে পরে ব্যবসা করার নামে আরও ২৫ লক্ষ টাকা হাতিয়ে নেন। শুধুমাত্র রেলে চাকরি হবে এই প্রলোভন দেখিয়ে শালিনীকে দু’বার আইটি সেক্টরের চাকরি ছাড়িয়ে চেন্নাই নিয়ে যান বলেও অভিযোগ।

অভিযোগ ৩

চিত্তরঞ্জন বাজারে মোবাইলের দোকান থেকে মাংসের দোকান, প্রায় ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত মুন্নার ধার রয়েছে। কাউকেই টাকা না দিয়ে তিনি দুমকা পালিয়ে যান বলে অভিযোগ। চিত্তরঞ্জনে থাকতে থাকতেই বার বার ডেরা বদলান মুন্না।

শুধু তাই নয়, মুন্নার ভুয়ো কাণ্ডকারখানায় বিশ্বাস করে প্রতারণার শিকার হয়েছেন চিত্তরঞ্জন ও মিহিজামের বাসিন্দারা। মিহিজাম, মুঙ্গের, ধানবাদের একাধিক লোকজন প্রতারিত হয়েছেন বলেও ইতিমধ্যেই পুলিশের কাছে অভিযোগ এসেছে। ম্যাজিস্ট্রেট পরিচয় দিয়ে লকডাউনে গাড়ি চেকিং ও দোকানে অভিযান চালিয়ে তোলা আদায় করতে গিয়েই ধরা পড়েন বলে পুলিশ সূত্রে খবর।

অভিযোগ, গ্রামবাসীদের সন্দেহ হওয়ায় তাঁকে বেঁধে রেখে দুমকার মাসালিয়া থানায় পুলিশকে খবর দেন সেখানকার লোকজন। মুন্নার আসল বাড়ি কোথায় তা নিয়েও ধন্দে পুলিশ। জানা গিয়েছে, কয়েক বছর আগে মুন্নার বাবা ওমপ্রকাশ মল্লিক চিত্তরঞ্জন রেলইঞ্জিন কারখানায় চাকরি করতেন। সম্প্রতি তিনি অবসর নিয়ে কোথায় গিয়েছে, তা কেউ জানেন না। আরও পড়ুন: ‘ভারত-পাকিস্তানের সৌহার্দ্যের কাঁটা আরএসএস’, তাশখন্দে বসে এমনই বিস্ফোরক দাবি ইমরান খানের