Tourists Death in Uttarakhand: ভ্রমণে গিয়ে মৃত্যু ৫ বাঙালি পর্যটকের, দেহ ফিরবে কীভাবে?
Asansol: পর্যটকদের অভিযোগ, মৃতদেহগুলো বাগেশ্বর হাসপাতাল থেকে প্রায় দুশো কিলোমিটার দূরে হলদিয়ানি পর্যন্ত সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে করে পৌঁছে দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছিল
পশ্চিম বর্ধমান: গিয়েছিলেন ছুটি কাটাতে। কিন্তু ফিরে আসতে হল কফিনবন্দি হয়ে। কিন্তু সেই ফেরাও যেন সুখের নয়। উত্তরাখণ্ড (Uttarakhand) থেকে আসানসোল-রানিগঞ্জে দেহ নিয়ে ফেরাতে দুই রাজ্যের কোনও সরকারই সহযোগিতা করছে না বলে অভিযোগ পর্যটকদের। অভিযোগ, ওই মৃত পাঁচ পর্যটকের মৃতদেহ উত্তরাখণ্ড থেকে ফিরিয়ে আনতে হলে হয় তাঁদের আত্মীয়দের যেতে হবে অথবা, যে পর্যটকেরা ফিরে আসছেন তাঁদেরই নিয়ে আসতে হবে মরদেহ। যদিও, বাগেশ্বরের জেলাপ্রশাসন আশ্বাস দিয়েছেন সমতল পর্যন্ত গাড়ি করে মৃতদেহগুলি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে।
সূত্রের খবর, মৃতদের নাম কিশোর ঘটক (৫৯), তিনি রানিগঞ্জের বাসিন্দা। আসানসোলের শ্রাবণী চক্রবর্তী(৫৫,) দুর্গাপুরের সুব্রত ভট্টাচার্য্য (৬১) ও তাঁর স্ত্রী রুনা ভট্টাচার্য্য (৫৬) ও রানিগঞ্জের চন্দনা খান ভট্টাচার্য্য (৬৪)। বৃহস্পতিবার ওই পাঁচ পর্যটকের মৃতদেহের ময়নাতদন্ত হয়। আহত ৭ জন পর্যটক যাঁরা ওই দলের সঙ্গেই যুক্ত ছিলেন তাঁদের অভিযোগ, বাগেশ্বর থেকে কীভাবে দেহগুলি আনা হবে তা নিয়ে জটিলতা দেখা দিয়েছে।
পর্যটকদের অভিযোগ, মৃতদেহগুলো বাগেশ্বর হাসপাতাল থেকে প্রায় দুশো কিলোমিটার দূরে হলদিয়ানি পর্যন্ত সরকারি অ্যাম্বুলেন্সে করে পৌঁছে দেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছিল। কাপকোট মহকুমাশাসকের কাছে অনুরোধ করেছিলেন দুর্ঘনাগ্রস্ত পর্যটকরা। হলদিয়ানি থেকে দিল্লির দূরত্ব প্রায় আড়াইশো কিলোমিটার। তারপর যদি দেখা যায় দিল্লি থেকে রেসিডেন্ট কমিশনার সহযোগিতা করছেন এবং দিল্লি থেকে কলকাতায় আনার ব্যবস্থা হচ্ছে তা হলে পর্যটকদের হয়রানি কমবে। না হলে ব্যক্তিগত উদ্যোগেই দেহগুলো আসানসোল শিল্পাঞ্চলে নিয়ে যাওয়া হবে।
অভিযোগ, এরপর বাগেশ্বর প্রশাসন জানিয়ে দেয় মৃতদেহগুলি সমতলে পাঠানো পর্যন্ত ব্যবস্থা করা যেতে পারে। কিন্তু, বাকি রাস্তা কীভাবে মৃতদেহগুলি নিয়ে যাওয়া হবে তা মৃতের পরিজন বা আহত পর্যটকদেরই ভাবতে হবে। এদিকে, পশ্চিম বর্ধমান জেলা প্রশাসন ও আসানসোল পুলিশ কমিশনারেটের তরফে এদিন এ ব্যাপারে কিছুই জানানো হয়নি।
স্বাভাবিকভাবেই গোটা বিষয়টি নিয়ে চরম দুশ্চিন্তা ও উৎকণ্ঠায় রয়েছেন ওইসব পরিবারের সদস্যরা। তারা রাজ্য সরকার ও জেলা প্রশাসন এবং পুলিশের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন। তবে যদি শেষ পর্যন্ত সব ঠিক মতো হয়, তাহলে মৃতদেহ, আহতরা ও অন্য পর্যটকরা আসানসোলে আসতে পারেন আগামী ৩০ অক্টোবর বা তারপরে।
দেহগুলি কিভাবে আসানসোল শিল্পাঞ্চলে ফিরিয়ে আনা হবে তা নিয়ে দিনভর ওই পর্যটক দলের মধ্যে থাকা আসানসোল জেলা হাসপাতালে সহকারি সুপার কঙ্কন রায় দৌড়াঝাঁপ করেন। একদিকে যেমন বাগেশ্বর প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করছেন অন্যদিকে আসানসোল দুর্গাপুর উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান ও রানিগঞ্জের বিধায়ক তাপস বন্দ্যোপাধ্যায় পশ্চিম বর্ধমানের জেলাশাসক থেকে রেসিডেন্ট কমিশনার এবং উত্তরাখণ্ডের জেলা প্রশাসনের সাথে কথাবার্তা চালিয়ে গিয়েছেন।
অপরদিকে ওই দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত সাতজনের মধ্যে দুজন জগবন্ধু কাঞ্জিলাল এবং তাঁর স্ত্রী মধুছন্দা কাঞ্জিলালকে বৃহস্পতিবার সকালে এক বিশেষ এয়ার অ্যাম্বুলেন্স করে এক নার্সিং কর্মীসহ বাগেশ্বর থেকে সেখানকার সুশিলা তেওয়ারী নামক বড় হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য আনা হয়েছে বলে সেখানকার জেলাশাসক বিনীত কুমার জানান। পর্যটকরা বলেন এখানকার জেলাশাসক বিনীত কুমার এবং বিশেষ করে মহকুমাশাসক পরিতোষ ভার্মা আমাদের খুবই সহযোগিতা করছেন।
পর্যটকদের দলে থাকা, কঙ্কন রায় বলেন, “আমরা বাগেশ্বর থেকে ২৪ কিলোমিটার দূরে একটি উঁচু জায়গায় হোটেলে আছি। যে হোটেলটির ব্যবস্থা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দুর্ঘটনার পর বুধবার আমাদের সন্ধ্যার সময় করে দেওয়া হয়েছিল। কপকোট থেকে আমাদের লালকুয়া পর্যন্ত প্রায় ১৯৭ কিলোমিটার রাস্তা যাবার জন্য মহকুমা শাসককে অনুরোধ করেছি আমাদের গাড়ির ব্যবস্থা করে দিন। ভাড়া আমরাই দেবো। এই লালকুয়া থেকেই আমাদের পরশু দিন অর্থাৎ শনিবার ট্রেন আছে। ইতিমধ্যেই যে গাড়িটি ভয়ঙ্কর ভাবে আমাদের ধাক্কা মেরে খাদে পড়ে যায় সেই গাড়ির চালক মনোজ সিংয়ের বিরুদ্ধে আমাদের পক্ষ থেকে কপকোট থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন ট্যুর অপারেটর।”
গত বুধবার বুধবার মুরকেয়ারি থেকে কৌশানি যাচ্ছিলেন ওই ৩০ জন। সকলের জন্যেই ট্যাম্পো ট্রেভেরা গাড়ি বুক করা হয়। তার মধ্যে একটি গাড়ি বাগেশ্বরের কাপকোট থেকে প্রায় ১০ কিলোমিটার দূরে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে খাদে পড়ে যায়। গাড়িটিতে তখন ছিলেন ১২ জন। তাঁদের মধ্যে ৫ জনের মৃত্যু হয়। আর ৭জন গুরুতর আহত হন।
আরও পড়ুন: Suvendu Adhikari: ‘যেদিন স্যান্ডো গেঞ্জির পকেট তৈরি হবে, সেদিন প্রধানমন্ত্রী হবেন দিদিমণি’