Waterborne Disease: জলেই মরণ! দাসপুরে পানীয় জলেই মিলল আন্ত্রিকের জীবাণু
Paschim Medinipur: বুধবার থেকেই দাসপুর ১ ব্লকে স্বাস্থ্য দফতরের তরফ থেকে বিশেষ মেডিক্যাল টিম এলাকা ঘুরে দেখে। নতুন করে যারা অসুস্থ হয়েছেন তাঁদের চিকিৎসার ব্যবস্থাও করেন আধিকারিকরা।
পশ্চিম মেদিনীপুর: এলাকাবাসীর আশঙ্কাই সত্যি হল। দাসপুরের পানীয় জলেই মিলল আন্ত্রিকের (Waterborne Disease) জীবাণু। রিপোর্টে অন্তত এমনটাই উল্লেখ করেছে জেলা স্বাস্থ্য় দফতর। দাসপুরের রাজনগর গ্রাম পঞ্চায়েতের আলুপাড়ায় বেশ কিছুদিন ধরেই পেটের সমস্যায় ভুগছিলেন এলাকাবাসী। একের পর এক আক্রান্তের সংখ্যা হু হু করে বাড়ছিল। অবশেষে পানীয় জলেই মিলল আন্ত্রিকের জীবাণু।
দাসপুরে গত কয়েক দিন ধরেই আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েছে ক্রমশ। বুধবার ব্লক স্বাস্থ্য আধিকারিকের তরফে যে রিপোর্ট আসে, তাতে বলা হয়, ওই এলাকার জল পানের উপযোগী নয়। ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি মিলেছে সেই জলে। তবে কোনধরনের ব্যাকটেরিয়া তা স্পষ্ট করে জানাতে পারেনি ব্লক স্বাস্থ্য দফতর। অবশেষে বৃহস্পতিবার জেলা স্বাস্থ্য দফতরের তরফে বলা হয়, সজলধারার পানীয় জলেই মিলেছে আন্ত্রিকের (Waterborne Disease) জীবাণু।
বুধবার থেকেই দাসপুর ১ ব্লকে স্বাস্থ্য দফতরের তরফ থেকে বিশেষ মেডিক্যাল টিম এলাকা ঘুরে দেখে। নতুন করে যারা অসুস্থ হয়েছেন তাঁদের চিকিৎসার ব্যবস্থাও করেন আধিকারিকরা। অন্যদিকে বুধবার সন্ধেয় এলাকার পানীয় জলের নমুনার পরীক্ষার রিপোর্ট এসে পৌঁছেছে। জেলা স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ শ্যামপদ পাত্র জানান, জলের নমুনা পরীক্ষার রিপোর্টে ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া পাওয়া গিয়েছে। এই জল যাতে কেউ পান করে, সেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
শ্যামপদ বাবু আরও জানান, তিনি ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট দফতর ও রাজনগর গ্রাম পঞ্চায়েতকে নির্দেশ দিয়েছেন আগামী দু দিনের মধ্যে এলাকার এই সজল ধারার পাইপ লাইন সারিয়ে দিতে হবে। জল পরীক্ষা করিয়ে পরিশুদ্ধ পানীয় জলের ব্যবস্থা করার কথাও বলেছেন তিনি। পাশাপাশি, এই কয়েকদিনের জন্য ওই পাড়ায় ভ্রাম্যমাণ পানীয়জলের গাড়ির ব্যবস্থা করার কথা বলা হয়েছে। জেলা স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষ এলাকাবাসীদের অনুরোধ জানিয়েছেন, জল ফুটিয়ে ঠান্ডা করে তবেই তা খেতে হবে।
দাসপুর ১ নম্বর ব্লকের রাজনগর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার আলু পড়ায় গত ৭ থেকে ৮ দিন ধরে এলাকার মানুষ আন্ত্রিকের সমস্যায় ভুগছেন। ইতিমধ্যেই বেসরকারিভাবে আন্ত্রিকে আক্রান্তের সংখ্যা ৫০ ছাড়িয়েছে। অনেকেই সরকারি ও বেসরকারি বিভিন্ন স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠানে চিকিৎসাধীন। অন্যদিকে এই ঘটনাকে ঘিরে ওই পাড়ার বাসিন্দারা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে। তাঁদের অভিযোগ তাঁদের পাড়ার এমন বিপদে পাশে নেই রাজনগর গ্রাম পঞ্চায়েত। এলাকাবাসীর অভিযোগ, একবারের জন্যও আক্রান্তদের পরিবারের পাশে দাঁড়ানো তো দূরে থাক বারে বারে ফোন করেও পাওয়া যায়নি।
স্বাস্থ্য দফতরের তরফে প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হয়েছিল, কালী পুজো থেকে ভাইফোঁটা কয়েকদিন ধরে একাধিক উৎসবের জেরে কোনওভাবে খাবারে বিষক্রিয়া থেকে এমনটা হতে পারে। তবে স্থানীয়দের দাবি কালী পুজোর আগে থেকেই তাঁদের পাড়ায় এই সমস্যা,শুধু এই পাড়া নয় এমন বমি,পায়খানার কমবেশি সমস্যা পাড়ার বাইরেও রয়েছে।
তবে টানা তিন দিন ধরে দাসপুর ১ ব্লক স্বাস্থ্য দফতর ওই পাড়ায় মেডিক্যাল ক্যাম্প করে আক্রান্তের চিকিৎসা করে চলেছে। গঠন করা হয়েছে বিশেষ মেডিক্যাল বোর্ড। মেডিক্যাল টিমের অন্যতম সদস্য ড. প্রসেনজিৎ রায় জানান, আক্রান্তদের চিকিৎসার পাশাপাশি নজর দিতে হবে যাতে নতুন করে আক্রান্তের সংখ্যা না বাড়ে। তাঁর জন্য বিশেষ কয়েক নির্দেশ তিনি দিয়েছেন।
আরও পড়ুন: TMC: ‘গোঁজ প্রার্থী দিলে চামড়া গুটিয়ে নেব’, হুঁশিয়ারি বনগাঁর তৃণমূল সভানেত্রীর