Paschim Medinipur: ‘বন্ধুর সঙ্গে কেন পালাবি!’ ‘শিক্ষা’ দিতে যুগলের কোমরে দড়ি বেঁধে ঘোরাল গ্রামবাসী!

Crime: কেউ কেউ সেই বেঁধে রাখার ছবি মোবাইল বন্দি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ায় ভাইরাল হওয়ার জন্য। সেই ভাইরাল হওয়া সব ভিডিয়ো থেকে শোনা যায়, 'বন্ধুর সঙ্গে কেন পালাবি!' 'এদের দিয়ে সবাইকে শিক্ষা দিতে হবে'- মতো টুকরো টুকরো কথাবার্তা।

Paschim Medinipur: 'বন্ধুর সঙ্গে কেন পালাবি!' 'শিক্ষা' দিতে যুগলের কোমরে দড়ি বেঁধে ঘোরাল গ্রামবাসী!
ভাইরাল হওয়া সেই ছবি
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Nov 11, 2021 | 7:59 PM

পশ্চিম মেদিনীপুর: ‘বন্ধুর সঙ্গে কেন পালাবি!’ ‘এদের দিয়ে সবাইকে শিক্ষা দিতে হবে’। ভিড় বাড়ছে একটা গাছতলায় দড়ি দিয়ে বাঁধা যুগলকে ঘিরে। আর সেই ভিড় থেকে ভেসে আসছে এমনই সব নিদান ও মন্তব্য। ফের উঠল সালিশি সভায় যুগলকে হেনস্থার অভিযোগ! এবার ঘটনাস্থল পশ্চিম মেদিনীপুরের সবং ব্লক।

জানা গিয়েছে, বছর চল্লিশের এক ব্যক্তি এবং কুড়ি বছর বয়সী এক যুবতী ভালবাসার সম্পর্ক ছিল। কিন্তু গ্রামে এই সম্পর্ক এই মানবে না। তাই পালিয়ে গিয়ে দূরে কোথাও থাকার সিদ্ধান্ত নেন তাঁরা। দু’ জনেই বিবাহিত বলে জানা গিয়েছে। তবে তাঁরা ঘর ছেড়ে পালানোর পর গ্রামে চাঞ্চল্য শুরু হয়। তাই ছক কষে ওই দু’জনকে গ্রামে ফিরতে বলেন কয়েকজন মুরুব্বি। তাঁদের কথায় বিশ্বাস করে এদিন পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার সবং ব্লকের ১ নং দেভোগ অঞ্চলের বোলিয়ার বাটিটাকি এলাকায় পা দেন যুগল। আর তার পরেই তাঁদের ঘিরে ধরেন গ্রামবাসীরা। শুরু হয় বিচার। সেই সালিশি সভায় যুগলকে গাছে বেঁধে রাখার নিদান দেওয়া বলে খবর। তার পর বৃহস্পতিবার সকাল থেকে তাঁদের গাছে বেঁধে রাখা হয়। শুধু তাই নয়, এর পর যুগলের কোমরে দড়ি বেঁধে সারা গ্রাম ঘোরানো হয়।

এর মধ্যে অবশ্য খবর পৌঁছয় পুলিশের কাছে। তারা ঘটনাস্থলেও পৌঁছয়। কিন্তু পুলিশকে জানানো হয়, এটা আদিবাসী সমাজের নিজেদের ব্যাপার। সেখানে যেন পুলিশ প্রশাসন হস্তক্ষেপ না করে। এর পর পুলিশ ফিরে যায় বলে খবর।

এদিকে তার পর সারাদিন ধরে যুগলকে বেঁধে রাখা হয়। দানাপানিটুকু জোটেনি তাঁদের। তার মধ্যে তাঁদের শারীরিক হেনস্থারও অভিযোগ ওঠে। সারাদিন দফায় দফায় যুগলকে ঘিরে ভিড় জমান গ্রামবাসীরা। সেখানে প্রায় প্রত্যেকেই তাঁদের কাজের জন্য ‘উপযুক্ত’ শাস্তির কথা বলে। এর মধ্যে কেউ কেউ সেই বেঁধে রাখার ছবি মোবাইল বন্দি করে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ায় ভাইরাল হওয়ার জন্য। সেই ভাইরাল হওয়া সব ভিডিয়ো থেকে শোনা যায়, ‘বন্ধুর সঙ্গে কেন পালাবি!’ ‘এদের দিয়ে সবাইকে শিক্ষা দিতে হবে’- এমন টুকরো টুকরো কথাবার্তা, মশকরা।

স্থানীয় সুত্রে জানা গিয়েছে যুগলের মধ্যে একজনের বাড়ি পিংলার ধনেশ্বরপুর এলাকায়। অপরদিকে মেয়েটির বাড়ি সবংয়ের বাটিটাকি এলাকায়। দুজনেই বিবাহিত। বিবাহিত হওয়া সত্বেও দু’জনের মধ্যে সম্পর্ক কেন এ নিয়ে বসে সালিশি সভা।

এদিকে বিকাল পর্যন্ত এ নিয়ে একাধিক ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়ার পরে নড়েচড়ে বসে প্রশাসন। এর পর বিকালে সবং থানার পুলিশ ও এলাকার বাসিন্দাদের নিয়ে দুই পরিবারের আলোচনা হয় বলে জানা গিয়েছে।

যদিও ফের প্রশ্ন উঠেছে, সালিশি সভায় নিদানের মাধ্যমে কীভাবে নিজেদের হাতে আইন তুলে নিতে পারেন কেউ। গত কয়েক মাসে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গা থেকে এমন খবর উঠে এসেছে। আলিপুরদুয়ারের চ্যাংমারির ঘটনা এখনও অনেকের মনে রয়েছে। এই জেলাতেও এমন ঘটনা ঘটেছে। তবু সালিশি সভায় এমন বিচার প্রক্রিয়া এবং হেনস্থা চলছেই।

আরও পড়ুন: Unknown Fever: ‘বিপদ’ অজানা জ্বর, কেন রায়গঞ্জে হু হু করে বাড়ছে আক্রান্ত শিশুর সংখ্যা?