Paschim Medinipur: বাজি-নিষ্ঠুরতায় গিয়েছে পা, আহত সারমেয়র পাশে মানেকা গান্ধীর স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা
Animal's Life: সংস্থার পক্ষ থেকে সভাপতি আয়ুশী দে জানান, ওই সারমেয়টির অবস্থা ভাল নয়। অস্বাভাবিকভাবে আক্রান্ত হওয়ায় সে এখনও সুস্থ হতে পারেনি। ভয়ে কুঁকড়ে যাচ্ছে।
পশ্চিম মেদিনীপুর: চামড়া উঠে যাওয়া রক্তে ভরা পা’টা ঝুলছে শরীর টা। লেজটিও অবশিষ্ট নেই। গালেও গভীর ক্ষত। এমন অবস্থাতেই কোনওক্রমে ঘুরছিল এক সারমেয়। না, কোনও বাড়ির পোষ্য নয়। রাস্তার ধারে অবহেলাতেই বেঁচে থাকা। সেই সারমেয়র (Dog) পায়ে বাজি বেঁধে ‘উল্লাসে’ মেতেছিল কয়েকজন। পরিণতি এমনই মর্মান্তিক! সেই আহত সারমেয়টিকে অবশেষে উদ্ধার করল মানেকা গান্ধীর স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ‘পিপল ফর অ্যানিম্যাল’ (People For Animal)।
সংস্থার পক্ষ থেকে সভাপতি আয়ুষী দে জানান, ওই সারমেয়টির অবস্থা ভাল নয়। অস্বাভাবিকভাবে আক্রান্ত হওয়ায় সে এখনও সুস্থ হতে পারেনি। ভয়ে কুঁকড়ে যাচ্ছে।ক্ষতস্থানে গ্যাংরিন হয়ে গিয়েছে। দেহের তাপমাত্রাও কম। মেদিনীপুর থেকে রবিবারই তাকে কলকাতায় আনা হয়েছে। কলকাতাতেই তার চিকিত্সা করা হবে। প্রয়োজনে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে কৃত্রিম পা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবেে। পাশাপাশি ঘটনায় অভিযুক্তদের কঠিন শাস্তির দাবি জানিয়েছেন তিনি।
ঠিক কী হয়েছিল? খরিদার ঘোষপাড়ায় ওই কুকুরের বাঁ দিকের পিছনের পায়ে কে বা কারা বাজি বেঁধে দেয়। তাতে পায়ের অর্ধেক অংশ একেবারে উড়ে গিয়েছে। প্রবল যন্ত্রণায় ছটফট করছে সারমেয়টি। ভাল করে গলা ছেড়ে চিল চিৎকার করার মতোও শক্তি নেই ওর। মানুষ দেখলেই কোঁকাচ্ছে। ভয় পাচ্ছে! এই পরিস্থিতিতে সারমেয়টিকে উদ্ধার করে স্থানীয় কিছু যুবক। খবর দেওয়া হয় এলাকার পশুপ্রেমী সংস্থায়। সেখান থেকেই খবর যায় ‘পিপল ফর অ্যানিম্যাল’-এ। দ্রুত সারমেয়টিকে উদ্ধার করে আনা হয়।
খড়গপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রানা মুখোপাধ্যায় বলেন, “প্রাথমিকভাবে মনে হচ্ছে অল্পবয়সী নিছক মজা করার জন্য অথবা কিছু যুবক মত্ত অবস্থায় পটকা ফাটিয়ে এই কাণ্ডটি করেছে। আট-ন’জনকে আমরা আটকও করেছি। আমরা পশুর উপর নিষ্ঠুর আচরণের আইনের ধারায় মামলা রুজু করেছি।”
খড়গপুর পৌরসভার প্রশাসক প্রদীপ সরকার বলেন, “এটা অমানবিক কাজ, ন্যক্কারজনক কাজ। যে এই কাজ করেছে তার বিরুদ্ধে অভিলম্বে ব্যবস্থা নেয়া উচিত। আমরা পুলিশকে জানিয়েছি যারা এই ধরনের ঘৃণ্য মানসিকতার কাজ করেছে। তাদেরকে গ্রেফতার করে কড়া শাস্তি দেয়া হোক।”
মনোবিদ সুজিত সরখেলের প্রতিক্রিয়া, “আমাদের মেন্টাল ডিসঅর্ডারের সেকশনে এটাকে আমরা কনট্যাক্ট ডিসঅর্ডার বলি। বড় হলে অ্যান্টিসোশ্যাল পার্সোনালিটি হয়। এই পশু বা যারা অসহায় তাদের প্রতি অত্যাচার করে খুব আনন্দ পায়। তার জন্য পরবর্তী কালে কোনও অনুতাপও কাজ করে না। এই ধরনের ঘটনা যেটা ঘটেছে এটা কোনও সুস্থ স্বাভাবিক মানুষের কাজ হতে পারে না। যারা এগুলো করছে তাদের অবশ্যই শনাক্ত করা দরকার এবং আলাদা করে ডিলও করা উচিৎ। কারণ, পরবর্তী কালে এরা অন্যান্য অপরাধও খুব সহজেই করতে পারে।”
আদালতের নির্দেশিকাকে অবমাননা করেই কালীপুজোর রাত থেকে দেদার শব্দবাজি ফাটছে চারপাশে। আকাশে আলোর ঝলকানি, বারুদের গন্ধে ম ম করছে বাতাস। ওদিকে ঘরের ভিতর শ্বাসের কষ্ট নিয়ে হয়তো ধুঁকছে কারও প্রিয়জন। অতশত ভাবলে যে আনন্দ করা যায় না। তাই তা ভাবছেনও না অনেকেই। তা বলে একটা অবলা সারমেয়র পায়ে বাজি বেঁধে আনন্দ খোঁজার কি সত্যি খুব দরকার ছিল? এমনই প্রশ্ন সংশ্লিষ্ট মহলের।
আরও পড়ুন: Weather: বঙ্গোপসাগরে আরও একটি ঘূর্ণাবর্তের আশঙ্কা, হিমেল পরশেও ঝরতে পারে ঘাম