দিল্লিতে বন্ধঘরে বসে বাম-কংগ্রেস-তৃণমূল মিলে কী করে? হলদিয়ায় বিস্ফোরক মোদী

বাম-কংগ্রেস-তৃণমূল মিলে ম্যাচ ফিক্সিং করছে, পূর্ব মেদিনীপুরের সভায় আক্রমণাত্মক প্রধানমন্ত্রী

দিল্লিতে বন্ধঘরে বসে বাম-কংগ্রেস-তৃণমূল মিলে কী করে? হলদিয়ায় বিস্ফোরক মোদী
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Feb 07, 2021 | 9:37 PM

হলদিয়া: বাম, কংগ্রেস ও তৃণমূল মিলে দিল্লিতে বন্ধঘরে বসে শলা পরামর্শ এবং ষড়যন্ত্র করে। তাই বাম ও কংগ্রেসকে ভোট দেওয়া মানে ষড়যন্ত্রের শিকার হওয়া। ঠিক এভাবেই রাজ্য়ের শাসক দল ও বাকি দুই বিরোধী দলকে এক সারিতে ফেলে আক্রমণ শানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রবিবার হলদিয়ার সভা থেকে প্রধানমন্ত্রীর অভিযোগ, বাংলার উন্নয়নের পথে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

রবিবার ভোটমুখী বাংলায় প্রথম রাজনৈতিক সভা করলেন নরেন্দ্র মোদী। হলদিয়ার সভা থেকে মোদীর মন্তব্য, ‘‘বাংলার মানুষ মমতার সরকারকে নিয়ে আশায় ছিলেন। কিন্তু গত ১০ বছরে নির্মমতা দেখেছেন তাঁরা।’’ এই প্রসঙ্গে ২০১১ সালের বিধানসভা ভোটের প্রসঙ্গ তুলে প্রধানমন্ত্রীর কটাক্ষ, বাংলায় যে সরকার এসেছে তা পরিবর্তন নয়। তাঁর কথায়, ‘‘রাজ্যে বাম শাসনের পুনর্জন্ম হয়েছে। তার মানে দুর্নীতির পুনর্জীবন, হিংসার পুনর্জীবন, অত্যাচারের পুনর্জীবন।’’ এই বিধানসভা ভোটে বাম-কংগ্রেস-তৃণমূল মিলে রাজনীতিতে ম্যাচ ফিক্সিং করছে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কথায়, দিল্লিতে বাম, কংগ্রেস ও তৃণমূল বন্ধঘরে বসে ষড়যন্ত্র করে। তাই আসন্ন ভোটে বিজেপির লড়াই তৃণমূলের সঙ্গে তো বটেই। কিন্তু তাদের ‘লুকিয়ে থাকা বন্ধুদের থেকেও সাবধান থাকতে হবে’ বলে কংগ্রেস ও বামেদেরও নিশানা করেন প্রধানমন্ত্রী।

সভাস্থলের ছবি

প্রসঙ্গত, একুশের ভোটে বাম ও কংগ্রেসের জোট চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। এদিকে বিজেপিকে হারাতে ধর্মনিরপেক্ষ শক্তিকে একজোট হওয়ার আহ্বান করেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। যদিও বিভিন্ন সভা থেকে তিনিও অভিযোগ করেন এ রাজ্য়ে বাম ও কংগ্রেসের সঙ্গে গোপনে বোঝাপড়া রয়েছে বিজেপির। মমতার কথায়, রাজ্যের তিন বিরোধী দল ‘অঙ্কা, বঙ্কা ও শঙ্কা’। এবার বঙ্গ সফরে এসে প্রধানমন্ত্রী আবার বাম, কংগ্রেস ও তৃণমূলের মধ্যে ‘গোপন বোঝাপড়া’র দিকে ইঙ্গিত করলেন। তাঁর কথায়, বাংলায় নাটক করে ঝগড়া করে বাম ও তৃণমূল। তাই বাম-কংগ্রেসকে ভোট দেওয়া মানে ষড়যন্ত্রের শিকার হওয়া।

আরও পড়ুন: গরিব মানুষকে ভোটে ব্যবহার বড় অপরাধ, হলদিয়ায় বললেন প্রধানমন্ত্রী

বাংলার উন্নয়ন নিয়ে তৃণমূল ও তাদের পূর্বতন বাম ও কংগ্রেস সরকারের তীব্র সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘‘এখানকার (পশ্চিমবঙ্গ) সবচেয়ে বড় সমস্যা হল রাজনীতি। প্রথমে কংগ্রেস শাসনে দুর্নীতি হল। তারপর বামেরা এসে দুর্নীতির সঙ্গে অত্যাচার শুরু করল। ২০১১ সালে গোটা দেশের নজর বাংলায় ছিল। তখন মমতা দিদি পরিবর্তনের প্রতিজ্ঞা করলেন। মানুষ ভরসা করল। কিন্তু দশ বছরে মমতার সরকারের কাছ থেকে আরও নির্মমতা পেল মানুষ।’’ তাঁর আরও অভিযোগ, মমতা সরকারের প্রথম বছরেই বামেদের পুনর্জন্ম হয়েছে। অর্থাৎ, সেই দুর্নীতি ও হিংসা ফিরে এলো সুদ সমেত। বিধানসভা নির্বাচনের আগে রাজ্যে তাঁর প্রথম রাজনৈতিক জনসভায় মোদী বলেন, ‘‘বাংলায় এ বার আসল পরিবর্তন আসবে।’’ বিজেপিই এবার বাংলায় সরকার গড়বে।

বাংলায় ক্ষমতা দখল করতে বিজেপির প্রধান প্রতিপক্ষ তৃণমূল হলেও বাম-কংগ্রেস জোটকে যে কোনওভাবে খাটো করে দেখা যাবে না, বঙ্গ বিজেপিকে যেন এদিন সেই বার্তাই দিলেন মোদী। রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে, বাংলার নির্বাচনে বাম-কংগ্রেস জোটের ভোটবাক্সের দিকেও বাড়তি নজর দিতে হবে বিজেপিকে। তাই রাজ্যের শাসক দলের পাশাপাশি বাম-কংগ্রেসকে আক্রমণ করে আসলে নিজের দলকে বার্তা দিয়ে রাখলেন মোদী। এমনই মনে করছে রাজনৈতিক মহল।