তৃণমূলের পার্টি অফিস যেন আধার কার্ড তৈরির কারখানা! ৫০০ টাকা দিলেই নাগরিক পরিচয়পত্র

Aadhar Card: স্থানীয়দের অভিযোগ, তৃণমূল পার্টি অফিসের মধ্যে গত কয়েক দিন ধরে ৫০০ ও হাজার টাকা নিয়ে আধার কার্ড দেওয়া হচ্ছিল। পার্টি অফিসের ভিতরেই বসেছে বায়োমেট্রিক মেশিন। সেখান থেকেই টাকা নিয়ে সাধারণ মানুষকে আধার কার্ড নিতে হচ্ছে বলে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করেন তাঁরা।

তৃণমূলের পার্টি অফিস যেন আধার কার্ড তৈরির কারখানা! ৫০০ টাকা দিলেই নাগরিক পরিচয়পত্র
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: Aug 30, 2021 | 11:58 PM

কালনা: তৃণমূল (TMC) পার্টি অফিস যেন আধার কার্ড (Aadhar Card) তৈরির কারখানা। ৫০০, ১,০০ টাকা ফেললেই পাইকারি হারের মতো মিলবে নাগরিক পরিচয়পত্র! পার্টি অফিসের মধ্যে রীতিমতো বায়োমেট্রিক মেশিন বসিয়ে টাকার বিনিময়ে আধার কার্ড দেওয়ার অভিযোগ উঠল শাসক শিবিরের বিরুদ্ধে। সোমবার এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়াল পূর্ব বর্ধমানের কালনার পূর্ব সাতগাছিয়া শাসপুর তৃণমূল যুব কংগ্রেসের কার্যালয়ে। ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজনৈতিক থেকে প্রশাসনিক মহলে ছড়াল চাঞ্চল্য।

স্থানীয়দের অভিযোগ, তৃণমূল পার্টি অফিসের মধ্যে গত কয়েক দিন ধরে ৫০০ ও হাজার টাকা নিয়ে আধার কার্ড দেওয়া হচ্ছিল। পার্টি অফিসের ভিতরেই বসেছে বায়োমেট্রিক মেশিন। সেখান থেকেই টাকা নিয়ে সাধারণ মানুষকে আধার কার্ড নিতে হচ্ছে বলে চাঞ্চল্যকর অভিযোগ করেন তাঁরা। এদিকে বিরোধীদের অভিযোগ, কালনা ২ নম্বর তৃণমূলের ব্লক সভাপতি প্রণব রায়ের নেতৃত্বেই চলছে এই কারবার। যদিও এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি।

স্থানীয়দের অভিযোগ, গত দু’দিন ধরে তৃণমূল পার্টি অফিসের ভেতরে বায়োমেট্রিক বসিয়ে রীতিমতো আধার কেন্দ্র তৈরি করে ফেলেন কয়েকজন তৃণমূল নেতা। আর সেখানে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে চলছে নাগরিক পরিচয়পত্র তৈরির কাজ। স্থানীয় কয়েকজনই হাতেনাতে ধরে ফেলে এই চক্রের সঙ্গে যুক্ত মূলপাণ্ডাদের। মারধোর করে পার্টি অফিসে আটকেও রাখা হয় অভিযুক্তদের। যদিও সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করেছে তৃণমূল।

এদিকে এক প্রৌঢ়া জানান, তাঁর আধার কার্ডের খুব দরকার ছিল। কয়েকজনের কাছে খবর পেয়ে আসেন। আধার কার্ডের বিনিময়ে তাঁর কাছে ৫০০ টাকা নেওয়া হয়। একই অভিযোগ করেছেন আরও বেশ কয়েকজন। বাপ্পা দত্ত নামে এক আধার কর্মী আবার জানান, বহরমপুর থেকে তাঁরা কাজ করেন। এখানে জনৈক তৃণমূল নেতা গণেশ তাঁকে পার্টি অফিস থেকে কাজ করতে বলেন তাঁকে। তবে তিনি কোনও টাকা নেননি। জনৈক কার্ত্তিকদা ৫০০ টাকা নিয়েছিলেন একজনের কাছে। কিন্তু কোনও পার্টি অফিসে বসে আধার কার্ড তৈরি করা যায় কি? সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারেননি তিনি।

তৃণমূলের ব্লক সভাপতির ফোন মারফত প্রতিক্রিয়া, “যাঁরা অভিযোগ করেছে তারা তৃণমূল দলের কেউ নয়, এক তৃণমূল ঘনিষ্ঠ প্রমোটার আমাদের বদনাম করছে।” ব্লক সভাপতির ঘনিষ্ঠ সুব্রত দাস জানিয়েছে তাঁদের পার্টি অফিসে বিনা পয়সাতেই আধার কার্ড করার কথা ছিল। কিন্তু  টাকা নেওয়া হচ্ছিল সেটা তাঁরা জানতেন না। তবে যাঁরা আধার কার্ড তৈরি করছিলেন তাঁদের বক্তব্য, বহরমপুর থেকে এসেছিলেন এক স্থানীয় তৃণমূল নেতার কথায়।

এদিকে এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে যোগাযোগ করা হয় পূর্ব বর্ধমানের জেলাশাসকের সঙ্গে। তিনি বলেন, “এইভাবে আধার কার্ড করা যায় না। সম্পূর্ণ বেআইনিভাবে এটা হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে খোঁজ নিয়ে দেখব।” অন্যদিকে এই ঘটনার বিডিও দেবল উপাধ্যায়ের প্রতিক্রিয়া, “এই ভাবে আধার কার্ডের কাজ করা যায়না।বিষয়টি খোঁজ নেব।” আরও পড়ুন: ‘বিশ্বভারতী ভাল চলছে, তাই তৃণমূলের কষ্ট হচ্ছে,’ অনুব্রতকে নিশানা দিলীপের