Ayushgram Murder: কয়েক মাস আগেই নিরিবিলি জায়গায় বাড়ি করেন, বাবার অবর্তমানে মায়ের পাশে ছেলের চরম অবস্থা দেখে বাকরুদ্ধ পড়শিরা
Ayushgram Murder: মাস ন'য়েক আগে গ্রামের ধারে মাঠের কাছাকাছি ঘর করে বসবাস শুরু করেন।বাড়ির সীমানাপ্রাচীর নেই।
পূর্ব বর্ধমান: মা-ছেলের তুমুল ঝগড়া চলছে। শুনতে পেয়েছিলেন প্রতিবেশীরা। কিন্তু এ যে রোজকার বিষয়! তাই আর মাথা ঘামাননি। বেশ কিছুক্ষণ পর সব স্বাভাবিকও হয়ে যায়। ফলে আরও বিশেষ কিছু মাথায় আসেনি তাঁদের। কিন্তু যে মহিলা সর্বক্ষণ বাড়ির কোনও না কোনও কাজ করে যান, উঠোন ঝাড় দেন, তাঁকে দীর্ঘক্ষণ দেখতে পাচ্ছিলেন না প্রতিবেশীরা। তাই স্রেফ খোঁজ নিতেই ঘরে গিয়েছিলেন। ঘরের মেঝেতে পা রাখতেই রীতিমতো ছ্যাঁৎ করে ওঠে তাঁদের বুক। মেঝেতে চাপ চাপ রক্ত। খাটের সামনে উপুড় হয়ে পড়ে রয়েছে বৃদ্ধার শরীরটা। কোনও সার নেই তাতে। আর পাশেই বসে ছেলে। হাতে লাগা রক্ত ততক্ষণে শুকিয়ে গিয়েছে। বৃদ্ধার মাথার সামনের অংশ থেঁতলে গিয়েছে। রক্ত শুকিয়ে কালচে হয়েছে। মাকে খুনের অভিযোগ উঠল ছেলের বিরুদ্ধে। ভয়ঙ্কর ঘটনাটি ঘটেছে পূর্ব বর্ধমানের আউশগ্রামের ধানকুড়া গ্রামে। মৃতের নাম মনি পাল (৪২)।
মঙ্গলবার সকালে বাড়ি থেকেই মনি পালের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মৃতদেহের পাশে তখনও বসে ছিলেন ঘাতক ছেলে অমর পাল। তাঁকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
ধনকুড়া গ্রামের বাসিন্দা পরিমল পাল ও মনিদেবীর একমাত্র ছেলে বছর কুড়ির অমর। পরিমল রাঁধুনীর কাজ করেন। কোনওরকমে সংসার চলে। কাজের জন্য পরিমলকে অধিকাংশ সময়েই বাইরে থাকতে হয়। কয়েকদিন আগেই তিনি পর্যটকদের একটি দলের সঙ্গে রান্নার কাজে ভিন রাজ্যে গিয়েছেন। বাড়িতে ছেলেকে নিয়ে ছিলেন মনিদেবী।
আগে গ্রামের মধ্যে থাকতেন পরিমল। মাস ন’য়েক আগে গ্রামের ধারে মাঠের কাছাকাছি ঘর করে বসবাস শুরু করেন।বাড়ির সীমানাপ্রাচীর নেই। মঙ্গলবার সকালে স্থানীয় বাসিন্দারা দেখতে পান ঘরের মেঝেতে পড়ে রয়েছেন মনি। রক্তে ভেসে গিয়েছে মেঝে। পাশেই বসেছিলেন অমর।
খবর চাউর হয়ে যায় এলাকায়। পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। ছোড়া ফাঁড়ির পুলিশ গিয়ে দেহটি উদ্ধার করে। স্থানীয়রা জানান, ক্লাস সেভেনে পড়ার সময় থেকেই অমরের মানসিক সমস্যা দেখা দিতে শুরু করে। অনেত চিকিৎসাও করানো হয়েছিল। কিন্তু কাজে আসেনি কিছুই।
গ্রামবাসীরা জানান, অমর নাকি এর আগেও তাঁর মাকে মারধর করেছিলেন। দেড় বছর আগে মনিকে বটি দিয়ে কোপান। তখন প্রতিবেশীরা চলে এলে মনি বেঁচে গিয়েছিলেন। কিন্তু এখন মাঠের মাঝে বাড়ি হওয়ার কারণে দূরত্ব কিছুটা বাড়ে। পুলিশের প্রাথমিকভাবে সন্দেহ, মনির মাথা ঘরের মেঝেতে ঠুঁকে থেঁতলে খুন করা হয়েছে। দেহ ময়নাতদন্তের জন্য বর্ধমান মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।