Katwa Hospital: এক বছর ধরে মর্গে পড়ে দেহ, আদালতের নির্দেশের পর তৎপর কাটোয়া হাসপাতাল
Katwa Hospital: সম্পত্তি নিয়ে আদালতে চলছে মামলা। গোত্র আলাদা বলে সৎকার করতে চাননি আত্মীয়া। এবার আদালতের নির্দেশে শুরু হল তৎপরতা।
কাটোয়া : বিবাহের পর গোত্র আলাদা তাই নিঃসন্তান কাকিমার মৃতদেহ সৎকার করবেন না, এমনটাই বলেছেন আত্মীয়া। তাই গত এক বছরের বেশি সময় ধরে কাটোয়া হাসপাতালের মর্গে পড়ে রয়েছে এক বৃদ্ধার দেহ। সম্প্রতি কলকাতা হাইকোর্ট সেই মামলায় নির্দেশ দিয়েছে, যাতে অবিলম্বে মৃতদেহ সৎকার করা হয়। এবার আদালতের নির্দেশে সেই মৃতদেহ সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় নথি পাঠানো হল সংশ্লিষ্ট চিকিৎসক কমিটির কাছে। বুধবার কাটোয়া হাসপাতালে সুপার সৌভিক আলম জানিয়েছেন, মামলা সংক্রান্ত চিকিৎসক কমিটির তরফ থেকে কাটোয়া হাসপাতালের বেশ কিছু প্রয়োজনীয় কাগজপত্র চাওয়া হয়, তা পাঠিয়ে দিয়েছেন তিনি। কেউ এগিয়ে না এলে রাজ্য সরকার এই মৃতদেহের সৎকার করবে বলে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে আদালতের তরফে।
মৃত বৃদ্ধার সম্পত্তির দাবিদার হতে চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন তাঁর আত্মীয়া রমা বন্দ্যোপাধ্যায়। এক বছরেরও বেশি সময় ধরে মর্গে মৃতদেহ এ ভাবে পড়ে থাকার ঘটনা বিরল। সুপার সৌভিক আলম জানিয়েছেন, তিনি হাসপাতালে যোগ দেওয়ার আগে থেকেই ওই মৃতদেহ পড়ে রয়েছে মর্গে।
কাটোয়ার বালিকা রোডের বাসিন্দা নিঃসন্তান রমা বন্দ্যোপাধ্যায় অসুস্থ হয়ে কাটোয়া হাসপাতালে ভর্তি হন ২০২১ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি। তাঁকে ভর্তি করেন তাঁর বাড়ির পরিচালক নূর হক মল্লিক। তাঁকেই নিজের সমস্ত সম্পত্তি লিখে দিয়েছিলেন রমা দেবী। দুদিন পরেই কাটোয়া হাসপাতালে মৃত্যু হয় রমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সেই থেকেই কাটোয়া হাসপাতালের মর্গে মৃত রমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মৃতদেহ পড়ে রয়েছে। মায়া মজুমদার নিজেকে সমস্ত সম্পত্তির উত্তরাধিকারী বলে দাবি করে আদালতের দ্বারস্থ হয়েছেন। কিন্তু তাঁকে যখন সৎকারের কথা জিজ্ঞাসা করা হয়, তখন তিনি জানান, বিয়ে হওয়ার পর গোত্র বদলে গিয়েছে। তাই সৎকার করতে পারবেন না তিনি।
প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চে চলছে সেই মামলার শুনানি। মায়া মজুমদারের অভিযোগ, সম্পূর্ণ মিথ্যা উপায়ে ওই সম্পত্তি পেয়েছেন নূর হক। কী ভাবে রমা দেবীর মৃত্যু হল, তা নিয়েও সন্দেহ প্রকাশ করেছিলেন তিনি। সিবিআই তদন্তের দাবি জানিয়েছিলেন মায়া মজুমদার।
প্রধান বিচারপতি এই অভিযোগ ভিত্তিহীন বলে জানিয়ে দিয়েছেন। নূর হকের দাবি, রমা দেবীর হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার খবর সেই খবর মায়া দেবীকে জানিয়েছিলেন নূর। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষও রমা দেবীর মৃত্যুকে স্বাভাবিক বলে জানায়। সেই সঙ্গে এও জানা যায়, মায়া মজুমদার একদিনও রমা দেবীকে দেখতে আসেন নি হাসপাতালে। প্রায় ন’বছর ধরে রমা দেবীর দেখভাল করতেন নূর হক ও তাঁর পরিবার।