Pm Awas Yojana: দোতলা বাড়ি থাকা সত্ত্বেও নাম আবাস যোজনার তালিকায়, তৃণমূল নেতা বললেন…
Awas Yojana: আবাস যোজনায় নতুন করে সার্ভে করার পর সেই নতুন তালিকাতেও সামনে এসেছে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ।
বর্ধমান: ঝা চকচককে দোতলা বাড়ি। অথচ তৃণমূলে নেতার মায়ের নাম রয়েছে আবাস যোজনার তালিকায়। পূর্ব বর্ধমানের মেমারী ১ নম্বর ব্লকের দুর্গাপুর গ্রামপঞ্চায়েত এলাকা ঘটনা।
আবাস যোজনায় নতুন করে সার্ভে করার পর সেই নতুন তালিকাতেও সামনে এসেছে একাধিক দুর্নীতির অভিযোগ। স্থানীয়দের অভিযোগ, সম্প্রতি দুর্গাপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকাতেও নতুন করে আবাস যোজনার সার্ভে করা হয়। সেখানে দুর্গাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের ১৮ নম্বর সংসদে নতুন করে সার্ভে বাদ পড়েছে একাধিক নামের তালিকা।
স্থানীয় বাসিন্দা সেখ নাসিরের অভিযোগ, কাচা বাড়িকে পাকা বাড়ি দেখিয়ে পরিকল্পিত ভাবে তালিকা থেকে একাধিক উপভোক্তার নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। আর তাতেই ক্ষোভে ফুঁসছে মেমারি ১ নম্বর ব্লকের দুর্গাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বাসিন্দারা । একই অভিযোগ করেন এলাকার বাসিন্দা আজমিরা বিবি। তিনি বলেন, “আমাদের মাটির বাড়ি। অথচ তালিকায় আমাদের নাম নেই।”
স্থানীয় তৃণমূল নেতা অভিজিৎ ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে স্বজন পোষনের অভিযোগ তুলছেন গ্রামবাসীরা। তাঁরা বলেন, পরিকল্পিতভাবে আবাস যোজনার তালিকা থেকে যোগ্য ব্যক্তিদের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে। অথচ তৃণমূল নেতা অভিজিৎ ভট্টাচার্যের ঝা চকচকে দোতল বাড়ি থাকা সত্ত্বেও, তার মা অনুপমা ভট্টাচার্যের নাম রয়েছে আবাস যোজনার তালিকায়।
তৃণমূল নেতা অভিজিৎ ভট্টাচার্যের মা অনুপমা ভট্টাচার্য বলেন, “সম্প্রতি যারা ওই এলাকায় সার্ভে করেছে তারা তাদের বাড়িতে যায়নি। পরিকল্পিতভাবে আবাস যোজনার তালিকায় তাদের নাম রেখে তাদের সম্মানহানি করার চেষ্টা করা হয়েছে।” তিনি আরও বলেন, “আমার দোতল বাড়ি রয়েছে তাই সরকারি কোনও বাড়ির প্রয়োজন নেই। প্রকৃত অর্থে যারা যোগ্য তাদেরই বাড়ি দেওয়া হোক।”
তৃণমূল নেতা অভিজিৎ ভট্টাচার্য তার বিরুদ্ধে স্বজন পোষণের অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে পাল্টা অভিযোগ করছেন সার্ভে করতে আসা আধিকারিকদের বিরুদ্ধে। তিনি বলেন, “যারা সার্ভে করতে এসেছিলেন তাদের বলা হয়েছে তাদের বাড়ি কোনওরকম প্রয়োজন নেই। তিনি প্রশাসনের দিকে আঙুল তুলে বলেন, “প্রশাসন যাদেরকে সার্ভে করতে পাঠিয়েছেন তারা সঠিকভাবে সার্ভে করেননি। ফলে আবাস যোজনার তালিকায় আমার মায়ের নাম রেখে দেওয়া হয়েছে। আমরা ইতিমধ্যেই মহকুমা শাসকের কাছে ই-মেইল মারফত নামের তালিকা থেকে মায়ের নাম বাদ দেওয়ার জন্য অনুরোধ জানিয়েছি। তবে কেউ তাদের মধ্যে আবাস যোজনা তালিকায় আমাদের নাম রেখে সম্মানহানি করার চেষ্টা করছেন। যাদের আবাস যোজনার তালিকা থেকে কাচা বাড়িতে পাকা দেখিয়ে নাম বাদ দেওয়া হয়েছে তাদের বাড়ি ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য আমরাও দলীয়ভাবে কাজ করে যাচ্ছি।”
মেমারি ১ নম্বট ব্লকের বিডিও আলি মোঃ ওয়ালিউল্লাহর সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, “সার্ভে প্রক্রিয়া এখনও সম্পন্ন হয়নি। দুর্গাপুর গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকার সার্ভে প্রক্রিয়া আমরা শেষের দিকে রেখেছি। ওই এলাকা থেকে একাধিক অভিযোগ এসেছে। সেই মতো এখনো বেশ কয়েকটি পর্যায়ে সার্ভে প্রক্রিয়া সম্পন্ন করার পর চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করা হবে। তবে সঠিকভাবে সার্ভে করা হয়নি যে অভিযোগ করা হচ্ছে তা ভিত্তিহীন। যারা সার্ভে করছেন তাদের সঙ্গে আশা কর্মী ও ভিআরপির পাশাপাশি ব্লকের দু’জন করে আধিকারিক থাকছেন। তাদের সার্ভে রিপোর্ট জমা পড়ার পর বেশ কয়েকটি পর্যায়ে ওই তালিকা ক্ষতিয়ে দেখে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশিত হবে।”
জেলা বিজেপির সাধারণ সম্পাদক মৃত্যুঞ্জয় চন্দ্র বলেন, “এখন চুরি ধরা পড়া গেছে বলে নাম বাদ দেওয়ার কথা বলছে। আসলে তৃণমূল কংগ্রেসের নেতারা সবাই চোর। এটা আর একবার প্রমাণিত হল। গ্রামের গরিব মানুষের নাম নেই আবাস যোজনার তালিকায়। অথচ বিত্তশালী তৃণমূল নেতার মায়ের নাম আছে। বিজেপি প্রথম থেকেই এই অভিযোগ করে আসছিল। এখন তাদের দাবি যে সত্যি সেটা সবাই দেখতে পাচ্ছেন। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাকে দিয়ে তদন্ত করে আবাস যোজনার বাড়ি দেওয়ার দাবি জানান তিনি।”
জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের মুখপাত্র প্রসেনজিৎ দাস বলেন, “ওই জন্যই তো প্রশাসন সার্ভে করছে। ভুল করে কিংবা অন্যায় ভাবে কোনও নাম তালিকায় থাকলে বাদ পড়বে। সরকার সঠিক মানুষকে বাড়ি দেবে।”