Sign In

By signing in or creating an account, you agree with Associated Broadcasting Company's Terms & Conditions and Privacy Policy.

‘রাবণ’ সুনীল মণ্ডলের নামে পোস্টার তৃণমূলের! জায়গা নেই, বলল বিজেপিও

“সুনীল মণ্ডল হলেন নীতি-আদর্শহীন, ক্ষমতার মধু খাওয়া রাজনীতিক। বিজেপি বাংলায় ক্ষমতায় আসছে, এমন হাওয়া উঠতেই উনি বিধানসভা ভোটের আগে ক্ষমতার মধু খাওয়ার বাসনা নিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন।'' বক্তব্য বিজেপির

'রাবণ' সুনীল মণ্ডলের নামে পোস্টার তৃণমূলের! জায়গা নেই, বলল বিজেপিও
নিজস্ব চিত্র
Follow Us:
| Updated on: Jun 18, 2021 | 7:02 PM

পূর্ব বর্ধমান: বিজেপি (BJP)-তে তিনি সম্মান পাচ্ছেন না। দিলীপ ঘোষ, শুভেন্দু অধিকারী, তথাগত রায় এমনকি কেন্দ্রীয় বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে বিস্ফোরক মন্তব্য করে বিজেপি ত্যাগের জল্পনা উস্কে দিয়েছেন বর্ধমান পূর্বের সাংসদ সুনীল মণ্ডল (Sunil Mandal)। ফের তাঁর তৃণমূলে (TMC) ফেরার ইঙ্গিত তৈরি হতেই বিক্ষোভ ঘাসফুলের কর্মীদের। ঠারেঠারে তাঁরা বোঝাতে চাইছেন তৃণমূলেও জায়গা হবে না সাংসদের।

শুক্রবার জামালপুরে সাংসদকে রাবণ সাজিয়ে পড়ল পোস্টার ও ফ্লেক্স। বিজেপির কেন্দ্র ও রাজ্য নেতাদের মুখমণ্ডল সহযোগে সুনীল মণ্ডলকে ‘রাবণ রাজনীতিক’ বলে তৈরি হয়েছে ওই ফ্লেক্স। তাতে সাংসদকে ‘বাংলা ও বাঙালির শত্রু’ বলে মন্তব্য করা হয়েছে। এমন ফ্লেক্সেই এখন ছয়লাপ জেলার জামালপুর বিধানসভার শুড়েকালনা এলাকা। এমনকি সেই ফ্লেক্স নিয়ে মিছিলও করলেন তৃণমূল কর্মীরা। যা নিয়ে আলোড়ন পড়ে গিয়েছে রাজনৈতিক মহলে।

সুনীল মণ্ডল ফের তৃণমূলে ফিরবেন এমন জল্পনা তৈরি হতেই শাসক শিবিরে জোরাল হচ্ছে ক্ষোভ-বিক্ষোভ। রাবণের অনুকরণে সুনীলের মুখের বামদিকে এক মুখুগুলিতে রাখা হয়েছে রাজ্য বিজেপি সভাপতি দিলীপ ঘোষ, শুভেন্দু অধিকারী, সায়ন্তন বসু ও অর্জুন সিংয়ের ছবি। আর ডান দিকে রাখা হয়েছে নরেন্দ্র মোদী, অমিত শাহ এবং কৈলাশ বিজয়বর্গীয়, জেপি নাড্ডা ও যোগী আদিত্যনাথের মুখ।

সেই ছবির নিচে লেখা ‘বাংলা ও বাঙালির শত্রু’। আবার এই বিজেপি নেতারের মুখের ছবির একেবারে উপরের অংশে লেখা হয়েছে, “কৃষকের শত্রু, আম্বানী-আদানীর কাছে দেশ বিক্রির ষড়যন্ত্রকারী”। ছবির একেবারে নিচে আবার সুনীল মণ্ডলকে কটাক্ষ করে লেখা রয়েছে, “রাজনীতির ব্যাপারী, নীতি আদর্শহীন, গিরগিটি, গদ্দার সুনীল মণ্ডলের তৃণমূলে ঠাঁই নাই।” রাস্তার ধারে ঝুলে থাকা এমন একের পর এক পোস্টার দেখে পথচারীরাও থমকে দাঁড়িয়ে পড়ছেন।

সুনীল মণ্ডলকে নিয়ে তাদের আপত্তির কারণ স্পষ্ট করলেন জেলা তৃণমূলের সম্পাদক প্রদীপ পাল। তিনি বলেন , “তৃণমূলের প্রতীকে ভোটে লড়ে সুনীল মণ্ডল সাংসদ হয়েছিলেন। অথচ বিধানসভা ভোটের প্রাক্কালে তিনি শুভেন্দু অধিকারীর হাত ধরে বিজেপিতে যোগ দেন। বিভিন্ন নির্বাচনী জনসভা থেকে সনীল মণ্ডল তৃণমূল নেত্রী-সহ দলের পদাধীকারীদের কুৎসিত ভাষায় আক্রমণ করেছেন। ভোটের ফল প্রকাশের পর তৃণমূলের নেতা নেত্রীদের বিরুদ্ধে বদলা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন প্রকাশ্যে। কিন্তু ভোটে বিজেপির ভরাডুবির পর এখন সুনীল ভোলবদল করেছেন।”

ওই তৃণমূল নেতা আরও যোগ করেন, “তৃণমূলে ফেরার জল্পনা জাগিয়ে সুনীলবাবু এখন সরব হয়েছেন শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে। কিন্তু দলের কর্মীরা কেউ চান না যে সুনীল আবার তৃণমূলে ফিরুন। সেই দাবির বিষয়টি তুলে ধরতেই এই অভিনব প্রতিবাদে কর্মীরা নেমেছেন।”

এদিকে, এমন কটাক্ষপূর্ণ পোস্টার ও ফ্লেক্সের বিষয় নিয়ে সুনীল মণ্ডলকে ফোন করা হলে তাঁর সাড়া মেলেনি। অন্যদিকে জামালপুর বিধানসভায় বিজেপির আহ্বায়ক জিতেন ডকালের কটাক্ষ, “সুনীল মণ্ডল হলেন নীতি-আদর্শহীন, ক্ষমতার মধু খাওয়া রাজনীতিক। বিজেপি বাংলায় ক্ষমতায় আসছে, এমন হাওয়া উঠতেই উনি বিধানসভা ভোটের আগে ক্ষমতার মধু খাওয়ার বাসনা নিয়ে বিজেপিতে যোগ দিয়েছিলেন। বিজেপি জিততে না পারায় এখন উনি শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসে ফেরার জন্য ব্যাকুল হয়ে উঠেছেন।” সঙ্গে জিতেনবাবু যোগ করেন, তাঁরাও চান না সুনীল মণ্ডল বিজেপিতে থাকুন।

আরও পড়ুন: ‘মানাতে পারছে না বিজেপি,’ দিলীপ-শুভেন্দুতে অভিমানী সুনীলের ‘ঘরওয়াপসি’? 

সাংসদ সুনীল মণ্ডলের বিরুদ্ধে তৃণমূল কর্মীরা গত তিনদিন ধরেই সরব। আর এদিন সুর চড়ালেন বিজেপি নেতৃত্বও। তবে কি সুনীল মণ্ডলের জন্য দুই শিবিরই দরজা বন্ধ করবে? রাজনৈতিক মহলে জল্পনা তুঙ্গে।