দড়ি গলায় ঝুলছে ছেলেটা, গাছের নিচে আলগোছে পড়ে সিঁদুরের কৌটো… প্রেমিকার পাড়ায় এসে মারাত্মক পরিণতি যুবকের

Khandaghosh: শুক্রবার সকালে এলাকার লোকজন গাছে ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান। খবর দেওয়া হয় খণ্ডঘোষ থানার পুলিশকে।

দড়ি গলায় ঝুলছে ছেলেটা, গাছের নিচে আলগোছে পড়ে সিঁদুরের কৌটো... প্রেমিকার পাড়ায় এসে মারাত্মক পরিণতি যুবকের
নিহত যুবক কার্তিক দলুই।
Follow Us:
| Edited By: | Updated on: May 13, 2022 | 6:35 PM

পূর্ব বর্ধমান: এক যুবকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার ঘিরে চাঞ্চল্য ছড়াল পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষে। শুক্রবার খণ্ডঘোষ থেকে উদ্ধার হয় কার্তিক দলুই (২২) নামে ওই যুবকের দেহ। ঝুলন্ত অবস্থায় উদ্ধার হয় দেহটি। জানা গিয়েছে, যেখানে ওই যুবকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে, কাছেই তাঁর প্রেমিকার দাদুর বাড়ি। ওই একই পাড়াতে প্রেমিকাও থাকে। ঝুলন্ত কার্তিকের কানে ইয়ারফোন লাগানো ছিল, পাশেই ছিল ব্যাগ। যে গাছে ঝুলছিল, তারই নিচে রাখা ছিল সিঁদুরের কৌটো, জামা কাপড়। এমন দৃশ্য দেখে কার্যত হতবাক হয়ে পড়েন এলাকার লোকজন। স্থানীয় সূত্রে খবর, কার্তিকের বাড়ি পাশের জেলা বাঁকুড়ায়। পাত্রসায়রের গোঁসাইগ্রামে তাঁর বাড়ি। খণ্ডঘোষের এক তরুণীর সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক ছিল। কিন্তু কেন এই ঘটনা তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয়েছে। যুগলের সম্পর্কের অবনতি হওয়ার কারনেই এই ঘটনা নাকি এর পিছনে অন্য রহস্য লুকিয়ে তা খতিয়ে দেখছে খণ্ডঘোষ থানার পুলিশ। বর্ধমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মৃতদেহ ময়না তদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।

স্থানীয় সূত্রে খবর, পাত্রসায়রের কার্তিকের সঙ্গে খণ্ডঘোষের ওই কিশোরীর বছর খানেকের বেশি সময় ধরে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। যে গ্রামে প্রেমিকার বাড়ি, সেই গ্রামেই আবার কার্তিকের মামার বাড়ি। সেই সূত্র ধরেই বাঁকুড়া থেকে বর্ধমানে তাঁর আসা এবং ওই তরুণীর সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে ওঠা। সূত্রের খবর, দু’জন নিয়মিত ফোনে কথা বলতেন।

সম্প্রতি দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি সংস্থায় কাজ পান কার্তিক দলুই। বৃহস্পতিবারও সেখানেই কাজে যাচ্ছেন বলে বাড়ি থেকে বের হন। কিন্তু রাতে আর বাড়ি ফেরেননি। বাড়ির লোকজন বারবার ফোনে চেষ্টা করেও পাননি। এরপরই শুক্রবার সকালে খবর যায় খণ্ডঘোষ থেকে তাঁর ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার হয়েছে। গলায় দড়ি দেওয়া অবস্থায় তাঁর দেহটি উদ্ধার হয়।

স্থানীয় সূত্রে খবর, ছেলেটির কাছ থেকে একটি সিঁদুরের কৌটো, বেশ কিছু জামা কাপড় উদ্ধার হয়েছে। এই সমস্ত জিনিস দেখে স্থানীয়দের অনুমান, বিয়ের কোনও পরিকল্পনা নিয়েই হয়ত বৃহস্পতিবার বাড়ি থেকে বেরিয়েছিলেন কার্তিক। কিন্তু সেই পরিকল্পনা কোনও কারণে সফল না হওয়ায় এমন চরম সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকতে পারেন।

শুক্রবার সকালে এলাকার লোকজন গাছে ঝুলন্ত দেহ দেখতে পান। খবর দেওয়া হয় খণ্ডঘোষ থানার পুলিশকে। পুলিশই তাঁকে উদ্ধার করে খণ্ডঘোষ হাসপাতালে নিয়ে যায়। কিন্তু চিকিৎসকরা জানান, মৃত্যু হয়েছে তাঁর। এদিকে এই ঘটনার পর থেকেই প্রেমিকা-সহ বাড়ির লোকজনের খোঁজ নেই বলেই জানা গিয়েছে। কার্তিকের এই মৃত্যু আত্মহত্যা নাকি এর পিছনে খুনের কোনও তত্ত্ব রয়েছে, তা নিয়েও প্রশ্ন তৈরি হয়েছে। পুলিশ সমস্ত দিক খোলা রেখেই তদন্ত করছে। অস্বাভাবিক মৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।